বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সিইসির সঙ্গে উত্ত্যপ্ত বাক্য বিনিময়, ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক বর্জন

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮
  • ৩৪২ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক :

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উত্ত্যপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। পরে সিইসির বিরুদ্ধে অশোভন আচরণের অভিযোগ তুলে বৈঠক বর্জন করেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বৈঠক বর্জনের পর নির্বাচন কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সিইসি অশোভন আচরণ করেছেন। সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে জাতীয় নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। কারণ তারা নির্বাচনের ন্যূনতম পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারছে না। কিন্তু আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দিব না।’

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বৈঠক শুরু হয়। ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বৈঠকে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টুসহ আরো কয়েকজন।

 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। ছবি : ফোকাস বাংলা

অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে বৈঠকে ছিলেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ও রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।

এ সময় ড. কামাল পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ওপর নির্যাতন ও প্রচারণায় বাধার অভিযোগ জানান। এরপর অশোভন আচরণের অভিযোগ এনে ক্ষুব্ধ ড. কামাল হোসেনসহ নেতারা বৈঠক ত্যাগ করেন।

এরপর নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বৈঠকের বর্ণনা দেন। তবে ক্ষুব্ধ ড. কামাল হোসেন এ সম্মেলনে ছিলেন না।

সংবাদ সম্মেলনে ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন তাঁর বক্তব্যে সিইসির উদ্দেশে বলেন, আপনি বর্তমানে প্রধান বিচারপতির চেয়েও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারেন। আপনি ইচ্ছা করলে… পুলিশ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আপনার এই … পুলিশ বাহিনী আমাদের মিটিং-মিছিল কিছুই করতে দিচ্ছে না। এমনকি বেলা ২টার পর মাইক ব্যবহারের জন্য আমাদের নির্দেশনা  দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও তার জোটেরা তার নিয়মকানুন না মেনে পুলিশের সহায়তায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের গুণ্ডা বাহিনী আমাদের ওপর হামলা করছে। আমাদের প্রার্থীদের জীবনের দাম না থাকলেও কর্মীদের জীবনের দাম রয়েছে। তাদের তো সেভ করতে হবে।

এ সময় সিইসি ক্ষুব্ধ হয়ে ড. কামাল হোসেনকে বলে ওঠেন, আপনি এমন কী হয়েছেন, যে পুলিশকে… বলছেন। নিজেকে কী মনে করেন?’

ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘তখন মঈন খান সিইসিকে বলেন, নির্বাচনের কোনো পরিবেশ যদি সৃষ্টি করতে না পারেন, তাহলে বলে দেন, আমরা আজকেই প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বর্জনের বিষয়ে ঘোষণা দেব।’

 

নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : ফোকাস বাংলা

এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সিইসি কোনো ভদ্রতাসূচিত আচরণ করেননি। আমরা পুলিশের দ্বারা নির্যাতিত হওয়ার কথা জানালে, তিনি কোনো সহানুভূতি না জানিয়ে হঠাৎ করেই পুলিশের পক্ষেই অবস্থান নেন। তাই আমরা বৈঠক থেকে চলে আসছি।’

নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, ‘প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এগুলো সব আলোচনার পরে আমরা আশা করেছিলাম যে, সিইসির বক্তব্যের শুরুতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের বাড়িঘর পুড়ে গেছে উনি তাদের প্রতি একটা সহানুভূতি দেখিয়ে তাঁর বক্তব্য শুরু করবেন। কিন্তু আমরা দেখলাম, উনি এর ধারেকাছে না গিয়ে বরং আমরা যাদের পক্ষে অভিযোগ করছি, উনি তাদের পক্ষ অবলম্বন করে তাঁর বক্তব্য শুরু করেছেন। তাই আমরা ওয়াক আউট করে বের হয়ে চলে এসেছি।’

সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সেনাবাহিনীকে চেয়েছি নিশ্চয়। কিন্তু সেনাবাহিনী এখন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। তারা তাদের কোথাও বের হতে দিচ্ছে না। এখন সেনাবাহিনীকে ক্যাম্পে রেখে পুলিশ দিয়ে যে অত্যাচারটা বাড়ানো হয়েছে, এটা আসলে সেনাবাহিনীকে হেয় করার একটা চক্রান্ত কি না, সেটাও বিবেচনার বিষয়।’

সংবাদ সম্মেলনে ড. মঈন খান বলেন, ‘১১ ডিসেম্বর আমার শান্তিপ্রিয় গণসংযোগ কার্যক্রমের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর হয়েছে এবং ১৭ তারিখে লিখিতভাবে বলেছি। তারপর গতকাল কী ঘটনা হয়েছে সেগুলো আপনারা সব জানেন।

তো আজকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে স্পষ্ট ভাষায় জিজ্ঞাসা করেছি, আপনি আমাকে বলে দেন আমার নিজের জীবন গেলেও আমার যে নেতাকর্মীরা আমাকে মানবঢাল করে এই কয়েকদিনের ভেতরে তিনবার আমার জীবন বাঁচিয়েছেন, আমি কী তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেব? আপনি আমাদের বলে দেন, যদি বলেন নির্বাচন করতে দিবেন, আমরা করব। আপনি না করতে দিলে আমি আজ বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে বলে দেব আমার পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব না।’

 

 

 

 

 

সুত্র :এন টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451