সুজয় চক্রবর্ত্তী পটুয়াখালী ঃ
চাকরীর দেনদরবারের উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকা গিয়ে গত ৪ মার্চ রাতে নিখোঁজ হয়েছেন পটুয়াখালীর
গোরস্থান রোডের জাহিদুল হাসান (৩০)। ঘটনার দিন রাত ১০টা থেকে জাহিদুলের সাথে কোন
যোগাযোগ করতে পারেননি তার পরিবারের সদস্যরা। গত ৭ মার্চ জাহিদুলের খালাশাশুড়ি নাজমা আক্তার
ঢাকার ওয়ারী থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানিয়েছেন ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম। যার নাম্বার ৫১৭ তারিখ ০৭.০৩.২০১৮।
নিখোঁজ জাহিদুলের স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, পাওয়ার গ্রিড কোম্পনি অব বাংলাদেশ লিমিটেড
(পিজিসিবি) নামক একটি সরকারি চাকরির বিষয়ে দেনদরবার করার উদ্দেশ্যে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি
পটুয়াখালী থেকে লঞ্চযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন জাহিদ। ১৮ ফেব্রুয়ারি সিদ্দিরগঞ্জ বিদ্যুৎ উৎপাদন
কেন্দ্রের কলোনিতে তাঁর বোনের বাসায় যান তিনি। সেখানে বোনের সঙ্গে দেখা করে ঢাকার
আজিমপুরে বন্ধুদের কাছে যান। ঢাকায় যাওয়ার পর থেকে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো
জাহিদুলের। তবে কোন বন্ধুর বাসায় উঠেছিলেন, তা নিশ্চিত নন শারমিন। সবশেষ গত ৪ মার্চ সন্ধ্যায়
সেখানে থাকা অবস্থায় জাহিদের সঙ্গে শেষ কথা হয় শারমিনের। এরপর থেকে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ
পাওয়া যায়। বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও জাহিদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তিনি
আরও জানান, গত বছর ওই চাকরীর জন্য লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন জাহিদ। গত জানুয়ারির ৯ তারিখে
মৌখিক পরীক্ষাও দেন। ঢাকায় যাওয়ার আগে জাহিদ তাকে বলে যান চাকরীর তদবীরের জন্য যাচ্ছেন তিনি।
সুমন নামের জাহিদের এক বন্ধু ওই চাকরির জন্য তাকে সাহায্য করছিলেন বলে তিনি জানতেন। তবে ঢাকা
যাওয়ার কয়েকদিন আগে পাওনা টাকা নিয়ে কারো সঙ্গে বাক বিতন্ডা হয় জাহিদের। মাষ্টার্স পাশের পর
কিছুদিন ঠিকাদারী কাজ করায় বিভিন্ন জনের সাথে টাকার লেনদেন ছিল তার।
শেষবার জাহিদ তার স্ত্রীকে ফোনে জানান, নবাবপুরে বুলবুল ভাইয়ের সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন তিনি।
এরপরে রাত ১০টায় জাহিদুলের মোবাইলে কল দিলে তখন থেকেই তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। বুলবুল ভাইয়ের
বিষয়ে কোন তথ্য জানাতে পারেনি শারমিন। তবে চাকরীর জন্য টাকার লেনদেন অথবা পাওনা টাকা উসুল
করতে গিয়ে জাহিদের এমন পরিনতি হয়েছে বলে ধারনা শারমিনের।
এই বিষয়ে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান,
বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত চলছে। জাহিদের মোবাইলটি সর্বশেষ কোতোয়ালি থানা এলাকায় ব্যাবহৃত
হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে জাহিদের পরিবারের কারো কাছ থেকে কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছেনা। পুলিশ, ডিবি
ও র্যাব এ বিষয়টি তদন্ত করছে।