সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ১০:০২ অপরাহ্ন

জেএমআই হসপিটাল চেয়ারম্যানের জামিন বাতিলে রুল

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০
  • ২১০ বার পড়া হয়েছে

নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাককে বিচারিক আদালতের দেওয়া জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ১৩ ডিসেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা রিভিশন আবেদনের শুনানি শেষে আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রুল জারির আদেশ দেন।

আদালতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি। আবদুর রাজ্জাকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম কে রহমান ও আবদুর রাজ্জাক।

গত ১৫ অক্টোবর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিট্টন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ আবদুর রাজ্জাককে জামিন দিয়েছিলেন। এ জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদক হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করলে হাইকোর্ট এই আদেশ দেন।

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে ২০ হাজার নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক আসল দেখিয়ে ১০টি হাসপাতালে সরবরাহ করার অভিযোগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর আবদুর রাজ্জাক, সিএমএসডির সাবেক উপপরিচালক ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জাকির হোসেন খানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ সংস্থাটির উপপরিচালক মো. নূরুল হুদা বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের উপপরিচালক ডা. জাকির হোসেন খান ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন সহকারী পরিচালক (স্টোরেজ অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন) ডা. শাহজাহান সরকার, চিফ কো-অর্ডিনেটর ও ডেস্ক অফিসার জিয়াউল হক, ডেস্ক অফিসার (বর্তমানে মেডিকেল অফিসার, জামালপুর) সাব্বির আহমেদ, স্টোর অফিসার (পিআরএল ভোগরত) কবির আহমেদ ও সিনিয়র স্টোরকিপার ইউসুফ ফকির।

মামলার পর পরই রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে দুদক পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে একটি টিম জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করে। গত ৮ অক্টোবর পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

করোনা মহামারির শুরুর দিকে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের মাধ্যমে ‘এন-৯৫’ ব্র্যান্ডের মোড়কে সাধারণ ও নিম্ন মানের মাস্ক সরবরাহ করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে মেসার্স জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের বিরুদ্ধে। কেলেঙ্কারির এই ঘটনায় তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। পরে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটিও গঠন করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

দুটি চালানের মাধ্যমে জেএমআই সিএমএসডিতে ২০ হাজার ৬০০ পিস মাস্ক সরবরাহ করেছিল। চালানে মাস্কগুলোকে এন-৯৫ ফেস মাস্ক (অ্যাডাল্ট) হিসেবে উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিদর্শনে উঠে আসে, যে মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে বাস্তবে তা এন-৯৫ মাস্ক নয়। কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের ভাণ্ডার ও রক্ষণের তখনকার পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ নিয়ে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

সেই চিঠির জবাবে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, মাস্ক তৈরি ‘ডেভেলপমেন্ট পর্যায়ে’ আছে উল্লেখ করে ভুলক্রমে সেগুলো সরবরাহ করা হয়েছে। চিঠিতে এমডি আবদুর রাজ্জাক দেশের ‘পরিস্থিতি ও ব্যাখ্যা’ বিবেচনা করে সরবরাহকৃত মাস্ক ফেরত নিয়ে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুলের’ দায় মুক্তি চান। তবে চিকিৎসকেরা তখন জানিয়েছিলেন, এসব নিম্নমানের মাস্ক ও পিপিইর কারণেই অনেক চিকিৎসক করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। পরবর্তীতে আবদুর রাজ্জাককে জিজ্ঞাসাবাদও করে দুদক।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451