নরসিংদীতে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে মতি মিয়া (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছেন প্রবাসী ছেলে। এ সময় স্বামীকে বাঁচাতে এলে ছেলে তাঁর মা জমিলা বেগমকে (৫০) কুপিয়ে হত্যা করে।
আজ সোমবার নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দি ইউনিয়নের তুলশীপুর গ্রামে নিজ বাড়ির কলাবাগানে এই ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত মতি মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে প্রবাসী ছেলে শরিফ মিয়া (২৫) পলাতক।
এলাকাবাসী ও ঘটনা সূত্রে জানা যায়, মতি মিয়া স্থানীয় এক সমবায় সমিতিতে কোষাধ্যক্ষ পদে চাকরি করতেন। সমিতির কর্তাব্যক্তিরা মতি মিয়ার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন। একপর্যায়ে সমিতির লোকজন সন্ত্রাসীদের নিয়ে জোর করে মতি মিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বাড়ি থেকে বের করে বাড়ি দখল নেন।
নিরুপায় হয়ে মতি মিয়া বাড়ির সামনে একটি কলাবাগানে অস্থায়ী ঘর তুলে থাকছিলেন। ছেলে শরীফ এতে খুব মর্মাহত হন। তাঁর প্রবাস জীবনের কষ্টার্জিত উপার্জন দিয়ে তৈরি করা বাড়ি থেকে বাবার ভুলের কারণে বের হতে হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। এ নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে শরীফের বেশ কয়েক দিন ধরে বাদানুবাদ হচ্ছিল।
আজ বিকেলে মা-বাবার সঙ্গে বেশ ঝগড়া হয় শরিফ মিয়ার। ঝগড়ার একপর্যায়ে শরীফ উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে বাবাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন।
এ সময় জমিলা এসে ছেলেকে বাধা দিতে গেলে তাঁকেও দা দিয়ে কোপাতে থাকেন শরীফ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জমিলা বেগমের। মতি মিয়ার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে তাঁদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। মতি মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, কথাকাটাকাটির জের ধরে ছেলে শরীফ মিয়া তাঁর বাবা-মাকে দা দিয়ে কুপিয়েছে। এতে ঘটনাস্থলেই মায়ের মৃত্যু হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
ওসি জানান, ঘটনার পর থেকে ছেলে শরীফ পলাতক। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত করছে।