শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন

জমে উঠেছে লালন শাহর আখড়াবাড়ী

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শনিবার, ১১ মার্চ, ২০১৭
  • ৪২৯ বার পড়া হয়েছে

বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ। তিনি জাত-কুলের বেড়াজাল ভেঙে মানবতার জয়গান গেয়েছেন। তার মতে, ‘মানুষ ভজলেই সোনার মানুষ হবি’ এ লক্ষ্যেই লালন ভক্ত, অনুসারীরা ফের ভীড় করেছেন লালন আখড়াবাড়ি কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায়।

‘আর কি হবে এমন জনম’ লালনের আধ্যাত্মিক এ বাণীর শ্লোগানে দোলপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়ীতে শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে তিনদিন ব্যাপি ‘লালন স্মরণোৎসব’। আয়োজনে থাকছে প্রতিদিন আলোচনা সভা, লালন মেলা ও লালন সঙ্গীতানুষ্ঠান।

বাউলদের খাটি করে গড়ে তুলতে বাউল সম্রাট লালন শাহ তার জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার এ আখড়া বাড়িতে প্রতি বছর চৈত্রের দৌলপূর্ণিমা রাতে সাধু সঙ্গ উৎসব করতেন।

১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তার মৃত্যুর পরও এ উৎসব চালিয়ে আসছে তার অনুসারীরা।প্রতি বছরের ন্যায় এবারো সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় লালন একাডেমি তিন দিনের এ লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করেছে। উৎসবকে ঘিরে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক স্তরে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরী করা হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের লালন স্মরণোৎসবের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। উদ্বোধন উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভা শেষে আধ্যাত্মিক লালন গানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ উৎসবের যাত্রা হবে।

তবে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আগেই আধ্যাত্বিক গুরু ফকির লালনকে স্মরণ ও সোনার মানুষ হতে এবং মানবতার প্রাণপুরুষ বাউল সম্রাট’র জীবন-কর্ম, ধর্ম-দর্শন, মরমী সঙ্গীত ও চিন্তা চেতনা হাতড়িয়ে তা থেকে শিক্ষা নিতে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত অনুরাগী, দর্শনার্থী আখড়াবাড়িতে এসেছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে লালন ভক্তের ভিড়।

লালন শাহ নিজেই এ উৎসবে পালন করতেন। তাইতো তার ভক্ত অনুসারীদের কাছে এটির ভিন্ন এক গুরুত্ববহন করে। ভক্তরা প্রতিবছর এ উৎসবের জন্য অপেক্ষা করেন।লালন সাইজির দর্শন পাওয়া ও অচেনাকে চেনা, আত্মার শুদ্ধি, মুক্তি, জ্ঞাণ সঞ্চয়সহ যে যার মনের বাসনা পূরন করতে দাওয়াত পত্র ছাড়াই দিনক্ষণ ঠিক রেখে এবারো সাইজির ধামে ছুটে আসছেন ভক্ত অনুসারী, দর্শনার্থীরা।লালন অনুসারী, ভক্তরা আখড়াবাড়ি চত্ত্বরে খন্ড খন্ড সাধু আস্তানায় আসন গেড়ে বসেছেন। খন্ড খন্ড সাধু আস্তানায় গুরু শিষ্যের মধ্যে চলছে লালনের জীবন কর্ম নিয়ে আলোচনা, ছড়িয়ে পড়ছে লালন দর্শন।

আখড়াবাড়ী চত্বরে কালী নদীর তীরে বিশাল মাঠে জমে উঠেছে লালন মেলা।জেলা প্রশাসক জহির রায়হান বলছেন, এবার লালনের রীতিনীতির মধ্য দিয়েই এ উৎসবকে আরো জাকজমক করতে জেলা প্রশাসনের সবরকম প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান বলেন, কয়েক স্তরে বিভিন্ন এজেন্সি ও সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।হানাহানির বিশ্বে জাতি-ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে একই স্রোতধারায় আনতে লালনই আমাদের প্রেরণা। তার অহিংসার বাণী ও জাতহীন দর্শনের বাস্তবায়ন করতে পারলেই, শান্তি আসবে সর্বময়, সার্থক হবে এ আয়োজন। এমনটাই মনে করেন ভক্ত সাধু ও অনুসারীরা।’লালন স্মরণোৎসব’ শেষ হবে ১৩ মার্চ রাতে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451