মোঃ আশিকুর রহমান টুটুল, নাটোর জেলা প্রতিনিধি,
এখন শরৎ কাল মাঠের সবুজ ঘাসে শীতের আগমনি বার্তা মিলেনি তবে আর
কয়টা দিন পরে শীত নামবে এমন প্রত্যাশায় নাটোরের লালপুর উপজেলায়
খেজুরের রস সংগ্রহের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে গাছ ঝোড়ার কাজে ব্যস্ত
হয়ে পড়েছেন এই অঞ্চলের গাছিরা ।
উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রতিটি এলাকায় সরেজমিনে
গিয়ে দেখা যায় বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার দুই ধারে, মাঠে-প্রান্তরে
অবহেলায় অযতেœ প্রাকৃতির নিয়মে বেড়ে উঠা এই খেজুরের গাছের কদর
এখন বেশ ভালো। এখন ভাদ্র মাস আর দশ থেকে পনেরো দিনের মধ্যেই উপজেলার
সকল এলাকার খেজুরের গাছ হতে রস সংগ্রহের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে
গাছ ঝোড়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে। আর আশ্বিনের প্রথম থেকে শুরু হবে গাছ
হতে রস সংগ্রহ। তবে আশ্বিন মাসের মাঝা মাঝি সময়ে পুরোপুরি ভাবে
গাছ হতে রস সংগ্রহ শুরু হবে। চলতি বছরে প্রতিটি খেজুরের গাছ
৩০০/৪০০ টাকা করে গাছের মালিক কে এক রকম তোষামদি করে মাত্র ছয়
মাসের জন্য লিজ নিচ্ছেন এলাকার গাছিরা। তারা শুধু শীতের মৌসুমে এই
খেজুরের গাছ হতে রস সংগ্রহ করবে বলে। তবে লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া
বাজারের আনাছে কানাছে জমে উঠেছে এই খেজুরের গাছ লিজ নেওয়ার
কাজ। এ ব্যাপারে গাছের মালিকের কোন মাথা ব্যথা না থকলেও আছে
গাছিদের। গাছের ঠিকঠাক খবর নিয়ে সন্ধা হলেই মালিকের নিকট হাজির
হয়ে যাচ্ছে তারা। আবার কেউ কেউ এক বছর আগেই একটু কম বা বেশি
দামেই অগাম গাছ লিজ নিয়েছে আর সেই সকল গাছেই চলছে আগাম রস
সংগ্রহের প্রস্তুতির কাজ হিসেবে গাছ ঝোড়া। বাংলাদেশর বিভিন্ন
এলাকায় এক নামে প্রসিদ্ধ উত্তর জনপদের নাটোরের লালপুর উপজেলার বিখ্যাত
এই খেজুরের গুড়। এই ব্যাপারে উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের গাছিদের সঙ্গে
কথা বললে মুনির, বাবলু, তয়জাল আমার সংবাদকে বলেন, খেজুরের গাছ হতে
আগাম রস সংগ্রহের জন্য আমরা গাছ ঝোড়ছি আর কিছু দিন পর থেকেই
রস সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। তবে আমাদের এলাকাতে এ বছর বেশ কিছু
খেজুরের গাছ কেটে ইট ভাটাতে দেওয়া হয়েছে যার করণে দিন দিন এই
মূল্যবান সম্পদ এই অঞ্চল হতে বিলুপ্ত হতে চলেছে।এই খাতে সরকারী
পৃষ্টপষোকতা পেলে এই অঞ্চলের জনসাধারণ অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হবে।
তবে তারা জানান কিছু অসাধু লোকেরা তাদের স্বার্থ সিদ্ধির আশায় এই
খেজুরের গুড়ের নামে (সুগার মিলের চিটা গুড়, চিনি, ময়দা, রং, হাইড্রোজ,
ফিটকিরি দিয়ে) দোজালির ভ্যাজাল গুড় তৈরী করে বিভিন্ন এলাকায় সরবারহ
করছে যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। সেই সাথে ঐতিহ্য হারতে বসেছে এই
শিল্প। সরকারের মাধ্যমে এই সকল অসৎ লোকদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ
ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ঐতিহ্যবাহি খেজুরের গুড়ের ফিরে পাবে তার নাম ও
খ্যাতি।