রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

হাঁপানি কমানোর মূলমন্ত্র

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭
  • ৩৯৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলার প্রতিদিন ডটকম ঃ

আপনার কি শ্বাস ছাড়তে কষ্ট হয়? নাকি সামান্য বাতাসে হাঁটলে আপনার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়? বিভিন্ন ধরনের এলার্জি যেমন-ধুলা-বালি-ধোঁয়া, ফুলের রেণু, কলকারখানার নির্গত বিষাক্ত গ্যাস, গাড়ির ধোঁয়া, বিশেষ কিছু খাবার, ওষুধ ইত্যাদি এলার্জি ও এজমার সৃষ্টি করে। সামান্য উপসর্গ হতে শুরু করে মারাত্মক উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে, এমন কি তা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। মোট কথা ধুলাবালি, ধোঁয়া, গাড়ির বিষাক্ত গ্যাস, কলকারখানার সৃৃষ্ট পদার্থ, বৃষ্টিতে ভেজা, শীতের কুয়াশা, ফুলের রেণু, বিশেষ কয়েকটি খাবার যেমন-চিংড়ি, ইলিশ, বোয়াল, গজার, গরুর মাংস, হাঁসের ডিম, পাকা কলা, আনারস, নারিকেল, কসমেটিকস ও অগণিত জানা-অজানা জিনিস আমাদের শরীরে কাশি, শ্বাকষ্ট এলার্জি ও এজমার সৃষ্টি করতে পারে। আপনার এলার্জি ও শ্বাসকষ্ট হলে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। বর্তমানে এর প্রতিকার ও চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে।

 

হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার সময় শ্বাসনালিতে

নিম্নোক্ত পরিবর্তনগুলো দেখা যায় :

► শ্বাসনালি লাল ও ফুলে যাওয়ার ফলে সরু হয়।

► শ্বাসনালির চারপাশের মাংসপেশিসমূহ সংকুচিত হয়ে শ্বাসনালিকে আরও সরু করে দেয়।

► শ্বাসনালিতে অধিক পরিমাণ শ্লেষ্মা তৈরি করে শ্বাসনালিতে বায়ুপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়।

 

চিকিৎসা—

হাঁপানি একটি দীর্ঘ মেয়াদি রোগ। সঠিক চিকিৎসা এবং ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে হাঁপানি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যেসব উত্তেজকের (ট্রিগার) কারণে হাঁপানির তীব্রতা বেড়ে যায়, রোগীকে সেগুলো শনাক্ত করতে হবে এবং পরিহার করতে হবে।

► ধূমপান এবং তামাকের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকুন।

► ঠাণ্ডা বাতাস হাঁপানির তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। এই সময় ওষুধের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে হবে।

► ব্যায়াম এবং শারীরিক পরিশ্রম নিরুৎসাহিত করা উচিত নয়। ব্যায়াম শারীরিক ভালো রাখে এবং উচ্চ রক্তচাপ ও অন্যান্য জটিল রোগ বালাই থেকে শরীরকে রক্ষা করে। সঠিক ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যায়ামের সময় বা পরে হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা পরিহার করা সম্ভব।

► বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে হবে এবং বাড়িতে অবাধ বিশুদ্ধ বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

দুই ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়, এক. হাঁপানি প্রতিরোধক, দুই. হাঁপানি উপশম কারক।

 

হাঁপানি প্রতিরোধক—

যেসব ওষুধের ব্যবহার হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হওয়া প্রতিরোধ করে তাদের হাঁপানি প্রতিরোধক বলে।

► এন্টি ইনফ্লামেটরি ওষুধসমূহ শ্বাসনালির প্রদাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হাঁপানি প্রতিরোধ করে। এই শ্রেণির বহুল ব্যবহৃত বুসোনাইড, ক্লোমিথাসেন এবং ফ্লুটিকাসোন ইত্যাদি।

► ব্রঙ্কোডাইলেটর বা শ্বাসনালি প্রসারক ওষুধসমূহ দ্রুত শ্বাসনালিকে প্রসারিত করে হাঁপানির তীব্রতা প্রতিরোধ করে।

 

হাঁপানি উপশম কারক—

ব্রঙ্কোডাইলেটর সমূহ উপশম কারক হিসেবে কাজ করে। ব্রঙ্কোডাইলেটর সমূহ শ্বাসনালিকে দ্রুত প্রসারিত করে ফলে ফুসফুসে সহজে বায়ু চলাচল করতে পারে এবং এর মাধ্যমে হাঁপানি আক্রান্ত রোগীর উপসর্গসমূহ দ্রুত উপশম হয়। দুই ধরনের ব্রঙ্কোডাইলেটর বা শ্বাসনালি প্রসারক আছে।

► ক্ষণস্থায়ী ব্রঙ্কোডাইলেটর যেমন— সালবিউটামল। এসব ওষুধ দিতে ৩-৪ বার ব্যবহার করতে হয়।

► দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কোডাইলেটর যেমন- ব্যামবিউটামল, এসব ওষুধ দিনে একবার ব্যবহার করতে হয়। মৃদু বা মাঝারি হাঁপানিতে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষণস্থায়ী ব্রঙ্কোডাইলেটর (যেমন- সালবিউটামল) ব্যবহার করলে কোনো ধরনের ক্লিনিক্যাল সুবিধা পাওয়া যায় না। তাই এসব ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কোডাইলেটর (যেমন— ব্যামবিউটামল) ব্যবহার করতে হবে। রাত্রিকালীন হাঁপানিতে মোডিফাইড রিলিজড থিওফাইলিনের বিকল্প হিসেবে ব্যামবিউটামল ব্যবহার করে ভালো সুফল পাওয়া যায়।

 

হাঁপানির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া—

► অনেক রোগীই হাঁপানি চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা বলে কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত হাঁপানি আরও ভয়াবহ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা বলে কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত হাঁপানি আরও ভয়াবহ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

► সঠিক চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবহারের মাধ্যমে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ না করলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা হ্রাস পাবে এবং অকেজো হবে।

► শিশুদের হাঁপানি ঠিকমতো চিকিৎসা না করালে বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং মায়েদের বেলায় গর্ভস্থ ভ্রূণের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

 

হাঁপানি চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া—

► করটিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার ওরাল ক্যানডিয়াসিস সৃষ্টি করতে পারে। যারা রোগী ইনহেলারের মাধ্যমে করটিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করেন তারা অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে নিয়মিত ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত।

► থিওফাইলিন বা এ জাতীয় ওষুধ ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় তাই, থিয়োফাইলিনের পরিবর্তে দীর্ঘ মেয়াদি ব্রঙ্কোডাইলেটর যেমন— ব্যামবিউটামল ব্যবহার করা উচিত।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451