সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
রিয়াদ-হৃদয়ের ব্যাটে চড়ে সহজ জয় টাইগারদের প্রবাস ফেরত স্ত্রীকে হত্যার পর রক্তাক্ত দা নিয়ে থানায় স্বামী পুড়ছে সুন্দরবন : সর্বশেষ যা জানাল ফায়ার সার্ভিস কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাইয়ের মনোনয়ন বাতিল আল জাজিরার ব্যুরো অফিসে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযান ১৫০ উপজেলায় ৩ দিন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, ১০ জেলায় সতর্কতা জারি গুগলকে তিন হাজার কনটেন্ট সরাতে অনুরোধ বাংলাদেশের মুফতি মাহাদী হাসান সাভার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিরব ভোট বিপ্লবে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদী রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাকিবুল হাসান মাসুদ

যমুনা নদী প্রকল্প চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩
  • ৪৮ বার পড়া হয়েছে
পুরোনো ছবি

 

যমুনা নদী ছোট করার জন্য নেওয়া প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার দাবিতে করা রিট আবেদন খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।

যমুনা নদী ছোট করা হচ্ছে না বলে হাইকোর্টকে জানানোর পর আজ বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।

এর আগে গত ১২ মার্চ দৈনিক কালবেলায় ‘যমুনাকে ছোট করতে চায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যমুনা নদী প্রতি বছর বড় হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার সময় নদীটি ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার হয়ে যায়। এত বড় নদীর প্রয়োজন নেই। তাই এটির প্রশস্ততা সাড়ে ৬ কিলোমিটার সংকুচিত করা হবে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনাকে ছোট করার এমন আইডিয়া এসেছে খোদ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্তাদের মাথা থেকে। এজন্য তারা ১১শ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও প্রণয়ন করেছেন। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে যখন বারবার ব্যয় সংকোচনের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে, সে সময় মন্ত্রণালয়টি এমন প্রকল্প নিয়েছে কোনো ধরনের গবেষণা ছাড়াই। বিশেষজ্ঞরা বিরল এ প্রকল্পকে অবাস্তব বলছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নদী ছোট করতে যে ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বাংলাদেশ তো বটেই—পৃথিবীর কোনো দেশেই আগে প্রয়োগের নজির নেই। এ কারণে প্রকল্পটি নিয়ে খোদ সরকারের ভেতরেই প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টদের একটি পক্ষ বলছে, কোনো ধরনের জরিপ ছাড়া ঋণের টাকায় এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের কোনো যৌক্তিকতা নেই। প্রকল্পের বিরোধীতা করে নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের প্রকল্প নেওয়া ঠিক হবে না, এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের আশঙ্কা রয়েছে। বাড়তে পারে বন্যা প্লাবনের ঝুঁকি। পাশাপাশি এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে দেশের অন্যতম স্থাপনা পদ্মা সেতু এবং যমুনা সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সম্প্রতি যমুনা নদীর প্রশস্ততা কমাতে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের ওপর পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) একেএম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে কমিশনের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধি এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা পিইসি সভায় উপস্থিত ছিলেন। সেই সভায় এ ধরনের আশঙ্কার কথা তুলে ধরা হয়। সভায় এই প্রকল্পে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় প্রস্তাব করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।

পিইসি সভা সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর তীর রক্ষা এবং ঝুঁকি প্রশমনে টেকসই অবকাঠামো শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ভাঙন রোধে গাইবান্ধার ফুলছড়ি এবং টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলায় যমুনা নদীতে টপ ব্লকড পারমিয়েবল গ্রোয়েন (টিবিপিজি) অর্থাৎ বাঁধ নির্মাণ করে প্রশস্ততা সাড়ে ৬ কিলোমিটার সংকুচিত করা হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৮৯৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আর বাংলাদেশ সরকার দেবে ২১৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি বছর থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত।

পরে গত ২৮ মে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনা নদীকে ছোট করার প্রজেক্ট ফাইল তলব করেন হাইকোর্ট। ১০ দিনের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে এ সংক্রান্ত সব নথি আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

এ আদেশের পর রবিবার (১১ জুন) পানি উন্নয়ন বোর্ডের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অরবিন্দ কুমার রায় আদালতে নথি দাখিল করেন। নথিতে বলা হয়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের অন্যতম উৎস যমুনা নদীকে ছোট করার পরিকল্পনা নেই।

হাইকোর্টে দাখিল করা ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল(ডিপিপি) ফর যমুনা রিভার সাসটেইনবল ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট-১ এ বলা হয়েছে প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় যমুনা নদী সংকোচনের কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রকল্পের আওতায় নদী মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের সংস্থান রাখা হয়েছে। মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশের আলোকে নদী ব্যবস্থাপনার জন্য ভবিষ্যৎ কৌশল কর্মপরিকল্পনা ও অবকাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান(এএইচওয়াইডিটেক জিওমরফিক লিমিটেড অ্যান্ড সিইজিআইএস) কর্তৃক দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রস্তাবিত প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত অবকাঠামো বাস্তবায়নের ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানি কৃষি, মৎস্য সম্পদ এবং জীববৈচিত্র ও বাস্তুসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে না। তদপুরি ভবিষ্যতে যমুনা নদীর ডাউনস্ট্রীমের পরিবেশ এবং যমুনা সেতু ও পদ্মা সেতুসহ অন্যান্য স্থাপনার ওপর ও বিরূপ প্রভাব পড়বে না। উপরন্তু, প্রস্তাবিত প্রকল্পে পরবর্তী পর্যায়ের জন্য বিস্তারিত সমীক্ষাসহ পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব নিরুপণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উক্ত সময়ে আরও বিস্তারিতভাবে এসকল প্রভাব নিরুপণ করা হবে।

সেই সঙ্গে আদালতের শুনানিতে এই প্রজেক্ট এখনও পাস হয়নি বলেও জানান তিনি।

এ সময় রিটের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, যমুনা নদী ছোট করা হবে না, এটা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নিশ্চিত করতে হবে এবং আদালতের আদেশেও বিষয়টি উল্লেখ থাকতে হবে। শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451