মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ঋণ পেতে যাচ্ছি, প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে : অর্থমন্ত্রী

অনলাইন ডেক্স
  • আপডেট সময় বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ীই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ঋণ দেবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ঋণের প্রথম কিস্তি পাওয়া যাবে। ২০২৬ সালের মধ্যে সব ঋণ পাওয়া যাবে।

আজ বুধবার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফের কাছে যেভাবে ঋণ চাওয়া হয়েছে, সেভাবেই দিচ্ছে। আমরা তাদের ঋণ পেতে যাচ্ছি ইনশাল্লাহ। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ঋণের প্রথম কিস্তি পাওয়া যাবে। বাকি ঋণ প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর ৫১৯ মিলিয়ন এসডিআর (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস) হিসেবে ৬টি সমান কিস্তিতে ২০২৬ সালের মধ্যে পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বের অর্থনীতিই এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। উন্নত থেকে উন্নয়নশীল সকল দেশে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। প্রায় সকল দেশের মুদ্রার মান ডলারের বিপরীতে কমে গিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এ উত্তাপের আঁচ আমাদের অর্থনীতিতেও কিছুটা লেগেছে। এ অস্থিরতা যাতে কোনো ধরনের সংকটে ঘনীভূত না হয় তা নিশ্চিত করতেই আমরা আগাম সতর্কতা হিসেবে আইএমএফের ঋণের জন্য অনুরোধ করেছিলাম।

চলমান ঋণ আলোচনার পর্বটি আজ সফলভাবে সমাপ্ত হলো জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যেভাবে ঋণ চেয়েছিলাম, ঠিক সেভাবেই ঋণ পেতে যাচ্ছি। আইএমএফের সফররত দলটি বাংলাদেশ সরকারের সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করেছে। আমাদের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো বলে তারা আমাদের জানিয়েছেন। আইএমএফ টিম, আমাদের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কারের সাথে একমত পোষণ করেছে। সে অনুযায়ী আমরা চার বছর মেয়াদি ঋণ কর্মসূচি নিতে যাচ্ছি।

তিনি চলমান সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, সরকারের বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রাখা হবে, যা গত প্রায় ১৪ বছর যাবত আমরা করে আসছি। আমাদের সরকারের সবসময় প্রচেষ্টা থাকে বাজেট ঘাটতিকে জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা। গত বছর আমাদের বাজেট ঘাটতি ছিল ৫.১ শতাংশ যা এই অর্থবছরে ৫.৫ শতাংশ ধরা আছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তার মতো সামাজিক খাতে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি করা যা আমরা প্রতি অর্থবছরে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করছি। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে চলতি অর্থবছরে আমাদের বরাদ্দ রয়েছে ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা যা মোট বাজেটের প্রায় ১৭ শতাংশ। আর্থিক খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নতুন কয়েকটি আইন প্রণয়ন এবং পুরোনো কয়েকটি আইনের সংশোধনের চলমান কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা, রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার জোরদার এবং কর প্রশাসনের দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করা হবে।

তিনি বলেন, ভ্যাট আদায়ের জন্য আমরা ইএফডি মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এযাবত ৬ হাজার ৭৩২টি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। আগামী বছরে আরো ৬০ হাজার মেশিন স্থাপন করা হবে এবং পরবর্তী ৪ বছরে ২ লক্ষ ৪০ হাজার মেশিন স্থাপিত হবে। জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের ব্যবস্থাটি আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যের সাথে সময়ে সময়ে সমন্বয় করা, যাতে সামনে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য কমলে দেশের অভ্যন্তরেও তা একইভাবে কমানো যায়।

এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, টাকার বিনিময় হার নির্ধারণের কাজটি ধীরে ধীরে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া, যা আমরা ইতোমধ্যে শুরু করেছি। সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা। একটি দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়নের পরিকল্পনা করা, যার মধ্যে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার বিষয়টিও থাকবে ইত্যাদি।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

চলতি বছরের ২৪ জুলাই ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে আইএমএফকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল গত ২৬ অক্টোবর ঢাকায় আসে। আজ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিনিধি দলটি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451