মোঃ আশিকুর রহমান(টুটুল),নাটোর জেলা প্রতিনিধি.
ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়ায় গত দুই তিন দিনে পদ্মার পানি অস্বাভাবিকভাবে
বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে লালপুর উপজেলার লালপুর, বিলমাড়ীয়া, নওসারা সুলতানপুর, চরজাজিরা, চর
বন্দবস্ত গোবিন্দপুর, চাকলার চর, দিয়াড় বাহাদুরপুর সহ পদ্মার চরাঞ্চলের হাজার হাজার একর
জমির আখ, ধৈঞ্চা, শীতকালীন সবজি, কচু, হলুদ, পেয়ারা, কুলবরই, চালকুমড়া ক্ষেত জলমগ্ন
হয়ে পড়েছে। চরাঞ্চলের কোন কোন কোন জমির ফসলের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। প্লাবিত হচ্ছে
জনপদও। চরাঞ্চল ছাড়াও নদী তীরবর্তি লালপুর, বিলমাড়ীয়া, দুড়দুড়িয়া ও ঈশ্বরদী ইউনিয়নের
দু’একটি ক্যানেল দিয়ে পদ্মার পানি ঢুকতে শুরু করেছে। আতংকের মধ্য দিয়ে
দিনতাতিপাত করছেন এসব এলাকার লোকজন ।
পদ্মা চরের বাসিন্দারা জানান, নওপাড়া, সুলতানপুর, রামকৃষ্ণ, চকরাজাপুর, চর লালপুর, দিয়াড়
বহাদুরপুর ও খানপুর গ্রামের অনেক বাড়িতে পানি উঠেছে। পদ্মা নদীতে যে হারে পানি
বাড়ছে তাতে বড় ধরনের বন্যার অশংকা দেখা দিয়েছে।
সুলতানপুর গ্রামের আরিফ হোসেন জানান, তার তিন বিঘা জমির পেয়ারা ও ৫ বিঘা
জমির কুলবরই বাগান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অথচ ইতিপূর্বে কখনোই ঐসব
জমিতে পানি ওঠেনি। খাঁনপুর গ্রামের আমির আলীর ৬বিঘা জমির পেয়ারা বাগান
পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে তিনি জানান। অনেকের সবজি ক্ষেত, আখ ক্ষেত সহ ফসলি
জমি এখন পানির নিচে।
দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, আমার এলাকার চন্ডিপুর ক্যানেল
দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে রামপাড়া, রাধাকান্তপুর,
মোল্লাপাড়া, জয়রামপুর, জয়পুর, জয়কৃষ্টপুর, বেরিলাবাড়ী, গোখুরাবাদ, মিয়াপাড়া,
পাইকপাড়া প্রভৃতি গ্রাম প্লাবিত হয়ে যাবে। এসব গ্রামের মানুষেরা মারাত্মক
আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলের পানি পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী
কে.এম.জহুরুল ইসলাম বলেন, পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের বিপদ সীমা
১৪.২৫। সকাল ৬টায় ছিল ১৪.১২ মিটার এবং দুপুরে ছিল ১৪.১৪ মিটার।
পানি বৃদ্ধির হার এরকম থাকলে হয়তো আগামী পরশু নাগাদ বিপদ সীমা অতিক্রম করতে পারে।