সুদাম, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ জেলার প্রতœতাত্ত্বিক
নিদর্শন এর মধ্যে সোমপুর বিহার অন্যতম। এটি নওগাঁ জেলার বদলগাছি
থানার পাহাড়পুর গ্রামে অবস্থিত। এই সোমপুর বৌদ্ধ বিহারটি
অনেকের কাছে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার নামে পরিচিত। নওগাঁ শহর থেকে
এর দূরত্ব প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। অনেকের মতে বহুকাল ধরে পলি আর মাটি
চাপা পড়তে পড়তে অনেকটা পাহাড়ের আকৃতি ধারণ করেছিল বলেই
হয়তো এই স্থানটি কালে কালে পাহাড়পুর বিহার নামে পরিচিতি পেয়ে
থাকতে পারে। অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও গবেষকের মতে খুব সম্ভবত ৭৮০
খ্রিস্টাব্দ থেকে ৮২১ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে পাল বংশের দ্বিতীয়
রাজা ধর্মপাল এই এই বিহার ও মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। এ ছাড়া
তাদের মতে হিমালয়ের দক্ষিণের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ বিহারও হয়তো
এটিই। ২৭ একর জমির ওপর এ বিহার। বিহারের ভিত্তি বেদিতে ৬৩টি দেব-
দেবীর মূর্তি আছে। এ ছাড়া মন্দিরের দেয়ালে প্রায় দুই হাজার পোড়া
মাটির ফলক আছে। উত্তর ও দক্ষিণে ৯২২ ফুট এবং পূর্ব ও পশ্চিমে ৯১৯
ফুট বিস্তৃত এই বিহারের চার পাশে ১৪ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১৩ ফুট
প্রস্থের ১৭৭টি কক্ষ আছে। ধারণা করা হয়, এসব কক্ষে একই সময়ে প্রায়
৮০০ বৌদ্ধ ভিক্ষু থাকতে পারতেন। মূলত বিহারের উত্তর দিকে এক সারিতে
৪৫ টি এবং অপর তিন সারিতে ৪৪টি করে কক্ষ ছিল। পাহাড়পুর
বৌদ্ধবিহারের মূল প্রবেশপথ দিয়ে ভেতরে ঢুকলে যে উন্মুক্ত স্থানের দেখা
মেলে সেই উন্মুক্ত স্থানের কেন্দ্রস্থলেই রয়েছে মূল বা কেন্দ্রীয় মন্দিরটি।
প্রায় ২৭ বর্গ মিটার জায়গার ওপরে নির্মিত এ মন্দিরটির
ধ্বংসাবশেষের উচ্চতা প্রায় ২১ মিটার। মন্দিরটি ক্রসাকৃতির এবং
তিনটি ধাপে ঊর্ধ্বগামী। এতে প্রথম ধাপটির উচ্চতা সবচেয়ে বেশি
এবং তৃতীয় ধাপটির উচ্চতা ক্রমান্বয়ে কম। মন্দিরের দেয়ালে রয়েছে
নানা রকম পোড়ামাটির ফলকচিত্র। পাহাড়পুর খননের সময় প্রাপ্ত নানা
নিদর্শন নিয়ে একটি জাদুঘর আছে পাহাড়পুর কমপ্লেক্সে ঢুকতেই যার
অবস্থান। উল্লেখ পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ইউনেস্কো ঘোষিত ৩২২তম
বিশ্ব ঐতিহ্য যা ১৯৮৫ সালে এটি বিশ্ব ঐতিহ্য্#৩৯;র অন্তর্ভুক্ত হয়।