মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

মুন্সিগঞ্জের জেলেদের চাল বরাদ্ধ না থাকায় হতাশ স্থানীয় প্রশাসন

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৬
  • ১৬৭ বার পড়া হয়েছে

রুবেল মাদবর
মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ নিধন বন্ধে বুধবার (১২ অক্টোবর) থেকে টানা ২২ দিন দেশের পদ্মা, মেঘনাসহ বিভিন্ন নদীতে জাল ফেলা নিষেধ ঘোষণা করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এ সময়ে দেশের ২৭ জেলার বেকার জেলেদের ভর্তুকি হিসেবে ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দের ঘোষণা দেয় সরকার। বিভিন্ন স্থানে জেলেরা সরকারের সেই বরাদ্দ পেয়েছেনও। কিন্তু পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতীবিধৌত জেলা মুন্সিগঞ্জের প্রায় এক হাজার জেলে সরকারের আহ্বানে সাড়া দিলেও তাঁদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বরাদ্দের ৪০ কেজি চাল।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জেলেরা। সরকার থেকে বরাদ্দ না পেয়ে ‘হতবাক’ ও। ফলে স্থানীয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জেলেদের এই সময়ে ইলিশ নিধনে অনুৎসাহিত করতে সভা-সমাবেশ, বৈঠক করেছে শুধু। কিন্তু জেলেরা কেন সরকারি বরাদ্দ পেল না বা আদৌ পাবে কি না, এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ নিধন রোধে ১২ অক্টোবর থেকে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২৭ জেলায় নদীতে জাল ফেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, জামালপুর, রাজবাড়ী, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, খুলনা, কুষ্টিয়া ও রাজশাহী জেলা।
এ সময়ে দরিদ্র জেলেরা বেকার থাকবে। এ জন্য সরকার পরিবার-পরিজনের জন্য জেলে প্রতি ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়। সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে মুন্সিগঞ্জের জেলেরা। কিন্তু বরাদ্দের চাল জোটেনি তাঁদের ভাগ্যে। চাল না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেক জেলে।
মেঘনা-তীরবর্তী সদর উপজেলার কালীরচর গ্রামের জেলে মোসলেম মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, ‘মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে আমাদের সংসার চলে। ইলিশ ধরা নিষেধ থাকায় এখন অনেক দিন বাড়িতে বসেই থাকতে হবে। এই কয়টা দিন সংসার চলব কিভাবে, সেই দুশ্চিন্তাই আছি। সরকারের পক্ষ থেকে টাকা বা চাল বরাদ্দ পাইনি আমরা এ অঞ্চলের জেলেরা।’
শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল গ্রামের পদ্মা নদীর জেলে আনোয়ার শেখ বলেন, ‘এবার একমুঠো চালও বরাদ্দ পাইনি। এখন ইলিশ মাছও ধরা যাবে না, নদীতে জাল ফেলা যাবে না। তাহলে সংসারের স্ত্রী- ছেলে মেয়েদের মুখে দিমু কী?’
এ ব্যাপারে সদর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা শাহজাদা খসরু জানান, ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকার নিষেধাজ্ঞা করে এবার কেবল জেলেদের মধ্যে প্রচার ও সভা করা হয়েছে। পাশাপাশি নদীতে অভিযানও চলবে। তবে এ জেলায় জেলেরা কোনো বরাদ্দ পাননি।
বুধবার এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা জানান, ‘ইলিশ প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে লৌহজং, সিরাজদীখানসহ বেশ কয়েকটি স্থানে জেলেদের সঙ্গে সভা- বৈঠক করেছি। কেবিনেটে জেলেদের পক্ষে বরাদ্দের ব্যাপারে আমিই প্রথমে কথা বলেছি। অথচ আমার জেলা মুন্সিগঞ্জের জেলেদের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। এটা শুনে আমি নিজেই হতবাক। আমিই জানি না, কীভাবে মুন্সিগঞ্জ জেলার জেলেরা বরাদ্দ থেকে বাদ পড়ল।’
‘ছুটি শেষে অফিস খুললেই সচিব মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে আমি নদীবিধৌত এ জেলার জেলেদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ আনবই’, যোগ করেন জেলা প্রশাসক।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451