রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

পীরগঞ্জে রাবার ড্যামে ভাগ্য বদল কৃষকের

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০১৭
  • ৩৪২ বার পড়া হয়েছে

 

জাকির হোসেন,পীরগঞ্জ(ঠাকুরগাঁও)থেকে :

ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জে টাঙ্গন নদীতে নির্মিত দু’টি রাবার ড্যামের সুফল পেতে শুরু করেছে

কৃষক ও জেলেরা। ইতিমধ্যে রাবার ড্যাম নির্মাণের কারণে নদীর দু’ধারে

প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে। আর নদীতে ভরাট

পানি থাকায় ধরা পড়ছে প্রচুর দেশি প্রজাতির মাছ। সম্প্রতি

সরেজমিনে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার সাগুনী রাবার ড্যাম ও

পাশ^বর্তী দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার রাণীরঘাট রাবার ড্যাম এলাকা

ঘুরে দেখা যায়, চলতি খরা মৌসুমে ড্যামের রাবার ফুলিয়ে টাঙ্গন নদীতে

মজুদ করে রাখা পানি দিয়েই পীরগঞ্জ উপজেলার সাগুনি, বাশগাড়া, চাপোড়,

মছলন্দপুর, মশালডাঙ্গী, শিরাইল, জগন্নাথপুর, চান্দোহর এবং পাশ^বর্তী

বোচাগঞ্জ উপজেলায় সুলতানপুর, সেনিহারি, ফুটকিবাড়ি, রানীঘাট

সহ নদীর দুধারে প্রায় ২০ গ্রামের বিশাল এলাকা জুড়ে জমিতে চাষাবাদ

করছেন কৃষকরা। রহমত আলী নামে এক কৃষক বলেন, ‘আগে খরা মৌসুমে

নদীতে পানি থাকতো না। শ্যালো মেশিন চালু করেও পানি লেয়ার পাওয়া

যাচ্ছিল কম । অধিক তেল পুড়ে জমিতে সেচ দিতে হত। এখন রাবার ড্যামের

কারণে নদীতে ভরাট পানি থাকছে। সহজেই পানি পাওয়া যাচ্ছে আর আমরা

কৃষকরা যে কোন ধরনের ফসল সহজেই চাষ করতে পারছি।’ মোস্তফা আলম

নামে আরেক কৃষক বলেন, ‘নদীর ধারের জমিগুলোতে খরা মৌসুমে পানির

অভাবে চাষ করা যাচ্ছিল না। জমিগুলো পড়ে থাকতো। কিন্তু এখন রাবার

ড্যামের কারণে এই জমিগুলোতে সব ধরনের ফসল চাষ করা যাচ্ছে।’ পীরগঞ্জের

সাগুনী রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা

পরিব উদ্দীন বলেন, ‘গত বছর থেকে রাবার ড্যামে সুফল পেতে শুরু করেছে

এলাকার লোকজন। এরই মধ্যে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি রাবার ড্যামের

সেচের আওতায় রয়েছে। কৃষকদের খরা মৌসুমে আর পানির কোন সমস্যা

হবে না। এছাড়াও নদীতে পানি থাকায় দেশি প্রজাতির মাছও ধরা পড়ছে।

জেলেরাও এর সুফল ভোগ করছে।’ আবু হাসেম নামে এক জেলে বলেন,

‘টাঙ্গন নদীতে এখন প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। আমরা যারা মাছ ধরে সংসার

চালাই,তারা খুব উপকৃত হয়েছি। রাবার ড্যামের কারণেই নদীতে দেশি

মাছ পাওয়া যাচ্ছে।’ বোচগঞ্জের রাণীরঘাট পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির

সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন,‘রাবার ড্যাম আমাদের এলাকার

কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিছে। পানির অভাব নাই। ফসলও ভালো হচ্ছে। পানির জন্য

আর কোন কৃষকের হাহাকার নাই। রাণীঘাটেও প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি

সেচের আওয়তায় এসেছে।’ রাবার ড্যামের কারণে ইদানিং টাঙ্গন নদী

থেকে দেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানালেন পীরগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র

মৎস্য কর্মকর্তা ইসমত আরা। তিনি বলেন,‘খরা মৌসুমে রাবার ড্যাম-

নদীতে দুই-তিন মাস পানি ধরে রাখছে। এই মৌসুমে অনেক দেশীয় মাছ

ডিম ছাড়ে।এর ফলে দেশীয় মাছে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।’ এবিষয়ে

পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন,রাবার ড্যাম

এলাকায় ভূ-গর্বস্ত পানির স্তর উপরে উঠে এসেছে। এর কারণে টাঙ্গন নদীন

দু’ধারের জমিতে এখন যেকোন ধরনের ফসলের দ্বিগুণ ফলন হবে। এতে

কৃষকরা লাভবান হবেন।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451