বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ওসির বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনরত নারীকে মারধর

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩
  • ৫৪ বার পড়া হয়েছে
হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ভুক্তভোগী নারী। ছবি : সংগৃহীত

 

 

পুলিশ পরিদর্শকের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসা এক নারী উদ্যোক্তাকে (৩০) মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের বানিয়াবহু গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। অনশন করা ওই নারী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার বাসিন্দা। তিনি একটি ডেইরি ফার্ম পরিচালনা করেন।

পরে খবর পেয়ে তাড়াশ থানা পুলিশ রাত ১০টার দিকে ওই নারীকে পুলিশ কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আর অভিযুক্ত মো. সেলিম রেজা (৪৮) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) এবং তাড়াশ উপজেলার বানিয়াবহু গ্রামের মৃত মান্নান চৌধুরীর ছেলে। বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত আছেন।

অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক সেলিম রেজা চৌধুরীর বড় ভাই আব্দুল হাই চৌধুরী ওই নারীকে মারধর বা হেনস্তা করার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাই (সেলিম রেজা) এ বাড়িতে থাকেন না। আর মেয়েটা এর আগেও একাধিক বিয়ে করার পাশাপাশি অনেককেই ফাঁসিয়েছে। এখন আবার আমার ভাইয়ের জীবন তছনছ করছে। ওর অভিযোগের কারণেই আমার ভাই ওসি পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।

তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) শহিদুল ইসলাম নারী উদ্যোক্তাকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই নারী মুঠোফোনে পুলিশকে মারধরের অভিযোগ করায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আর তিনি লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অবশ্য সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক সেলিম রেজা চৌধুরীর গ্রামে থাকা স্বজনরাও ওই নারীকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, মেয়েটি অসুস্থার ভান করে নাটক করছে।

অনশনে আসা নারী উদ্যোক্তা দাবি করেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি সেলিম রেজার) সঙ্গে ২০২০ সালের শেষ দিকে কর্মরত থাকাকালে আমার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে মামলা সংক্রান্ত কাজে যাওয়া-আসা সূত্রে ওনার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যা পরে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায় এবং তার স্ত্রীকে তিনি ডিভোর্স দিয়েছেন জানিয়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে জেলা শহরের নাখেরাজপাড়ায় ওনার ভাড়া করা বাসায় নিয়ে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্কে জড়ান। এ ছাড়া পরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিশেষ শাখায় ও ভোলাহাট থানায় কর্মরত থাকাকালে হোটেলে গিয়েও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। পরে আমি জানতে পারি, তিনি তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দেননি। পরে গত ২২ ফেব্রুয়ারি আমি বিয়ের দাবিতে ভোলাহাট থানায় যাই। এ সময় তিনি ও তার সহকর্মীরা মিলে আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। পাশাপাশি ৫৪ ধারায় পুলিশের কাজে বাধাদানের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান। পরে সাত দিন কারাগারে থাকার পর ফিরে এসে জব্দ হওয়া মোবাইল থানা থেকে ফেরত নিয়ে আসি। আর থানা থেকে মোবাইল এনে দেখি, ওসি আমাদের কথোপকথনের অডিও ও ভিডিও সবকিছু মুছে দিয়েছে এবং আমাদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করছেন। তখন বাধ্য হয়ে বুধবার সকাল থেকে ওনার গ্রামের বাড়িতে অনশন শুরু করি। পরে রাতে ওসির ইন্ধনে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য তার স্বজনরা আমাকে ব্যাপক মারধর করেন।

আর সেলিম রেজার স্ত্রী ইয়াসমিন পপি বলেন, মেয়েটা আমার স্বামীকে ফাঁসানোর জন্য এগুলো করছে। আর ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও বরখাস্ত হওয়া পুলিশ পরিদর্শকের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার তাড়াশ থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাতে মুঠোফোনে ওই নারীর পুলিশ কর্মকর্তার স্বজনদের মারধরের অভিযোগ করলে ওনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর চিকিৎসা শেষে তিনি অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

 

কাল/বে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451