নাটোরের লালপুর উপজেলার ঐতিহয্যবাহি মধু বৃক্ষ খেজুরের রস সংগ্রহও গুর
তৈরীতে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছে এই অঞ্চলের গাছিরা । বাংরাদেশের মধ্যে
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও কম বৃষ্টিপাতের এলাকা হলো লালপুর থানা । শীতের
আগমনে অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি।
গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মধুবৃক্ষ খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের
কাজে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে
দেখা যায় গাছিদের যেন দম ফেলার সময় নেই। শরু হয়েছে রস থেকে গুড় তৈরি
কাজ। এই মধু বৃক্ষকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনে বিরাজ করছে উৎসবমুখর
পরিবেশ । শীতের সকালে আামন ধানের মুড়ি আর খেজুরের সুমিষ্টু রস কে
না পছন্দ করে। লালপুরের ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর রসও নতুন ধারে চালের
খীর পায়েসে পিঠা পুলি সবার পছন্দ ।
গাছিরা মধু বৃক্ষ খেজুর গাছের
মাথার কাছাকাছি জায়গায় থেকে ডাল কেটে মাথা চেঁচে কয়েকদিন
শুকিয়ে নেয়। তার পর ওই জায়গায় এক বিশেষ প্রকরিয়াতে গাছ কেটে রস
বেড় করে আর সেই রস হাড়িতে নেওয়ার জন্য সেখানে গুজ- পাতাড়ি মারে।
এই রস জ্বাল করে তৈরি করা হয় পাটালী,দানাদার ও ঝোলা গুড়। খেজুরের রস ও গুড়
দিয়ে তৈরি করা হয় হরেক রকমের পিঠা পুলি খীর ও পায়েশ।এই নতুন খেজুরের
গুড় দিয়ে পিঠা পুলি খীরও পায়েশ তৈরি কে কেন্দ্র করে গ্রামের বাড়িতে
বাড়িতে আসতে থাকে মেয়ে, জামাই, নাতি-নাতনী আত্মীয় সজন সব
মিলিয়ে সৃষ্টি হয় এক উৎসব মুখর পরিবেশ।আর এ আনান্দ উপভোগ করতে
শহরের বাসিন্দারাও শীতের পিঠা খেতে গ্রামে চলে আসে। উপজেলার বাজার
গুলোতে উঠতে শুরু করেছে খেজুরের পাঠালি গুড়। মধু বৃক্ষ খেজুরের রস, গুড় ও
পাটালী উৎপাদনে লালপুর উপজেলা প্রসিদ্ধ। এ অঞ্চলের খেজুর গুড়ের পাটালী
রাজশাহী, ঢাকা, চাপাই, টাঙ্গাইল, চট্রগ্রাম, খুলনা ,দিনাজপুরসহ দেশের
বিভিন্ন স্থানে সরবারহ হয়ে থাকে।তবে কতিপয় অসাধু মুনাফালোভী গুড়
উৎপাদনকারীর কারণে উপজেলার এ ঐতিহ্য ম্লান হতে চলেছে। উপজেলার কয়েক
হাজার পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল। উপজেলার
ওয়ালিয়া গ্রামের গাছি মুনির ইসলাম,নাজমূল হোসেন,তয়জাল জানায়, এ
বছর গাছিরা আগেভাগেই রস সংগ্রহের কাজ শুরু করেছি। এখন পুরো দমে
রস সংগ্রহ ও রস থেকে পাটালী গুর তৈরী করছি। গ্রাম বাংলার সম্ভাবনাময়
লাভজনক এই খাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় দিনে দিনে এই খাত
বিলুপ্তির পথে তাই সরকারের সঠিক পৃষ্টপষোকতার মাধ্যমে এই খাতের
উন্নয়ন আশা করছি।