বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

‘দুরন্ত শৈশবে বই-আনন্দ’ আনন্দময় শিক্ষার বার্তা ঘোষণায় আলোকচিত্র প্রদর্শনী

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭
  • ২৯৮ বার পড়া হয়েছে

 

দ্বীন ইসলাম, বিশেষ সংবাদদাতাঃ

স্কুলে স্কুলে বই উৎসব। দুরন্ত শৈশব নতুন স্বপ্নে নতুন দিন। নতুন বইয়ের গন্ধে

আমোদিত কোমলপ্রাণ উদ্ভাসিত। তাই আনন্দময় শিক্ষার বারতা নিয়ে

বাংলাদেশের সম্ভাবনার সীমানাজুড়ে বই হাতে শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশে এক অভূতপূর্ব উচ্ছ্বাস আর ব্যতিক্রমধর্মী আবেদন নিয়ে বছরের প্রথম দিনটি

উদযাপিত হচ্ছে ‘বই উৎসব’ হিসেবে। নতুন বই হাতে শিক্ষার্থীদের কলরোলে মুখর প্রতিটি

বিদ্যাপীঠ থেকে ঘোষিত হচ্ছে আনন্দময় শিক্ষার বারতা। শিক্ষার্থীরা অনাবিল আনন্দে নতুন শিক্ষাবর্ষ

বরণ করে নিচ্ছে নতুন পাঠ্যবইয়ের সুবাস মেখে। এ প্রাণোচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে দুরন্ত শৈশব; স্পন্দিত

হয় স্বপ্নতাড়িত বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনায়।

বইয়ের অভাবে বাংলাদেশে এখন আর কোনো শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম বিঘিœত হয় না। যদিও প্রাথমিক

থেকে ঝরে পড়ার চিত্র বেশ কয়েক বছর আগেও ছিল উদ্বেগজনক। আর পাঠ্যবইয়ের সংকটে স্কুলের পাঠ

চুকাতে হয়েছে এমন শিশুর সংখ্যাও ছিল উলে−খযোগ্য। কিন্তু এসব এখন অতীত। প্রাথমিক ও

মাধ্যমিকের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে ৮ বছর ধরে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দিচ্ছে

বাংলাদেশ সরকার। ১ জানুয়ারি দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পালিত হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক উৎসব।

শিক্ষাব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এ বিচক্ষণ পদক্ষেপে।

বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণের উদ্যোগ রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণ করা হয়

২০০৯ সালে। ৮ বছরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে ২৪৩ কোটি বই বিতরণ করা

হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় চলতি বছর ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫টি নতুন বই বিতরণ করা

হয়েছে এবং এবারই প্রথম বিলুপ্তপ্রায় ৩৭টি উপজাতীয় ভাষার মধ্যে পাঁচটি ভাষায় ৫০ হাজার বই

প্রদান করা হয়। এ পাঁচটি উপজাতিগোষ্ঠী হচ্ছে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা (ককবরক), গারো ও ওঁরাও

(সারদি)। এ পাঁচটি জাতিগোষ্ঠীর জনসংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি। এ বিপুল কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন হয়েছে

গুরুতর কোনো ত্রুটি ছাড়াই।

বিশ্বে বিনামূল্যে এত বিপুলসংখ্যক পাঠ্যবই সরবরাহের দৃষ্টান্ত বিরল। শিক্ষিত জাতি গঠনে রাষ্ট্রের এ

আন্তরিক উদ্যোগ বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। ইউনেস্কো বলছে, নিম্ন আয় সত্ত্বেও

অল্প যে কয়েকটি দেশ জাতীয় বাজেটে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছে, বাংলাদেশ সেসব দেশের একটি।

সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার বিনামূল্যে বই বিতরণের মতো বিশাল আয়োজন সফলভাবে

পরিচালনা করছে। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার কমাতে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে উপবৃত্তি প্রদানের

পাশাপাশি স্কুলে খাবার কর্মসূচিও পরিচালিত হচ্ছে। ইতিবাচক এসব উদ্যোগ সম্ভাবনার দ্বার

উন্মোচন করেছে। শিক্ষা এখন প্রতিটি শিশুর কাছে বয়ে আনে আনন্দবার্তা, চোখে এঁকে দেয়

নতুন এক দিনের স্বপ্ন।

শৈশবের এ কাক্সিক্ষত স্বপ্নই হারিয়ে গিয়েছিল আলোকচিত্রী ফোজিত শেখ বাবুর। আশির দশকের

মধ্যভাগে বইয়ের অভাবে পড়াশোনার পাট চুকাতে হয়েছিল তাকে। বাংলাদেশের শিক্ষা খাতের আমূল

বদলে যাওয়া এ চিত্র প্রবলভাবে আলোড়িত করেছে আলোকচিত্রী বাবুকে। তিনি গভীর আবেগ থেকেই

শিক্ষায় বাংলাদেশের সফলতার বার্তা তার আলোকচিত্রের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে চান।

আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘দুরন্ত শৈশবে বই-আনন্দ’ আয়োজনের উদ্যোগ তাই বাবুর একান্তই ব্যক্তিগত

এক প্রয়াস।

সীমিত সামর্থ্যে বাংলাদেশের সংকট ও সাফল্য তুলে ধরার উদ্যোগ ফোজিত শেখ বাবুর এটিই প্রথম

নয়। তার প্রথম আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘স্টপ দ্য ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এ বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের

ভয়াবহতা শুধু তুলেই ধরেননি, বিপন্ন প্রকৃতিকে রক্ষায় সচেতন হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন

তিনি। তার দ্বিতীয় প্রদর্শনী ‘বাঁচাও নদী শীতলক্ষ্যা’ কলকারখানার রাসায়নিক শিল্পবর্জ্যে

নদীদূষণের আত্মঘাতী প্রবণতা সম্পর্কে সতর্ক করার প্রয়াস। এ প্রদর্শনী জাতীয় জাদুঘরের পর

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যার তীর ও চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার আলিয়ঁস

ফ্রঁসেসে আয়োজিত ‘বাঁচাও নদী বুড়িগঙ্গা’ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে বুড়িগঙ্গাকে দখল ও

দূষণমুক্ত করার দাবি জানান।

বাবুর ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ষষ্ঠ প্রদর্শনী ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ৫০টি ছবি নিয়ে শিক্ষায়

সফলতামূলক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘দুরন্ত শৈশবে বই-আনন্দ’।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451