মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

রপ্তানির অনুমতি বন্ধ, আবার বাড়ছে চালের দাম

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ২৮৭ বার পড়া হয়েছে

রপ্তানির অনুমোদন দেওয়ার পর চালের দাম এক দফা বেড়েছিল। গত ৩১ জানুয়ারি চালের রপ্তানি মূল্যের ওপরে ১৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার পর দাম আবারও বাড়তে শুরু করে। চলতি সপ্তাহে চালের দাম আবারও আরেক দফা বেড়েছে। কুষ্টিয়া, নওগাঁ ও দিনাজপুরে ধান-চালের দাম পাইকারি বাজারে প্রতি সপ্তাহে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে চাল রপ্তানির ব্যাপারে আপত্তি তোলা হয়েছে। তা আমলে নিয়ে আপাতত কোনো প্রতিষ্ঠানকে চাল রপ্তানির অনুমোদন দিচ্ছে না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

চাল রপ্তানি অনুমোদন না দেওয়ার কারণ হিসেবে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল থেকে মনে করা হচ্ছে, রপ্তানি শুরু হলে চালের দাম অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। এতে দাম হাতের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ারও ঝুঁকি আছে। বিশেষ করে দেশে উৎপাদিত মোটা চালের বড় অংশ ইতিমধ্যে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। আর রপ্তানির অনুমতি নিতে আসা প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত সরু ও সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমোদন চেয়েছে। এমনিতেই বাজারে গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে সরু চালের দাম বাড়ছিল। রপ্তানির অনুমোদন দেওয়ার পর সরু চালের দাম কেজিতে হঠাৎ করে ৩-৪ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়।

জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমানারা খানুম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার যখন চাল রপ্তানির অনুমতি দেয়, তখন ধান-চালের দাম কম ছিল। কৃষককে ন্যায্যমূল্য দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত এক মাসে চালের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে রপ্তানির অনুমতি বলবৎ রাখা আমরা সঠিক মনে করিনি। তাই আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চাল রপ্তানির অনুমতি না দিতে চিঠি দিয়েছি।’

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের হিসাবে, গত এক মাসে শুধু সরু চালের দামই ৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। সরু চালের কেজি ৫০ থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। মোটা চালের দাম ৩০ থেকে ৩২ টাকা ছিল এক মাস আগে। তা বেড়ে এখন ৩৫ টাকা হয়েছে। অন্যান্য চালের দামও কমবেশি বেড়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সরকারি গুদামে বর্তমানে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার টন চাল ও ৩ লাখ ৫১ হাজার টন গম মজুত আছে।

কুষ্টিয়া, নওগাঁ ও দিনাজপুরে ধান-চালের দাম পাইকারি বাজারে প্রতি সপ্তাহে বাড়ছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে চাল রপ্তানির ব্যাপারে আপত্তি তোলা হয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো, মেজর, হাসকিং ও রাইস মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম লায়েক আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চাল রপ্তানির অনুমতি চেয়েছিলাম কৃষক ও দেশের স্বার্থে। এখন সরকার কেন চাল রপ্তানির অনুমতি আটকে দিয়েছে, তা বুঝতে পারছি না।’ এ ব্যাপারে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চালকল মালিকেরা খুব দ্রুত আলোচনায় বসতে চান বলে জানান তিনি।

এদিকে কুষ্টিয়ার মোকামে মিনিকেট চালের দাম আবার বাড়ছে। ইতিমধ্যে গত দুই সপ্তাহে ২ টাকা বেড়েছে। মিলারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে সংগ্রহ করা প্রথম আলোর তথ্যমতে, গত বছরের ১ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত মিনিকেট চাল কেজিতে ৭ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। এরপর প্রশাসনের নজরদারিতে সেই দাম পড়তে শুরু করে, যা ১৮ নভেম্বর বিক্রি হয়েছিল ৪৬ টাকা কেজি। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে ধীরে ধীরে সেই দাম গিয়ে দাঁড়ায় ৪৭ টাকা কেজি। গত রোববার কুষ্টিয়ার খাজানগরের মোকামে মিনিকেট চালের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা দরে। মিলগেটেই ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হওয়ায় খুচরা পর্যায়ে ৫০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

কুষ্টিয়ার খাজানগরের দাদা রাইস মিলের মালিক ও বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি কুষ্টিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, উত্তরাঞ্চলের ধানের দাম গরম। সেখানে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মণপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দাম বেড়েছে। তাই দাম বাড়ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451