মো. আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর প্রতিনিধি ঃ
গুণগত মান ভালো হওয়ায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে ওঠা মাছ ধরার উপকরণ চাঁই
(খোলসুন) স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্য এলাকাতেও সরবরাহ করা হচ্ছে। আশানুরূপ দাম পাওয়ায় এসব
চাঁই তৈরীর সঙ্গে জড়িত নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর বাড়তি আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে এই চাঁই তৈরীর
কাজ।
এসব ফাঁদ তৈরীকৃতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাঁশ ও তালের ডাগুরের আঁশকে পুঁজি করে তৈরী
এসব চাঁই ছোট ছোট মাছ ধরার কাজে জলাশয়ে ব্যবহৃত হয়। এই মাছ ধরার ফাঁদ হাতে তৈরী করে
প্রতিটি পরিবার দিনে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে।
লাভবান হওয়ায় এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সারা বছরই চাঁই তৈরী করে। চলনবিল এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এই
চাঁই তৈরীর সঙ্গে জড়িত। সরকারি সহযোগিতা না পাওয়ায় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ
নিয়ে এসব নিম্ন আয়ের মানুষগুলো তাদের পেশা টিকিয়ে রেখেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নাটোরের অন্যতম বানিজ্যিক এলাকা গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড় হাট,
নয়াবাজার হাটসহ বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলার বিভিন্ন হাটে এক জোড়া চাঁই আকারভেদে ৪৫০ থেকে
৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দাদুয়া গ্রামের আবুল হোসেন (৪৫) বলেন, বছর পাঁচেক আগে তিনি মাছ ধরার অন্য যেসব উপকরণ আছে
সেগুলো তৈরী করতেন। পরে লাভ বেশি দেখে এখন শুধু চাঁই তৈরী করেন। সপ্তাহে ৭-৮টি তৈরী করতে পারেন
এবং আটটি চাঁইয়ের পেছনে ব্যয় হয় ২০০ টাকা। কিন্তু সেগুলো বিক্রি করতে পারেন দেড় হাজার থেকে ২
হাজার টাকা পর্যন্ত।
ঢাকা থেকে চাঁচকৈড় হাটে আসা চাঁই ব্যবসায়ী শওকত আলী বলেন, প্রতি হাটে তিনি প্রায় ১ লাখ
টাকার চাঁই ও বানাসহ মাছ ধরার বিভিন্ন সামগ্রী কিনে তা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি
করে থাকেন। এতে তার খরচ বাদে প্রতি হাটে ২০ হাজার টাকার মতো লাভ হয়।
চাঁচকৈড় হাটের ইজারাদার আমিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে এই হাটে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫০ লাখ
টাকার চাঁই সহ মাছ ধরার বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়।