শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নেতৃত্ব হাতবদলের পর আরো পেছনে মুস্তাফিজ

অনলাইন ডেক্স
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

একজনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেকের সময় আরেকজনের নামই জানতেন না তখনকার প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তাসকিন আহমেদ ৫ উইকেট নেওয়া পারফরম্যান্সে শুরু করার পরও বহুদিন বাংলাদেশের ক্রিকেট দৃশ্যপটেই আসতে পারেননি মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথমজনের ১১ মাস পর টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মঞ্চে ওঠেন পরেরজন। নজরও কাড়েন।

 

তবে এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন আরো দুই মাস পর। ভারতের বিপক্ষে হৈচৈ ফেলে দেওয়া পারফরম্যান্সে নিজের রাজ্যাভিষেকের জানান দেন এই বাঁহাতি পেসার। কিন্তু সেই রাজ্য তিনি ধরে রাখতে পারেননি। একই কথা প্রযোজ্য তাসকিনের ক্ষেত্রেও। মুস্তাফিজের আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে শুরু করে তাঁর আরো আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি পেছাতে থাকলেন। ব্যাটারের জন্য প্রাণঘাতী কাটারে মুস্তাফিজ থাকলেন এগোতে। এগোতে এগোতে বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বের ব্যাটনও উঠে গেল তাঁর হাতে। তত দিনে তাসকিনও আরো হারাতে থাকলেন। হারাতে হারাতে ফেরার পথও খুঁজলেন একসময়। কঠোর পরিশ্রমে পেয়ে গেলেন সেই পথের দেখাও। কিন্তু তিনি পথের দেখা পেতে পেতে মুস্তাফিজও পথ হারালেন। তাতে পেস বোলারদের নেতৃত্বের হাতবদলও হয়ে গেল আরেকবার। আগে আসা তাসকিনের হাতেই এখন শোভা পাচ্ছে সেই ব্যাটন। মুস্তাফিজের অনেক পরে আসা তরুণ হাসান মাহমুদও অভিজ্ঞ পেসারকে পেছনে ফেলে নিজে ছুটছেন সামনে।

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জয়ের নায়ক তাসকিনকে যোগ্য সংগত দিলেন হাসানও। একই দিনে স্মরণকালের মধ্যে মিতব্যয়ী বোলিং করলেন মুস্তাফিজও। কিন্তু দিনের শেষে আলোচনার কোথাও তাঁর ঠাঁই হলো না একটুও। না বাইরে তাঁর নাম শোনা গেল, না দলের কেউ নিজে থেকে মুস্তাফিজকে নিয়ে কিছু বলতে চাইলেন। হয়তো এ জন্যই যে তিনি কোনো উইকেটই পাননি। অথচ তাসকিনরা দলের চাহিদাপত্র অনুযায়ী উইকেটের জন্যই ঝাঁপিয়েছিলেন, ‘এই ম্যাচে আমরা বোলিং করেছি উইকেটের জন্যই। ’ উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে ২০ রান দেওয়া মুস্তাফিজের ইকোনমি তাঁর গত বেশ কিছুদিনের পারফরম্যান্সের তুলনায় উল্লেখযোগ্যই।

যদিও এই বোলিংও তাঁর পরিসংখ্যানে বদল আনতে পারেনি তেমন। ডাচদের বিপক্ষে নিজের শেষ ওভারে ৮ রান খরচ না করলে ইকোনমি আরো ভালো হতে পারত। তবে মাত্র ২০ রান দেওয়ার পরও সর্বশেষ ১০ ম্যাচে তাঁর ওভারপিছু রান খরচ ৮.৮৩। গড় খুবই বাজে, ৪৬.৭১। এই সময়ের মধ্যে পাঁচ ম্যাচেই ছিলেন উইকেটশূন্য। উইকেট পেয়েছেন ৭টি। এই ১০ ম্যাচের তিনটি আবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। একটি করে ম্যাচ খেলেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত, আফগানিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। পারফরম্যান্সে ক্রমাবনতির জেরে একাদশে তাঁর জায়গাও এখন আর প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। নিউজিল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজেই এক ম্যাচ খেলে পরের তিনটিতে আর জায়গাই পাননি। পেছাতে পেছাতে মুস্তাফিজ যখন আরো পেছনে, তখন বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণের নেতা তাসকিনের পরের জায়গাটি নিয়ে ফেলেছেন হাসানও।

নেতার আশাহত হলে চলে না। ডাচদের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সের পর তাসকিনকে তাই মুস্তাফিজের প্রবলভাবে ফিরে আসার সম্ভাবনার কথাও বলতে শোনা গেছে, ‘একজন ক্রিকেটারের খারাপ সময় যেতেই পারে। আমি যা দেখছি, মুস্তাফিজ ভালো বোলিংই করছে। সে কঠোর পরিশ্রমও করছে। প্রক্রিয়াটা খুব ভালোভাবেই মেনে চলছে। দ্রুতই দেখবেন যে সে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সে আমাদের অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেও। চ্যাম্পিয়ন বোলার সে। দুয়েকটি ম্যাচ ভালো যায়নি। তবে সামনে সে ভালো করবে। যে জিনিসটা তার হাতে আছে, সেটি প্রক্রিয়া। সেটি সে ভালোভাবেই মানছে। ’

ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া কুড়ি-বিশের গত বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর থেকেই অবশ্য তিনি প্রক্রিয়া মেনে চলছেন বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো পেস বোলিং আক্রমণে নেতৃত্বের হাতবদলের পরও মুস্তাফিজ আরো পেছনেই!

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451