রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

রাজিবপুর ও রৌমারীর চরাঞ্চলে বন্যা শহনশীল বিনা ধান -১১ চাষ করে আশায় বুক বেঁধেছে কৃষকরা

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮
  • ২৬২ বার পড়া হয়েছে

 

সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: 
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে পতিত জমিতে বন্যা সহনশীল বিনাধান-১১ চাষাবাদ করে হাসি ফুটেছে চরাঞ্চলের কৃষকদের মুখে। এই দুই উপজেলার বিভিন্ন চরের পতিত জমিতে প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক বিনাধান-১১ চাষ করেছেন প্রায় আড়াইশ একর জমিতে। এবারের বন্যায় বিনাধান-১১ আবাদকৃত জমির পাশের অন্যান্য ধান নষ্ট হয়ে গেলেও স্ব-গৌরবে দাড়িয়ে আছে বিনাধান-১১। আর এটা সম্ভব করেছেন রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের চরসাজাই মন্ডলপাড়া গ্রামের এরশাদুল হক মাস্টার। তিনি গত মৌসুমে একাই পরীক্ষামূলকভাবে চরের এক একর পতিত জমিতে বিনাধান-১১ চাষ করে ভালো ফলন পান। পরে সেই ধানের বীজ চলতি মৌসুমে তিনি এই দুই উপজেলায় চরাঞ্চলের প্রায় ৫ শতাধিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সরবরাহ করে ধান রোপনের নিয়মকানুন শিখিয়ে দেন।
কৃষি উদ্যোক্তা এরশাদুল হক মাস্টার জানান, গত মৌসুমে তিনি এই বিনাধান-১১ চাষ করে সফলতা পাওয়ায় চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলের কৃষকদের একত্রিত করে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন পতিত জমিতে বন্যা সহনশীল বিনা ধান-১১ চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করেন এবং বিনা টাকায় বীজ সরবরাহ করেন। চলতি মৌসুমে এই কৃষকদের চাষ করা বিনাধান-১১ বন্যার পানিতে ক্ষতি না হওয়ায় আশায় বুক বাঁধেছেন কৃষকরা। বিনা ধান-১১ আবাদে সফলতার মুখ দেখায় এখন খুশি সবাই। এ জাতের ধানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষতা বেশি হওয়ায় ফলন বেশি হয়। আমরা চলতি মৌসুমে এ ধান আবাদ করে সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেছি।
রাজিবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রনয় বিষন দাস বলেন, বন্যা শহনশীল বিনা ধান -১১ আবাদ করে এরশাদুল হক এই চরাঞ্চলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
কোদালকাটি ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ছক্কু জানান, এরশাদ একজন উন্নত ও নতুনত্ব চাষাবাদের প্রতিক। প্রতিদিন সূর্য উঠা থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কৃষান-কৃষানীরা তার বাড়িতে ভীড় জমায় তার পরামর্শ নেওয়ার জন্য।
রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শফিউল আলম বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে বন্যার পানিতে অন্যন্য জাতের ধান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। কিন্তু বন্যা শহনশীল বিনা-১১ ধানের কোন ক্ষতি হয় নাই। এই বন্যা সহনশীল ধান চাষ চরাঞ্চলের অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে চরের মানুষের আর অভাব থাকবে না।
বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষনা ইনস্ট্রিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা) ডক্টর মো: জাহাঙ্গীর আলম ও আর্ন্তজাতিক স্বর্ন পদক প্রাপ্ত মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (বিভাগীয় প্রধান উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ) ডক্টর মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, এরশাদুল হক কে আমরা দেশের শ্রেষ্ঠ কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
স্থানীয় সংসদ সদস্য রুহুল আমিন জানান, এরশাদ রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার পাঁচ শতাধিক কৃষককে বিনামূল্যে বন্যা শহনশীল জাত বিনা ধান -১১ এর বীজ দিয়েছে। আমি তার অনেক ফসলী জমি পরিদর্শন করেছি। আমি মনে করি এরশাদ শুধু একজন কৃষক বা কৃষি উদ্যোক্তা নন তিনি একজন কৃষি গবেষকও বটে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451