মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

মৃত পাখি ড্রোন হয়ে উড়বে আকাশে

অনলাইন ডেস্ক;
  • আপডেট সময় বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে
বার্ড ড্রোন। ছবি : সংগৃহীত

আকাশের দিকে তাকাতেই চোখে পড়ল একঝাঁক পাখি। কিচিরমিচির শব্দে প্রকৃতিকে নাড়া দিয়ে আপনার মাথার ওপর দিয়েই উড়ে গেল সেই পাখির দল। মনটা নিশ্চিতভাবেই অদ্ভুত ভালোলাগায় ভরে উঠবে আপনার। কিন্তু যখন জানতে পারবেন, ওই পাখির ঝাঁকে এমন একটি পাখি রয়েছে, যেটি আসলে মৃত। তখন কেমন লাগবে ভাবুন তো!

অবাস্তব এ কল্পনাকেই বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের একদল গবেষক। মৃত পাখিদের ফেলে না দিয়ে ভিন্ন উপায়ে সংরক্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

রাসায়নিক ও ট্যানিংয়ের মাধ্যমে মৃত প্রাণীর শরীরের চামড়া সংরক্ষণ করে সেটি দিয়ে ড্রোন তৈরি করা নিয়েই চলছে তাদের গবেষণা। এ কাজে পাখিটির চামড়া এমনভাবে সংরক্ষণ করা হয় যে ওই পাখিটিকে জীবন্ত দেখায়।

নিউ মেক্সিকো ইনস্টিটিউট অব মাইনিং অ্যান্ড টেকনোলজির ওই গবেষক দল জানায়, এসব মৃত পাখি ব্যবহার করা হবে ড্রোন পরিচালনার কাজে।

সম্পূর্ণ অভাবনীয় ও অচিন্তনীয় এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইনস্টিটিউটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক মোস্তফা হাসানালিয়ান। এ ধরনের কাজে আগ্রহ তৈরির কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘একটি পাখি মরে গেলেও তার সবকিছুই আসলে অক্ষত থেকে যায়। সেই চিন্তা থেকেই মৃত পাখির চামড়া সংরক্ষণের ব্যাপারটি মাথায় আসে আমাদের।’

তিনি বলেন, ‘এরপর আমরা ভাবতে শুরু করি, কীভাবে এই মৃত পাখিগুলো ব্যবহার করে এগুলো দিয়েই ড্রোন তৈরি করা যায়। কারণ, মৃত্যুর পরও পাখিটির তো সবকিছুই থেকে যায়। এগুলোর লেজ আছে, ডানা আছে, মাথা আছে, শরীর আছে; সবকিছুই আছে।’

এই চিন্তা থেকেই পাখিগুলোর শরীরের একটি অ্যাট্রিশন মেকানিজম ডিজাইন করেন মোস্তফা। এই ডিজাইনের কারণে পাখিগুলোকে একেবারে জীবন্ত দেখাবে বলে তিনি জানান। করা হয় রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং। হিসাব করে বের করা হয়, পাখিটি জীবিত থাকাকালে তার ওজন কত ছিল, তার ফ্ল্যাপিং ফ্রিকোয়েন্সি কী ছিল, তারা ফ্ল্যাপিং অ্যাঙ্গেল কী রকমভাবে ফ্ল্যাপ করেছে। এর সবই গবেষণা করে বিস্তারিত বের করেন গবেষকরা।

মোস্তফা হাসানালিয়ান জানান, বর্তমানে মৃত পাখি দিয়ে তৈরি ড্রোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত স্থানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পাখির ওড়ার ধরন আরও ভালোভাবে বুঝতে এই পরীক্ষা চালাতে হচ্ছে। ড্রোন তৈরিতে এ বিষয়গুলো প্রয়োগ করা হবে।

এ প্রকল্পের প্রধান আরও বলেন, ‘পাখিরা নিজেদের মধ্যে কীভাবে শক্তি পরিচালনা করে, তা যদি আমরা জানতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে বিমানশিল্পে এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা যেতে পারে। এতে নিশ্চিতভাবে আরও শক্তি ও জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

বর্তমানে মৃত পাখিগুলো দিয়ে তৈরি ড্রোনগুলো সর্বোচ্চ ২০ মিনিট পর্যন্ত উড়তে পারে। তবে পরবর্তী পর্যায়ে কীভাবে এ সময় দীর্ঘায়িত করা যায় এবং জীবন্ত পাখিদের ঝাঁকের মধ্যে এটা নিয়ে পরীক্ষা করা যায়, তা নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে বলে জানান গবেষকরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451