সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ইট ভাটা গুলোতে ইট তৈরীর জন্য কয়লার বদরে
পরাচ্ছে কাঠ এবং ফসলী জমির উপরি অংশের মাটি কেটে ভাটায়
নিয়ে পাহাড়ের স্তপ করে রাখা হচ্ছে। ফলে ফসলী এই জমিগুলো ক্ষতির
মুখে পড়ছে। সেই সাথে ভাটা গুলোতে বনজ ও ফলজ গাছ পুড়িয়ে
পরিবেশের ক্ষতি সাধন করলেও অজ্ঞাত কারনে সংশ্লিষ্ঠ বিভাগ নীরব
রয়েছে। তাড়াশ উপজেলার নওঁগা, মাধাইনগর ও দেশীগ্রাম
ইউনিয়নে সরেজমীনে ঘুরে দেখা গেছে,বিভিন্ন স্থানে মাঠের
মধে অনেক জমি দখল করে ইট ভাটা তৈরী করা হয়েছে। সরকারী
নিয়মানুসারে আবাসিক এলাকায় ইট ভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকলেও
অনেক ক্ষেত্রেই তা মানা হয়নি। এদিকে উপজেলার ৬ টি ভাটার
মালিকগন ইট তৈরী করতে জমির মাটি ব্যবহার করছে। বিভিন্ন
গ্রামের মাঠের ফসলী জমির উপরি অংশের উর্বর মাটি কেটে
ভাটায় নেয়া হচ্ছে। গ্রামের সহজ সরল কৃষকদের প্রলোভিত করে
ট্রাক প্রতি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা হারে এই সব মাটি ক্রয় করে
জমির উপরি অংশের দেড় থেকে দুই ফুট গভীর করে মাটি কেটে
ভাটায় নিযে যাচ্ছে। দিন দিন ফসলী জমির মাটি কাটার এই
প্রবনতা বেড়েই চলেছে। ফলে পরিবেশের বিপর্যয়ের পাশাপাশি
ফসলী জমির উর্বরা শক্তিও আশংকাজনক ভাবে হ্রাস পাচ্ছে।
এছাড়াও ফসলী জমির উপরি স্তর কেটে নেয়ার ফলে ফসলের প্রধান
প্রধান খাদ্য
নাইট্রোজেন,পটাশ,জিংক,ফসফোরাস,সালফার,ক্যালসিয়াম সহ
অর্গানিক জৈব্য উৎপাদনের জন্য অপুরনীয় ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থা
অব্যাহত থাকলে শস্য ভান্ডার খ্যাত এই উপজেলার ফসলী জমি গুলো
ভবিষ্যতে বন্ধ্যা জমিতে পরিনত হবে। বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহ
ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি কৃত্রিম জলাবদ্ধতা দেখা দিবে। চলনবিলের
শস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত তাড়াশ উপজেলা। অপরিকল্পিত ভাবে
ইট ভাটা স্থাপন ও জমির উপরি অংশের উর্বর মাটি কেটে ইট তৈরীর
ফলে ফসলী জমি হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি জমিও ক্ষতির মুখে পড়ছে।
এদিকে গড়ে উঠা এইসব ভাটা মালিকগন সরকারের প্রচলিত
আইনের তোয়াক্কা না করে, কয়লার পরিবর্তে অবাদে গাছ ও কাঠ
জালানী হিসেবে ব্যবহার করছে। ইট ভাটা চত্বরেই প্রকাশ্যে স্তপ
করে রাখা হয়েছে শত শত মন কাঠ। অবাদে কাঠ পোড়ানোর ফলে
উজার হয়ে যাচ্ছে বনজ ও ফলজ গাছ। ফলে পরিবেশের উপর বিরুপ
প্রভাব পড়ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, জমির
উপরি অংশের উর্বর মাটি কাটার ফলে জমির ফসল উৎপাদন ক্ষমতা দিন
দিন কমে যাচ্ছে। কৃত্তিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে অদুর
ভবিষ্যতে ফসলী জমি গুলো বন্ধ্যাত্ব হওয়ার মাধ্যমে দেশে খাদ্য ঘাটতি
দেখা দিবে। তিনি আরো বলেন, একবার জমির উপরি অংশের মাটি
কাটার পর আবার জমিতে ঐ পরিমান জৈব মাটি সৃষ্টি হতে ৩০/৪০
বছর সময় লেগে যায়। তাছাড়া ভাটা গুলোতে কাঠ পোড়ানোর ফলে
পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান খাঁন
বলেন,ইট ভাটায় কাঠ পোড়ানো বড় অপরাধ ,আমি দ্রুত ওই সকল
ইট ভাটার বিরুদ্ধে পোয়জনীয় ব্যাবস্থা নেব।