ইন্দোনেশিয়া একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। দেশটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু এই অপরূপ সৌন্দর্যের দেশেও এমন একটি গ্রাম আছে যে গ্রামের মানুষের কার্যকলাপ গা শিউরে ওঠার মতো। আর এই রহস্যময় গ্রামটিকে দেখার জন্য দেশ বিদেশ থেকে হাজারো মানুষ ভিড় জমায়। স্থানীয়দের কাছে গ্রামটি মৃতদেহের গ্রাম বলে বেশি পরিচিত। ভাবছেন তাহলে কি এই গ্রামের সব বাসিন্দারা মৃত? না তেমন মোটেও নয়।
বালি গ্রামের স্থানীয়রা তাদের মৃত স্বজনদের সৎকার না করে কোন খালি জায়গায় রেখে আসেন। কেউ কেউ আবার মৃতদেহ জঙ্গলে রেখে আসে। আবার অনেকে নৌকো করে জলাশয়ের পানিতে ভাসিয়ে দেয়। বালির অধিকাংশ মানুষই হিন্দুধর্মে বিশ্বাসী। বালি গ্রামের মানুষের এই অদ্ভুত সৎকার রীতি বালিকে অন্যদের থেকে ভিন্ন করে রেখেছে। বালিতে সাধারণত দুটি নিয়েমে সৎকার করা হয়। কেউ যদি বিয়ের আগে মারা যায় তাহলে তার মৃতদেহকে পৃথিবীতে রেখে দেয়া হয়। পরে সেই মৃত ব্যাক্তিকে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর তাকে বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে জলাশয়ে ভাসিয়ে দেয়া হয়। আর যদি কেউ বিয়ের পরে মারা যায় তাহলে বাঁশের খাঁচা বানিয়ে জঙ্গলে কোন এক গাছের নীচে রেখে আসা হয়।
তবে যেহেতু বালি গ্রামের অধিকাংশই হিন্দু ধর্মালম্বী তাই নিয়ম অনুযায়ী মৃতদেহ পোড়ানো উচিত। কিন্তু এই গ্রামে মৃতদেহ সৎকার দেয়া হয় না কারণ বালি গ্রামে রয়েছে প্রচুর আগ্নেয়গিরি। তাই এই গ্রামে মৃতদেহ পোড়ানো সম্ভব নয়। কারণ মৃতদেহ পোড়াতে গেলে যেকোন সময় আগুন লেগে চারপাশে ছড়িয়ে যেতে পারে তাই মৃতদেহ পোড়ানোর বদলে খোলা জায়গায় রেখে দেয়া হয়। আর এতে করে গ্রামের প্রায় অর্ধেকই মৃতদেহ দিয়ে ভরে গেছে। মাঝে মাঝে কিছু মৃতদেহ আবার উধাও হয়ে যায়। তবে এসব মৃতদেহ থেকে কোন প্রকার দুর্গন্ধ বের হয় না বলে গ্রামবাসীর দাবি। কেউ কেউ আবার স্বজনদের দেহটিকে ছাতা দিয়ে ঢেকে রেখে আসে। অনেকে আবার কাপড় ও বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখে। তবে বালি গ্রামের সদস্যরা এসব মৃতদেহদের সঙ্গে থাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।