ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি ঃ ফুলবাড়িয়ায় গুরুত্বপূর্ণ
চিকিৎসা সেবার স্থান উপজেলা ডিসপেন্সারী। সরেজমিনে দেখা যায়,
অনেক দিনের পুরোনো একটি চৌচালা টিনসেড ঘরে জরাজীর্ণ অবস্থায়
চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলে আসছে। টিনের বেড়ায় ঝুলানো
সাইনবোর্ডটি দীর্ঘদিনের পুরোনো হওয়ায় উপজেলা শব্দটি অনেক
আগেই উঠে গেছে, শুধুমাত্র ডিসপেন্সারী শব্দটি আংশিক বুঝা যায়।
অচেনা কোন রোগী বা লোকজন এখানে এসে বুঝতেই পারবে না যে এটা
কিসের ঘর।
ডিসপেন্সারীর সামনে খোলা জায়গা রয়েছে সেখানে শুকনো মৌসুমে
বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের ভিড় ও দেশি-বিদেশী বৃক্ষের হাট
বসে। এখানে সীমানা প্রাচীর অথবা কোন নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায়
প্রতিদিন বিভিন্ন পণ্য বোঝাই ট্রাক পণ্য খালাস করার জন্য এই
স্থানটিকে নিরাপদ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
বর্তমান এ জায়গাটি এতই নাজুক হয়ে পড়েছে যে বর্ষা শুরু হতে না
হতেই সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পানি জমে রয়েছে। সব সময়ই দেখা যায়
মাঠের পাশে ইট, মাটি, বালু, সিমেন্টের খুঁটি ইত্যাদি সামগ্রী রেখে
দখল করে রেখেছে কিছু সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীরা। এখানে মাটি বালু পড়ে
থাকলেও নিচু জায়গাটিতে এক মুঠো মাটি বা বালু বরাদ্দ করতে পারেনি
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
প্রতিদিন পৌর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে পঁচা ও দুর্গন্ধ আবর্জনা
ডিসেন্সারীর সামনে ফেলা হচ্ছে। তাতে করে ডিসপেন্সারীর নির্মল পরিবেশ
মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। ডিসপেন্সারীর ভিতরে এবং বাইরের পরিবেশ এত
জরাজীর্ণ হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো নজরদারী নেই।
স্থানীয়রা বলছে, চিকিৎসা সেবার পূর্বশর্ত হলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন,
কিন্তু এখানে দেখা যায় তার ব্যতিক্রম। বাহিরের অবস্থা দেখেই বুঝা যায়
ভিতরের অবস্থা কেমন হবে সেটা নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখেনা । এখানে
চিকিৎসা সেবা নিয়েও রোগীদের বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। ফলে দিন
দিন রোগীরা ডিসপেন্সারী হতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তাই চিকিৎসা
সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ ডিসপেন্সারীর সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে
আনা প্রয়োজন বলে মনে করছেন।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাজিয়া
আক্তারকে ডিসপেন্সারীর সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষের দোহাই দিয়ে পাশ কাটিয়ে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার
পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এ.কে.এম ছিদ্দিকুর রহমান জানান, উর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষকে ডিসপেন্সারীর জরাজীর্ণ অবস্থার কথা জানিয়েছি বিষয়টি
সকলেই অবহিত আছেন।
বিগত সময়ে সরকারী দলের প্রয়াত স্বাস্থ্য উপ-মন্ত্রী সিরাজুল হক ও স্বাস্থ্য
প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) মুজিবুর রহমান ফকির ডিসপেন্সারীটি
পরিদর্শন করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন
হলেও আজ পর্যন্ত উপজেলা ডিসপেন্সারীর কোন উন্নয়ন হয়নি।