১৯৯৫ সালের বস্ত্রনীতিকে ঢেলে সাজিয়ে বস্ত্র আইন ২০১৭ প্রণয়ন করা হচ্ছে।সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘বস্ত্রনীতি-২০১৭’ অনুমোদন দেয়া হয়।
মূলত বস্ত্র খাতে টেকসই উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রদান, বিনিয়োগ আকর্ষণ, রপ্তানি বৃদ্ধি, শিল্পের আধুনিকায়ন, মাননিয়ন্ত্রণ ও দক্ষ জনবল তৈরি রপ্তানিমুখী বস্ত্র খাতের উন্নয়ন আইনের মূল উদ্দেশ্য।এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত বস্ত্র কারখানাগুলোর ব্যবস্থাপনা ও তদারকি, বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সহায়তা প্রদান, খাতের উন্নয়নে তহবিল গঠন, মাননিয়ন্ত্রণ, তদারকি ও সমন্বয়, খাতের শিল্প নিবন্ধন, দক্ষ জনবল তৈরি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, গবেষণাকল্পে তথ্যভাণ্ডার প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণ, তথ্যাদি প্রদান ও মূল্য স্থিতিকরণ, অপরাধ ও দণ্ড, বিচার ও আপিল আইনে রাখা হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, বস্ত্র নীতিতে আলাদা প্রস্তাবনা রয়েছে। ভিশন-মিশন ছিল না আগে, এটা যুক্ত করা হয়েছে।এছাড়া নীতিতে মানবসম্পদ উন্নয়নের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । আর্থিক কোন কোন খাতে প্রণোদনা দেয়া হবে নীতিতে তা উল্লেখ করা হয়েছে। বস্ত্রখাতে বিদেশি বিনিয়োগ কি হবে, তাদের জন্য কি সুযোগ-সুবিধা থাকবে সে বিষয়ে বলা হয়েছে।
বস্ত্রনীতি বাস্তবায়ন কৌশল এবং বাস্তবায়নের একটি অধ্যায় আনা হয়েছে।নীতির উদ্দেশ্যের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির উপযোগী করে বস্ত্র ও পোশাক খাতকে গড়ে তোলা, বস্ত্র পণ্যের অভ্যন্তরীণ সিংহভাগ পূরণ এবং মধ্য ও উচ্চমূল্য সংযোজিত রপ্তানীমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রাথমিক বস্ত্রশিল্পের অধিকতর উন্নয়ন।
প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বহুমুখী বস্ত্র পণ্যের উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করা।এছাড়া প্রাথমিক বস্ত্রখাতের সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে স্পিনিং, উইভিং, নিটিং, ডাইং, প্রিন্টিং, ফিনিশিং, হোশিয়ারি, হোম টেক্সটাইল, টেরিটাওয়েল, রফতানিমুখী তৈরি পোশাক, রেশম শিল্প ইত্যাদি উপ-খাতের ভূমিকা বিবেচনায় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করার কথা নীতিতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নীতির উদ্দেশ্যে আরও বলা হয়েছে, দেশের বস্ত্রখাতে উৎপাদিত পণ্য সর্বাধিক প্রাধিকার প্রাপ্ত শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধার স্বীকৃতি আদায় এবং যাতে সব দেশের বাজারে সহজে প্রবেশাধিকার লাভ করে সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
এর আগে বিভিন্ন সভায় বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম দেশকে বস্ত্রে স্বয়ং সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে বস্ত্র আইন ২০১৭ প্রণয়নের বিষয়টি প্রকাশ করেন।মন্ত্রী জানান, বস্ত্র পরিদপ্তরের নির্দেশিত সেবা প্রদানে একটি একক ডেস্ক থেকে সার্ভিস দেয়ার লক্ষ্যে ওয়ান স্টপ কাউন্টার খোলা হয়েছে এবং বস্ত্র শিল্প স্থাপনে অন্যান্য সংস্থার সার্ভিসকে একটি একক কার্যকর ওয়ান স্টপ সার্ভিস দেয়ার কাজ প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। বস্ত্র শিল্প সম্প্রসারণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন (যেমন-বেপজা, বেজা) করা হচ্ছে। সরকার এই শিল্প সম্প্রসারণ ও রপ্তানী বাজার বাড়াত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার ব্যবস্থা নিচ্ছে।