শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

মৌলভীবাজারে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এক বছরে কয়েক কোটি টাকার সার্টিফিকেট বিক্রি

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৫৭৫ বার পড়া হয়েছে

 

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার কারিগরি প্রশিক্ষন কেন্দ্রে চলছে সার্টিফিকেট বিক্রয় বানিজ্য। সার্টিফিকেট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হতিয়ে নিচ্ছে কর্মকর্তা কর্মচারিরা। শিক্ষার্থীদের থাকা খাওয়ার ফান্ডের টাকাও আতœসাৎ করা অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদেশ গিয়ে মারাতœক সমস্যায় পড়ছে বাসার কাজে যাওয়া মেয়েরা। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বিদেশের মাটিতে। বিদেশে গমন ইচ্ছুক পূরুষ ও মহিলা শ্রমিকদেরে বাধ্যতা মূলক ভাবে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে যেতে হয়। এই সুজুগকে কাজে লগিয়েছে মৌলভীবাজার কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ নাহিদ নিয়াজ ও আব্দুর রহমান ইন্সট্রাক্টর (মেকানিক)। বিশ^স্ত সুত্রে জানা যায় এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে সার্টিফিকেট বিক্রির মাধ্যমে প্রায় ৬ কোটি  টাকার ঘুষ নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীরা। অফিস সুত্রে জানা যায় দেশে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গুলোর মধ্যে ৫ টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যে কোন জেলা থেকে ভর্তি হয়ে প্রশিক্ষণ নেয়া যায়। মৌলভীবাজার কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এই ৫টির মধ্যে একটি। পুরুষের জন্য ৩ দিনের প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি ফ্রি ২শত টাকা। মহিলাদের জন্য ২ মাসের প্রশিক্ষণ কোর্সে কোন ভর্তি ফ্রি লাগে না। বরং ২ মাসের থাকা খাওয়ার যাবতীয় খরচ সরকারীভাবে বহন করা হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে মাত্র তিন দিনের প্রশিক্ষণের থাকা প্রয়োজন হয় না। অফিস সুত্রে জানা যায় বিদেশে যাত্রী পুরুষদের শিখনো হয় আইনকানুন ও আচার আচরন। মহিলাদের শিখানো হয় গৃহস্থলীর কাজকর্ম পরিস্কার পরিছন্নতা, রান্না, বিছানাপত্র ঠিক করা, কাপড় সাঁজিয়ে রাখা ও ভাষা শিক্ষা। ভাষা শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অজানা অচেনা দেশে ভাষা জানার বিকল্প নেই। ভাষা না বুঝার কারণে বিপাকে পড়তে হয় প্রথমেই। অনুসন্ধানে জানা যায় ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে পুরুষদের জন্য মৌলভীবাজার কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত পুরুষদের ৯ হাজার সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের ২ মাসের কোর্স শুরু হয় চলিত বছরের জুলাই থেকে। আসন সংখ্যা ১৪৪ জনের। এ প্রশিক্ষণ কোর্সে ২৭ জনকে ভর্তি দেখানো হয়। কোর্স শেষে সর্টিফিকেট এসেছে ২১ জনের। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে বাস্তবে কোন প্রশিক্ষণার্থী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন না। পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকার ঘুষের বিনিময়ে সার্টিফিকেট পেয়ে যাচ্ছেন। মহিলা প্রশিক্ষন না করে সার্টিফকেটে পেতে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। ছেলেদের প্রশিক্ষন কোর্সে ৯ হাজার সর্টিফিকেট বিক্রি করে প্রায় ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীরা। মেয়েদের সার্টিফিকেট বিক্রির মাধ্যমে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা। প্রথম ব্যাচে মেয়েদের প্রশিক্ষণ কোর্সে ২১ জন সার্টিফিকেট প্রাপ্ত মহিলার সাথে যোগাযোগ করলে ১৬ জন মহিলা প্রশিক্ষণার্থী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চিনেন না বলে জানান। তারা কোন দিন করিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আসেননি। তাসলিমা বেগম জানান তিনি ৪০ দিন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কি শিখেছেন জানতে চাইলে কিছু বলতে পারেননি। তাদেও প্রশিক্ষণ কোর্সে শিক্ষার্থী কতজন ছিল প্রশ্ন করলে তিনি জানান ৩ জন ছিলেন। সাফিয়া খাতুনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে বলেন তিনি ২ মাস যাবৎ ঢাকায় অবস্থান করছেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আসেননি। রহিমন বিবি বলেন তিনি গত ২৪ সেপ্টেম্বর একদিন এসেছিলেন। রুবিনা চৌধূরী বলেন এক মাসের মতো প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সুলতানা আক্তার বলেন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তবে কত দিন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলতে পারেননি। শিউলি বেগম, আনোয়ারা, শিফা আক্তার, সাহেদা বেগম, হোসনা আক্তার, আরতি রানী, বিলকিছ আক্তার, পুস্প আকতার, সুমা আকতার, পপি আক্তার, সাহেলা বেগম, জাহেনারা বেগম, তামান্না বেগম, রিনা বেগম,মহিমা তেলেঙ্গা, রুজিনা বেগম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সম্পর্কে কিছু বলতে পারেনি। তাদের সার্টিফিকেট ঠিকই তৈরী হয়েছে। বিদেশগামী মহিলাদের সব কিছু কাগজ পত্র ঠিক করে দেয় ট্রেভেলস এজেন্সি। ট্রেভেলস এজেন্সির ও দলালদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীর নামের লিস্ট আসে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। ঘুষের পরিমান নির্ধারন করে নাম তালিকাভ’ক্ত করা হয়। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বিনা প্রশিক্ষণে সার্টিফিকেট দেওয়া হয় তাদেরে। এর ফলে বিদেশের ভাষা না শিখে ও নিয়মকানুন জানা না থাকার করণে বিদেশ গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় বিদেশ যাত্রীদেরে। বিশেষ করে মহিলারা পড়েন বেশি বিপাকে। তারা গৃহস্থলীর কাজ করেন বিধায় সব সময় তাদেরে কথাবার্তা বলতে হয়। আসবাবপত্রের নাম জানা ও পারিবারিক নিয়মকানুন সম্পর্কে অবগত হতে হয়। কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্রের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের লোভের ফলে বিনা প্রশিক্ষণে সটিফিকেট নিয়ে বিদেশ যাওয়ার কারণে বহু মহিলার জীবনে নেমে আসছে সীমাহীন দুর্ভোগ।

 

রহিম,মৌঃ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451