রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

দন্ত চিকিৎসক হত্যায় জড়িত তিনজন

অনলাইন ডেক্স
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় নির্মাণাধীন মেট্রো রেল স্টেশন এলাকায় দন্ত চিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুলকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে তিনজন মিলে তাঁকে হত্যা করেছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। ঘটনাটিকে ছিনতাই সন্দেহ করেই হত্যাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্র জানায়, দন্ত চিকিৎসক বুলবুল হত্যারহস্য উদ্ঘাটনে মিরপুর থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ছায়াতদন্ত করছে।

 

তারা বুলবুলকে বহনকারী রিকশাচালক, উদ্ধারকারী বাসচালক ও বুলবুলের ঠিকাদারি কাজের রংমিস্ত্রিসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা ও আলামত থেকে বুলবুলের ওপর হামলায় তিনজনের অংশ নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। রোকেয়া সরণির যেখানে বুলবুলকে হত্যা করা হয়, সেই স্থান ছিনতাইপ্রবণ এলাকা। সেখানে সক্রিয় ছিনতাইকারীচক্রকে শনাক্তের চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি ঠিকাদারি কাজসহ কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ আছে কি না, সেটিও যাচাই করছেন তাঁরা।

ঢাকায় তদন্তকারী সূত্র জানায়, গত রবিবার বাসা থেকে বের হওয়ার আগে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রংমিস্ত্রি সোহরাব হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন বুলবুল। সোহরাব তাঁকে ফোন করে কোন এলাকায় আসবেন, তা জানতে চান। বুলবুল ফার্মগেট এলাকায় সোহরাবকে আসতে বলেন। সেখান থেকে তাঁদের একসঙ্গে সায়েদাবাদ থেকে বাসে করে নোয়াখালী যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে বুলবুলের রঙের ঠিকাদারি কাজ চলছে। সোহরাব পুলিশকে বলেন, মহাখালীর বাসা থেকে বের হয়ে বিজয় সরণি এসে তিনি বুলবুলকে কয়েকবার ফোন করেন। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পরে একজন পুলিশ সদস্য ফোন ধরে বলেন, বুলবুল খুন হয়েছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনাস্থলে রিকশায় রক্তাক্ত অবস্থায় চিৎকার করছিলেন ডা. বুলবুল। ওই সময় রাস্তার উল্টো দিকে বাস নিয়ে এসে দাঁড়ান বিহঙ্গ পরিবহনের চালক আসিফ হাওলাদার। তিনি বাস রেখে এগিয়ে যান। তিনিই বুলবুলকে পাশের আল-হেলাল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে জরুরি বিভাগের কর্মীদের পরামর্শে ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশ আনেন। ততক্ষণে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ডা. বুলবুল। সেখানে বুলবুলের চিকিৎসা হয়নি। পরে পুলিশের সহায়তায় তাঁকে দ্রুত শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেন আসিফ। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আসিফ পুলিশকে বলেন, তিনি দুই যুবককে রাস্তার পূর্ব দিকে এবং একজনকে রাস্তার পশ্চিম দিকে পালিয়ে যেতে দেখেন। রিকশাচালক ও আসিফের ভাষ্য মতে, ওই তিনজনই হামলাকারী। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, ছিনতাইয়ে বাধা ও চিৎকার করায় ছুরিকাঘাত করে একটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

পুলিশ সূত্র জানায়, সিসিটিভি ফুটেজে দুজনের অস্পষ্ট ছবি পাওয়া গেছে। প্রযুক্তির পাশাপাশি এলাকায় তদন্ত করে তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া বুলবুলের যোগাযোগ ও ব্যক্তিগত তথ্যও যাচাই করা হচ্ছে। তবে গতকাল পর্যন্ত কোনো বিরোধের তথ্য মেলেনি।

পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা উত্তর) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরাও ছায়াতদন্ত করছি। এখনো তেমন অগ্রগতি নেই। ’

ডিবি পুলিশের মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত চলছে। অগ্রগতি হলে জানানো হবে। ’

বাড়িতে মাতম

আমাদের পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি বলেন, গতকাল দুপুরে রংপুরের ভগিবালাপাড়ার বাড়িতে সহপাঠীরা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বুলবুল একজন সামাজিক ও মানবিক মানুষ ছিলেন। তাঁর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরো কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না, সেটা গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা উচিত।

গতকাল সকালে বুলবুলের লাশবাহী অ্যাম্বুল্যান্স গ্রামের বাড়ি পৌঁছলে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। সেখানে বাদ জোহর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের কবরের পাশে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছেলে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান বুলবুলের মা বুলবুলি বেগম। একই সঙ্গে তিনি বুলবুলের ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার দায়িত্ব সরকারকে নেওয়ার অনুরোধ জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451