শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

আবারও প্রমাণিত হলো, এই ইসি দিয়ে সুষ্ঠু ভোট হবে না : রিজভী

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০১৮
  • ৩৩৫ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ

তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে বিএনপি বলেছে, আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সরকারের অধীনে ইসির পক্ষে কোনোভাবেই সুষ্ঠু ভোট করা সম্ভব নয়।

বিকেলে ভোটগ্রহণ শেষে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসিচব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আবারও প্রমাণিত হলো- এই অবৈধ সরকার এবং আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।’

‘গাজীপুর ও খুলনায় অল্প কিছু লোক ভোট দিতে পারলেও আজকে তিন সিটি নির্বাচনে সেটিও সম্ভব হয়নি। তবে সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যখন জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া দখলের রাজনীতির বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ জনতার প্রবল প্রতিরোধ যেকোনো মুহূর্তে ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত হয়ে সরকারের মসনদকে উল্টে দিবে’, যোগ করেন বিএনপি নেতা।

আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট চলে টানা ৪টা পর্যন্ত। ভোট শেষে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

এ সময় বরিশাল সিটির বিএনপির মেয়র প্রার্থী ভোট বর্জণের ঘোষণা দিয়েছেন। সেখানকার একটি কেন্দ্র অনিয়মের অভিযোগে স্থগিত করা হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের দুটি কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে। সেখানকার বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। রাজশাহীর ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলও এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন।

তবে তিন সিটিতেই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা দাবি করেছেন, সেখানে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, তিন সিটিতে ভোটের উৎসব বিরাজ করছে।

আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্যের সমালোচনা করে নয়াপল্টনের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘একচেটিয়া জালভোট ও ভোট সন্ত্রাসের কৃতিত্বে আত্মপ্রসাদ লাভ করেছে, আর সেজন্যই তারা উৎসবে মেতে উঠেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নিয়েছে পুলিশ।’

রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, ‘সিটি নির্বাচন নিয়ে আমরা যা আশঙ্কা করছিলাম আগে সেটিই আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। কারণ অবৈধ সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনার থাকলে সেখানে নির্বাচন তো নির্বাসনেই যাবে। এ সরকার ন্যূনতম ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজ তিন সিটির কোথাও ন্যূনতম সুষ্ঠু ভোটের খবর পাওয়া যায়নি।

ইসির সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আসেনি। তারা এসেছে সরকারের হুকুম তামিল করার জন্যই। তাই সরকারি দলের ভোট ডাকাতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও এ বিষয়ে তাদের কোনো বিকার নাই।’

নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনে তিন লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ ও নারী ভোটার এক লাখ ৬২ হাজার ৫৩ জন। বরিশাল সিটি করপোরেশনে দুই লাখ ৪২ হাজার ৬৬৬ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ ও নারী ভোটার এক লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন। সিলেট সিটি করপোরেশনে তিন লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ ও নারী ভোটার এক লাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), বিএনপির মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. শফিকুল ইসলাম (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মুরাদ মোর্শেদ (হাতি)।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ (নৌকা), বিএনপির মো. মজিবর রহমান সরোয়ার (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ওবায়দুর রহমান মাহবুব (হাতপাখা), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির আবুল কালাম আজাদ (কাস্তে), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের মনীষা চক্রবর্তী (মই) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন (লাঙ্গল)।

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান (নৌকা), বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন খান (হাতপাখা), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) মো. আবু জাফর (মই) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এহসান মাহবুব জোবায়ের (টেবিল ঘড়ি), মো. এহসানুল হক তাহের (হরিণ) ও মো. বদরুজ্জামান সেলিম (বাস)। তিন সিটিতে ৫৩০ জন কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রাজশাহী সিটিতে ৩০টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। এখানে ১৩৮টি ভোটকেন্দ্র ও এক হাজার ২৬টি ভোটকক্ষ রয়েছে। বরিশাল সিটিতে ৩০টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। এখানে ১২৩টি ভোটকেন্দ্র ও ৭৫০টি ভোটকক্ষ রয়েছে এবং সিলেট সিটিতে ২৭টি সাধারণ ও নয়টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। এখানে ১৩৪টি ভোটকেন্দ্র ও ৯২৬টি ভোটকক্ষ রয়েছে।

রাজশাহী সিটিতে সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, বরিশালে মুজিবুর রহমান ও সিলেটে মো. আলিমুজ্জামন রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451