শরিফুল ইসলাম নড়াইল প্রতিনিধি ঃ
নড়াইলের লোহাগড়ার মধুমতি নদীর কালনা ফেরীঘাটে পারাপারে ব্যবহৃত
একটি ফেরির ফ্যান(পাখা) ডুবোচরে বেধে ভেঙ্গে অচল হয়ে যাওয়ায়
ঘাটের দু’পাড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গত সোমবার
সকালে এ ঘটনা ঘটে। পারাপারে নিয়োজিত তিনটি ফেরির মধ্যে
একটি অনেক আগেই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সচল দুটির একটি
সোমবার বিকল হওয়ায় অন্তত চারশতাধিক দূরপাল্লার বাস, ট্রাক,
কাভার্ডভ্যান, নিত্যপণ্যবহনকারী যানবাহন,এম্বুলেন্স,পিকআপ সহ
বিভিন্ন যানবাহন দুইদিন ধরে কালানাঘাটে পারের অপেক্ষায় বসে
আছে। হাজার হাজার যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে। কাঁচামাল পঁচেগলে
নষ্ট হচ্ছে। যাত্রীদের সাথে ফেরির ইজারাদারও হয়ে পড়েছেন অসহায়।
ফরিদপুরের আটরশীর বিশ্বজাকের মঞ্জিল এর পবিত্র উরশ শরীফ এ
যোগদানের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা শতাধিক
যাত্রীবাহী বাসও আটকা পড়েছে কালনাঘাটে। তাছাড়া সম্প্রতি
মাগুরার সীমাখালী ব্রীজ ভেঙ্গে যাওয়ায় নড়াইল-কালনা- ঢাকা সড়কে
যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুন। সব মিলিয়ে একটি ফেরি দিয়ে
ডুবোচর পেরিয়ে পারাপার দঃুসাধ্য হয়ে পড়েছে।
গত সোমবার থেকে বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারী ) সকালে ঘাট
এলাকা ঘুরে জানা গেছে, খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জেলাসহ
বিভিন্ন বিভাগের কয়েকটি জেলার যাত্রী ও পণ্যবহনের সহজ পথ হলো
বেনাপোল- যশোর-নড়াইল- কালনাঘাট- ভাটিয়াপাড়া-ভাংগা- ঢাকা
রুট। রাজধানী ঢাকার সাথে নড়াইল-যশোর, মংলা, সাতক্ষীরাসহ
অন্যান্য এলাকার সহজ যোগাযোগের রুট কালনাঘাট দিয়ে
প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রিবাহী বাস, ট্রাক,কাভার্ড
ভ্যান,পিকআপ, টেম্পুসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। মধুমতি
নদীতে পানি কমে যাওয়ায় যাতায়াতকারী যানবাহন ও যাত্রীদের জোয়ার-
ভাটার অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা পারাপারের জন্য নদীপাড়ে বসে থাকতে
হয়। কালনা ফেরীঘাট পয়েন্টে মধুমতি নদীতে অসংখ্য ডুবোচর
থাকায় রাতের বেলা ও ভোরে ফেরি চরে আটকে যাচ্ছে। দিনের বেলাতেও
ফেরি চরে ঠেকে যাচ্ছে। তাই নদীর মাঝে যাত্রি ও যানবাহন
অসহায়ভাবে আটকে থাকছে। যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে চরম
দূর্ভোগ পোহাতে হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ডুবোচর সরাতে
ড্রেজিং এর কাজ শুরু করেনি।
এদিকে,কালনা ঘাটে ব্যবহৃত তিনটি ফেরির মধ্যে একটি অনেক
আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। সচল দুটির একটি গতসোমবার বিকল
হওয়ায় দূর্ভোগ চরমে উঠেছে। সম্প্রতি মাগুরার সীমাখালী ব্রীজ
ভেঙ্গে যাওয়ায় নড়াইল-কালনা- ঢাকা সড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুন
বেড়ে গেছে। এরই সাথে যোগ হয়েছে ফরিদপুরে বিশ্বজাকের মঞ্জিল
এর পবিত্র উরশ শরীফ। উরশ শরীফে যোগ দিতে শতশত বাস ভর্তি যাত্রী
ছুঁটছেন কালনাঘাট দিয়ে। যে কারনে চাপ আরো বেড়েছে।
কালনাঘাটের ফেরির চালক মোঃ মফিজুর রহমান জানান,
ঘাটপয়েন্টে অসংখ্য ডুবোচর। । গভীর রাতসহ দিনের বেলায়
পারাপারের সময় ডুবোচরে ফেরি আটকে যায়। ঘন্টার পর ঘন্টা নদীর
মাঝে বসে থাকি। ফেরির ইজারাদার মোঃ মনজুরুল ইসলাম অভিযোগ
করেন, সংশ্ধিসঢ়;øষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা
নেয়নি। এ পথে চলাচলকারী বাস চালক সাব্বির হোসেন জানান,
সোমবার বেলা ১২টা থেকে মঙ্গলবার বিকাল ৫টা পর্যন্ততো
দাঁড়িয়েই আছি। এখনো দুই কিলোমিটার রাস্তা পারাপারের জন্য
গাড়ি অপেক্ষায় আছে। কাভার্ড ভ্যানের ড্রাইভার হাসান আলী
জানান, যশোর থেকে মাগুরা ব্রীজ পার হয়ে ঢাকা যেতাম। কিন্তু সে
ব্রীজ ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে কালনাঘাট হয়ে চলাচল করছি। কিন্তু
এখানেও ভোগান্তিতে পড়লাম। ট্রাকড্রাইভার আনিচ বলেন, কাঁচা
তরিতরকারি বোঝাই করে রওনা হয়ে এখন ৫ ঘন্টার ওপর ঘাটে বসে
আছি। আজ পার হতে হতে পারো বলে মনে হয় না। সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।