শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

দিহানের বাসার দারোয়ান দুলাল আদালতে সাক্ষ্য দিলেন

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২১
  • ১৯৯ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার একমাত্র আসামি ফারদীন ইফতেখার দিহানের বাসার দারোয়ান দুলাল আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালতে দারোয়ান দুলাল ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায়  জবানবন্দি দেন।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখার ওমেদার মোহাম্মদ সরোয়ার এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আজ সকালে কলাবাগান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ঠাকুর দাস বলেন, ‘দুলালকে গতকাল সোমবার পুলিশ হেফাজতে নিয়ে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি যতটুকু জানেন, আমরা ততটুকু জানার চেষ্টা করেছি। দুলাল এই মামলার আসামি নন। তাঁকে সকালে আদালতে নেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত জবানবন্দি দেওয়ার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নিউমার্কেট জোনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুলালের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দুলাল আমাদের বলেছেন, দিহান ওই ছাত্রীকে বাসায় নিয়ে যান। দিহান নিয়ে যাচ্ছে বলে দারোয়ান তাকে কিছু বলেননি। এর এক ঘণ্টা পর দিহান ইন্টারকমে যোগাযোগ করে দারোয়ানকে উপরে উঠতে বলেন। উপরে উঠে দারোয়ান দেখেন, মেয়েটিকে সোফায় শুইয়ে রাখা হয়েছে। ওই সময় সোফায় রক্ত লেগে ছিল।’

‘পরে তারা বাসা থেকে নিচে নামেন। হাসপাতালে নেওয়ার জন্য গাড়িতে তুলে দেন দুলাল। তারপর তিনি ওই বাসায় প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে ঘটনা বোঝার চেষ্টা করেন। এরপর তিনি বাসা থেকে পালিয়ে যান’, বলেন ওই কর্মকর্তা।

ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান দিহান। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর ওই দিন দিবাগত রাতে নিহত ছাত্রীর বাবা কলাবাগান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

আসামি দিহানকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের নিউমার্কেট জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ইহসানুল ফেরদৌস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নিহত ছাত্রীর সঙ্গে আসামির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আসামির মা বাসায় না থাকায় সুযোগ পেয়ে ছাত্রীকে কলাবাগানের ওই ফাঁকা বাসায় ডেকে নেওয়া হয়। এরপর জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। পরে ওই ছাত্রীর জননাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।’

এডিসি আরো বলেন, ‘শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে ওই ছাত্রী মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে হাসপাতাল থেকে আমাদের বিষয়টি জানানো হয়। পরে আমরা লাশটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠাই। আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল থেকে ধর্ষণের কথা বলা হয়েছে।’

নিহত ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সে এ বছর ‘ও’ লেভেল পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পরীক্ষার সাজেশন দেওয়ার কথা বলে ছাত্রীকে বাসায় ডেকে নেয় বন্ধুরা। তারপর ফোন করে ছাত্রীর মাকে জানানো হয়, সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে। এরপর ছাত্রীকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছাত্রীর মা হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান, মেয়ের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁর ধারণা, মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার একমাত্র আসামি ফারদীন ইফতেখার ওরফে দিহান গত শুক্রবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এ ছাড়া পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিহানের আরো তিন বন্ধুকে আটক করেছিল। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451