শরিফুল ইসলাম নড়াইল প্রতিনিধি ঃ
পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ ওরে একদিন ভাবি নাই মনে/ সে আমারে ভুলবে
কেমনে…। এমন গানের সুর¯্রষ্টা কবিয়াল বিজয় সরকারের ১১৫তম জন্মদিন আজ।
একুশে পদকপ্রাপ্ত এই গুণীশিল্পী ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইলের নিভৃতপল্লী
ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে
পরলোকগমন করেন বিজয় সরকার। কেউটিয়ায় তাকে সমাহিত করা হয়। শিল্পকলায়
বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন।
বিজয় সরকারের বাবার নাম নবকৃষ্ণ অধিকারী ও মা হিমালয়া দেবী। তার প্রথম স্ত্রী
বীণাপাণি দেবীর মৃত্যুর পর প্রমদা দেবীকে বিয়ে করেন তিনি। পরবর্তীতে
প্রমদারও মৃত্যু হয়। ছেলে কাজল ও বাদল অধিকারী এবং মেয়ে বুলবুলি ভারতে
বসবাস করেন। প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ
গায়কী ঢঙের জন্য ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন। ১৮০০ বেশি গান লিখেছেন এবং
সুর ও সঙ্গীত করেছেন। ‘পাগল বিজয়’ হিসেবে সমধিক পরিচিত তিনি।
বিজয় সরকার নবমশ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন, মতান্তরে মেট্রিক পর্যন্ত।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি বিজয় সরকার গেয়েছেন-নবী নামের নৌকা গড়/
আল্লাহ নামের পাল খাটাও/ বিসমিল্লাহ বলিয়া মোমিন/ কূলের তরী খুলে দাও…।
কিংবা আল্লাহ রসূল বল মোমিন/ আল্লাহ রসূল বল/ এবার দূরে ফেলে মায়ার বোঝা/
সোজা পথে চল…। স্ত্রী বীনাপাণির মৃত্যুর খবরে গানের আসরেই গেয়েছেন-
পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ ওরে একদিন ভাবি নাই মনে/ সে আমারে ভুলবে
কেমনে…। পল্লীকবি জসীমউদ্ধসঢ়;দীন এর ‘নক্সী কাথার মাঠ’ কাব্যগ্রন্থের নায়ক-
নায়িকা ‘রূপাই’ ও ‘সাজু’র প্রেমকাহিনী নিয়ে বিজয় সরকার গেয়েছেন-
নক্সী কাঁথার মাঠেরে/ সাজুর ব্যাথায় আজো রে বাজে রূপাই মিয়ার বাঁশের
বাঁশি…। কী সাপে কামড়াইলো আমারে/ ওরে ও সাপুড়িয়ারে/ আ…জ্বলিয়া
পুড়িয়া মলেম বিষে…। প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে লিখেছেন-তুমি জানো নারে
প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা…।
বিজয় সরকারের জন্মদিন উপলক্ষে কবির জন্মস্থান নড়াইলের ডুমদিতে আগামি ২৪
ও ২৫ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।