শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

একটি কয়লার জাহাজ ২৫ জুন পায়রার জেটিতে ভিড়বে বলে আশা

অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩
  • ৭১ বার পড়া হয়েছে
ফাইল ছবি।
 

 

ডলার-সংকটে বিল বকেয়া থাকায় কয়লা সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে দেশের সবচেয়ে বড় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে। ইন্দোনেশিয়া থেকে ছয়টি জাহাজ কয়লা নিয়ে ইতোমধ্যে রওনা হয়েছে। একটি জাহাজ ২৫ জুন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভিড়লেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আবার উৎপাদনে ফিরতে পারে।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ থাকার কারণে পায়রা সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে।

তিন বছর আগে উৎপাদনে আসে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র। তারপর এবারই প্রথম গত ৬ জুন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল।কারণ পায়রা বন্দর চালুর পর বন্দর‌টি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লাবাহী জাহাজ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে। প্রায় ২০ দিন কয়লাবাহী জাহাজ বন্দ‌রে আস‌ছে না।

তা‌তে ক‌রে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ অন্তত ২৫ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়ে‌ছে।বন্দর সূত্র বল‌ছে, গত ২০ দি‌নের মধ্যে পায়রা বন্দ‌রে মাত্র দুটি পাথরবোঝাই জাহাজ পণ্য খালাস করেছে। এতে বন্দরের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। পায়রা বন্দ‌রের স্থায়ী জেটির কাজ চলমান থাকায় মালামালবাহী জাহাজ সরাস‌রি তাপ‌ বিদ্যুৎ কে‌ন্দ্রের জেটিতে গি‌য়ে মালামাল খালাস কর‌তে হ‌চ্ছে।

প‌রিসংখ‌্যান বল‌ছে, পায়রা সমুদ্র বন্দরে ২০২২ সালে ১২১টি বিদেশি এবং ৮৮৫টি লাইটার জাহাজে পণ্য আনায় ৩৮৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হয়। এ ছাড়া ২০২১ সালে ৬৪টি বিদেশি জাহাজ এবং ১৭৬টি দেশি লাইটার জাহাজে মালামাল পরিবহনে ১২৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে।

তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহ আব্দুল মাওলা বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে ছয়টি জাহাজ কয়লা নিয়ে ইতোমধ্যে রওনা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি জাহাজ ২৫ জুন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভিড়বে বলে আশা করছি। সেই জাহাজটিতে প্রায় ৩৭ হাজার টন কয়লা আছে।

শাহ আব্দুল মাওলা আরো ব‌লেন, আগামী ২৫ জুন ইন্দোনেশিয়া থেকে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লা এলে তা দ্রুত খালাস করা হ‌বে। সে অনুযায়ী এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদ‌নে যা‌বে। পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু‌টি ইউনি‌টের জন্য মাসে অন্তত তিন লাখ টন কয়লা প্রয়োজন হয় ব‌লে তি‌নি নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আজিজুর রহমান বলেন, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সবচেয়ে বড় ক্লায়েন্ট। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানীকৃত কয়লা সরাসরি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে নোঙর করে। সেখান থেকে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট ইউনিটে সরবরাহ করা হয়। তারা দু‌টি সংস্থাই  লাভবান হ‌চ্ছে।

তিনি আরো বলেন, কয়লার পাশাপা‌শি পাথর, সিমেন্টের কাঁচামালসহ কিছু পণ্য বিদেশ থেকে এই বন্দরের মাধ্যমে খালাস করা হয়। তবে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হলে বন্দরের নিজস্ব জেটি থেকেই বিভিন্ন পণ্য খালাস করা হবে।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল গোলাম সাদেক সাংবা‌দিক‌দের জানান, এ বন্দরের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে বিদেশ থেকে সার, গাড়ি ও অন্যান্য মালামাল আমদানি-রপ্তানির জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলমান আছে।

তি‌নি আরো ব‌লেন, বন্দ‌রের প্রথম টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হলেই সেখানকার জেটিতে  সরাসরি মালামালবাহী মাদার ভেসেল নোঙর করবে। তা‌তে ক‌রে প‌রিবহন ব‌্যয় অন‌্যান‌্য বন্দ‌রের তুলনায় কম‌বে। খালাস হওয়া মালামাল সড়কপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন সম্ভব হবে।

উল্লেখ‌্য, ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পটুয়াখালীর রামনাবাদ নদীতীরে দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রার ভিত্তিফলক স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বন্দরটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে একের পর এক উন্নয়নের মহাকর্মযজ্ঞ চলে আস‌ছিল।

২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট পায়রা বন্দরের আনুষ্ঠানিক পণ্য খালাস কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে বন্দরের প্রথম টার্মিনাল, ইয়ার্ড, সংযোগ সড়কসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ চলমান আছে।

ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প। ড্রেজিংয়ের কারণে ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার চ্যানেল সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে দেশের সবচেয়ে গভীর সমুদ্রবন্দর এটি।

পদ্মা সেতুর কারণে ঢাকার সঙ্গে এ অঞ্চলের দূরত্ব কমেছে। ফলে পায়রা বন্দর দিয়ে বিদেশে আমদানি-রপ্তানির পণ্য পরিবহনে খরচ কমবে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451