বিনা বিচারে দীর্ঘ সময় কারাগারে বন্দি থাকা চার ব্যক্তিকে হাইকোর্টে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ ডিসেম্বর তাঁদের আদালতে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচার করা এ-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন আজ রোববার আদালতের নজরে আনা হলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ওই চার ব্যক্তি হলেন চাঁন মিয়া, সেন্টু, মকবুল ও বিল্লাল।
এই চারজনকে বিনা বিচারে দেড় যুগ আটক রাখা কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা-ও জানতে চেয়েছেন আদালত।
এর আগে ১৫ নভেম্বর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন ১৭ বছর বিনা বিচারে কারাগারে থাকা ঢাকার সূত্রাপুরের বাসিন্দা মো. শিপন মিয়া। গত ৩০ অক্টোবর তাঁর বিষয়টিও আদালতের নজরে আনা হলে শিপনকে ৮ নভেম্বর হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত শিপনকে জামিন দেওয়া হয়।
টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচার করা ওই প্রতিবেদনে দেখানো হয়, বিনা বিচারে কারাগারে আটক একজনের নাম চাঁন মিয়া। ১৮ বছর ধরে ২৮৩৪ সংখ্যাটিই যার পরিচয়। আর এটি হলো তাঁর বন্দি নম্বর। ঢাকার শ্যামপুর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৯৯ সাল থেকে কাশিমপুর কারাগারে বন্দি তিনি। এই দেড় যুগে চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হত্যা মামলার কোনো অগ্রগতিই হয়নি। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার পরিবেশ আদালতে বিচারাধীন।
একই ঘটনা সেন্টু কামালেরও। ২০০১ সালে গ্রেপ্তার হন মতিঝিলের এজিবি কলোনির সেন্টু কামাল। সর্বশেষ গত মাসেও তাঁকে হাজির করা হয়েছিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এ। কিন্তু দীর্ঘ ১৬ বছরে ৫৯ কার্যদিবস আদালতে হাজির করা হলেও মামলার কার্যক্রম শেষ হয়নি।
৬৬৬ পরিচয়ধারী মাদারীপুরের মকবুল হোসেন। রাজধানীর উত্তরা থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন ২০০০ সালে। এর পর থেকে দীর্ঘ ১৭ বছর মামলাটি আর আলোর মুখ দেখেনি। এমনকি ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মকবুলে পক্ষে আইনি লড়াই করারও কেউ ছিলেন না।
একইভাবে মামলা শেষ হয়নি কুমিল্লার বিল্লাল হোসেনেরও। তেজগাঁও থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় বিল্লাল হোসেন কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন ২০০২ সাল থেকে। তাঁর মামলাটিও বিচারাধীন আছে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে।