শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার চেষ্টা করছে : রাষ্ট্রপতি

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭
  • ১৭৩ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ 

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জনগণের প্রত্যাশা পূরণে জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধীদলসহ সবাইকে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আলোকিত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

রাষ্ট্রপতি আজ রোববার জাতীয় সংসদের ১৪তম ও ২০১৭ সালের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান। সংবাদ সংস্থা বাসস জানিয়েছে, সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলের নেতা রওশন এরশাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় সংসদ দেশের আপামর জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।’ তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি তাঁর ১১৪ পৃষ্ঠার ভাষণে বর্তমান সরকারের কার্যক্রম ও অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ, পররাষ্ট্রনীতি, পর্যটন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নারী ও শিশু খাতে উন্নয়ন, ক্রীড়া, যুব উন্নয়ন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, অভিবাসীদের উন্নয়ন, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং জন প্রশাসন খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।

ভাষণের শুরুতে রাষ্ট্রপতি সব সংসদ সদস্য ও দেশবাসীর প্রতি ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও অমর শহীদকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। যাঁদের অসীম সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে একটি সার্বভৌম দেশ ও স্বাধীন জাতিসত্তা, পবিত্র সংবিধান ও লাল-সবুজ পতাকা অর্জিত হয়েছে। তিনি চার জাতীয় নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। যাঁরা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রপতি ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এবং ভাষা ও সংস্কৃতির মর্যাদা সমুন্নত রাখার লড়াইয়ে আত্মত্যাগকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বাঙালির গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামের তিন মহান পুরুষ- শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। যাঁরা জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সংঘটিত বর্বর হত্যাযজ্ঞ ছিল বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সেদিন শাহাদাতবরণ করেছিলেন তাঁর মহিয়সী সহধর্মিণী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও পারভীন জামাল রোজী, ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি ও মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি এবং সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জামিল উদ্দিন আহমেদ।’ তিনি তাঁদের সবাইকে অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মরণ করেন এবং তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এছাড়াও ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি গ্রেনেড হামলায় শহীদ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ বিভিন্ন সময় গ্রেনেড হামলা ও আন্দোলনে আত্মত্যাগকারীদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান সমুন্নত এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখে ২০১৪ সালে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দশম জাতীয় সংসদ গঠিত হয় এবং বর্তমান সরকারের ওপর দেশ পরিচালনার গুরু দায়িত্ব অর্পিত হয়। গত মহাজোট সরকারের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ‘রূপকল্প-২০২১’, দিনবদলের সনদ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্য-আয়ের, জ্ঞানভিত্তিক, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে নিম্নমধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়ার মানসে এখন জাতির দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে ২০৪১ সালের দিকে। তিনি দৃঢ়ভাবে আস্থা প্রকাশ করেন সরকার উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে জাতির আকাক্সক্ষা পূরণে সক্ষম হবে।’

মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হাটছি, সে পথ ধরেই বাংলাদেশ আরো বহুদূর এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশ হিসাবে আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হবে। ‘রূপকল্প-২০২১’ এবং দিনবদলের সনদের ভিত্তিতে প্রণীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং এ কার্যক্রমে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ফলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি সন্ত্রাস নির্মূলে সরকারের দৃঢ়প্রত্যয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূলে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সরকারের সময়োপযোগী ও কার্যকর আর্থিক এবং মুদ্রানীতি গ্রহণের ফলে দেশ ধারাবাহিকভাবে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্ব-অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চলমান সংকট সত্ত্বেও গত পাঁচ বছরে দেশে গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী ২০১৫-১৬ অর্থ-বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাত দশমিক এক-এক শতাংশ। গত ২০১৫-১৬ অর্থ-বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চৌদ্দ দশমিক নয়-তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ সময়ে মাথাপিছু জাতীয় আয় বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৪৬৫ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। সর্বশেষ গত ৩১ ডিসেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। এ সময়ে মার্কিন ডলারের বিনিময় হারও স্থিতিশীল রয়েছে। সার্বিকভাবে, অনুকূল সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং আর্থ-সামাজিক খাতে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি বাংলাদেশকে মধ্য-আয়ের দেশে উত্তরণের পথে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্যাভাবের ঝুঁকি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিকভাবে পাঁচ মাসের জন্য ১০ লাখ মেট্রিকটনের অধিক খাদ্য-মজুদ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ ব্র্যান্ডিংভুক্ত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশে গ্রামীণ জনপদের অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য গত সেপ্টেম্বর থেকে ৫০ লাখ পরিবারকে প্রতিকেজি ১০ টাকা করে কার্ডের মাধ্যমে মাসিক ৩০ কেজি করে চাল বিক্রির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৩ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সড়ক অবকাঠামো ৬ দশমিক এক-পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন-কাজ এগিয়ে চলেছে। ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ এ সেতু যানবাহন পারাপারের জন্য খুলে দেয়া সম্ভব হবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ – ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’- ব্র্যান্ডিংয়ের কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে সবার বিদ্যুৎসুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত ৮ হাজার ২৩২ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ায় বিদ্যুতের মোট স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ১৫ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং বিদ্যুতের সুবিধাভোগী জনসংখ্যা ৪৭ থেকে ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১৭ সালের মধ্যে ২ হাজার ৮৮ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নির্মাণাধীন ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। ২০২১ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে ২৪ হাজার মেগাওয়াটে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়নে সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র, শেখ হাসিনার মূলমন্ত্র’-এই দর্শনকে সামনে রেখে স্থানীয় সরকারের পাঁচটি স্তর, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনসমূহ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখা হয়েছে এবং দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।’

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সর্বশেষ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী দু’টি সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন। নারীসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করে একটি জাতির ভাগ্যের আমূল পরিবর্তন ঘটানো এবং নারী উন্নয়নের সফল অভিযাত্রায় বিচক্ষণ নেতৃত্বদানের জন্য ‘ইউএন-উমেন’ প্রধানমন্ত্রীকে ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম তাকে ‘এজেন্ট অব চেইঞ্জ’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। দেশ ও জাতির জন্য এ অর্জন এক বিরল সম্মান। প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন এ সম্মাননা অর্জনের মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়েছে। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451