রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বিএনপি

অনলাইন ডেক্স
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৩
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হওয়ার পর হরতাল-অবরোধ থেকে বের হয়ে আসার কথা ভাবছে বিএনপি। বিকল্প কর্মসূচি হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশ, রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে জমায়েত কিংবা নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবন ঘেরাও নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে দলের বৈঠকগুলোয়।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক ভার্চুয়াল বৈঠকে বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে বলে দলের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। বৈঠকে নেতাদের আলোচনায় একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে মনোনয়নপত্র দাখিলের পর আপাতত চলমান কর্মসূচিতে থাকবে না দলটি।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। তবে জাতীয় পার্টি তফসিল পেছানোর আহ্বান জানিয়েছে। এরপর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা  বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল হলে আন্দোলনের একটি পর্ব শেষ হবে।

এরপর আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিনকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের আরেকটি পর্ব শুরু হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকে ভোটের দিনের মধ্যকার সময়ে বিক্ষোভ, পদযাত্রা ও ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচির মধ্যে থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে। পরিস্থিতি বুঝে ফাঁকে ফাঁকে হরতালও দেওয়া হতে পারে। তবে কোনো কারণে পরিস্থিতি বিএনপির অনুকূলে এলে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিতেই থাকবে দলটি—এমন আলোচনাও আছে।

 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন হরতাল দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত আছে। তবে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ওই দিন ঢাকায় নির্বাচন কমিশন এবং জেলা পর্যায়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ঘেরাওয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন।

স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকগুলোতে নেতারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বাপর পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেন। নেতারা মনে করেন, হরতাল-অবরোধে জনগণের সমর্থন থাকলেও টানা কর্মসূচিতে সবার মধ্যে একঘেয়েমি তৈরি হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যেও শৈথিল্য এসে গেছে।

তা ছাড়া হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দীর্ঘদিন চালানো কঠিন। 

বিএনপি নেতাদের ধারণা, মনোনয়নপত্র দাখিলের পর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এবং অন্য ছোট দলগুলোকে ছেড়ে দেওয়া আসনে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হবে। ওই পরিস্থিতিতে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচির চেয়ে রাজনৈতিক মেরুকরণে পর্যবেক্ষণ রেখে পরবর্তী কৌশল ঠিক করাটাই যুক্তিযুক্ত হবে।

বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশের প্রস্তাব দিয়েছেন কয়েকজন নেতা। কেনো কোনো নেতা পুলিশের অনুমতি ছাড়াই নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের পক্ষে মত দেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান  বলেন, আগামী সপ্তাহজুড়ে অবরোধ চলবে। এরপর জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন ধরনের কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে। এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকরা আলোচনা করছেন।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের দিন বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পরের দিন হরতাল এবং এর পর থেকে ধারাবাহিক অবরোধের কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি। তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামী এবং সমমনা দলগুলোও একই কর্মসূচি দিচ্ছে আলাদাভাবে।

এর মধ্যে ছয় দফায় ১৫ দিন অবরোধ এবং দুই দফায় তিন দিন হরতাল করেছে দলগুলো। সপ্তাহের দুই ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার ছাড়াও তিনটি মঙ্গলবার কর্মসূচিতে বিরতি দেওয়া হয়।

আরো ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে সপ্তম দফায় আরো ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ ডেকেছে বিএনপি।

শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দুই দিন বিরতি দিয়ে রবিবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধ করবে দলটি।

ষষ্ঠ দফায় ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। নেতাদের নিয়ে অস্বস্তি নেই বিএনপির

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের ভোটে অংশ নিতে নানা প্রলোভন দেখালেও তাতে সফল হয়নি সরকার। তাই বিএনপির সাবেক নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো নেতা নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি।

বিএনপি নেতাদের ধারণা, সরকার ছোট ছোট দলকে নির্বাচনে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত কয়েকটি দল ছাড়া বেশির ভাগ দল নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে সাড়া দেয়নি। তাই মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বাড়ানো হতে পারে, যাতে আরো কয়েকটি দলকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ভোটে যুক্ত করতে পারে সরকার।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু  বলেন, তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর থেকে দেশে নির্বাচনের যে আমেজ থাকার কথা তা নেই। এতে স্পষ্ট যে এই নির্বাচন নিয়ে কারো আগ্রহ নেই। তার পরও জোরজবরদস্তি এবং নানা প্রলোভন দেখিয়ে নির্বাচনের মাঠে ছোট ছোট দলকে টানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাতেও সরকার সফল হয়নি।

তিনি আরো বলেন, রাজনীতির মাঠে কিছু বেঈমান সব সময় থাকে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় যাঁরা বেঈমানি করেছেন, তাঁরা সফল হতে পারেননি। নিকট অতীতের এই শিক্ষা সবার মাথায় রাখা উচিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451