শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে দ্রুত যাচাই শুরু করতে চাই : সু চি

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ২৩০ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে তাঁর সরকার দ্রুত যাচাই-বাছাই শুরু করতে চাই। বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের ওপরও নির্ভর করছে বলে জানান তিনি।

আজ শুক্রবার জাপানের রাজধানী টোকিওভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ান রিভিউকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সু চি এসব কথা বলেন।

সু চি আরো বলেন, রাখাইন সংকট তাঁর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাঁর সরকার অর্থনৈতিক সংস্কারে কাজ করছে, বিশেষ করে কৃষি ও অবকাঠামো উন্নয়নে। দারিদ্র্য দূরীকরণে এ ধরনের সংস্কার জরুরি। তিনি বলেন, দারিদ্র্যের কারণে মৌলবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গত ২৫ আগস্ট পুলিশ ও সেনাবাহিনীর স্থাপনায় হামলা চালায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা। এতে ১২ জন নিরাপত্তারক্ষী ও আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) ৮০ সদস্য নিহত হন। এরপর সেনা অভিযানে তিন শতাধিক আরসা সদস্য নিহত হন। তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, এ সংখ্যা সহস্রাধিক।

এরপর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সু চির সরকারের সমালোচনা করে। জাতিসংঘ সু চির বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনের অভিযোগ করে এবং সেনা অভিযান বন্ধের আহ্বান জানায়। তবে সমালোচকরা বলছে, তিনি সেনা অভিযান বন্ধের ব্যাপারে ইচ্ছুক নন।

এ ব্যাপারে শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি বলেন, ‘আসলে কিছুই আশ্চর্যের বিষয় না। কারণ মতামত বদলায় এবং বিশ্বের মতামত অন্য সব মতামতের মতোই। যেসব দেশ এ ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়নি, তাদের তুলনায় যারা এ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে তারা বুঝতে পারবে।’

১৯ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সু চি বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর সেনা অভিযান বন্ধ করা হয়েছে। এরপরও কেন রোহিঙ্গা দেশ ছাড়ছে জানতে চাইলে সু চি বলেন, রাখাইন থেকে লোকজনের চলে যাওয়া এবং গ্রামগুলোতে আগুনের ব্যাপারে তার সরকার সত্যিই জানতে চায় আসলে এর পেছনে কী আছে।

সু চি বলেন, ‘আমরা জানতে চাই কারণ বৃহৎ সংখ্যক মানুষ কয়েক সপ্তাহে দেশ ছেড়ে চলে গেছে। ৫ সেপ্টেম্বর সামরিক অভিযান শেষ হওয়ার পর থেকে সব কিছু শান্ত হয়ে গেছে। সে কারণে আমি আশ্চর্য হচ্ছি কেন মানুষ চলে যাচ্ছে। হয়তো তারা প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার ভয়ে চলে গেছে অথবা অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। আমি আসলেই এ বিষয়ে আগ্রহী কারণ আমরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই।’

মিয়ানমারের নেত্রী বলেন, ‘আপনি আইন অনুসারে কাজ করতে গেলে আপনার যথাযথ, গ্রহণযোগ্য প্রমাণ লাগবে, কেবল শোনা কথায় চলবে না। প্রমাণ মনে করলেই তা হবে না। আদালতের কাছে এটা গ্রহণযোগ হতে হবে।’

সংবাদমাধ্যমটিকে বৃহৎ পরিসরে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অং সান সু চি বলেন, শরণার্থীরা আগ্রহ প্রকাশ করলে তাঁর সরকার তাদের ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী।

সু চি আরো বলেন, ‘আমরা দ্রুত শুরু করতে পারি; এর মানে এই নয় যে এটা একেবারেই দ্রুত করতে হবে… আমরা যেকোনো সময় শুরু করতে পারি। কারণ এটা নতুন বিষয় না। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকার যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চালু করে। সুতরাং এটা নতুন নয় এবং বাংলাদেশ সরকার এতে রাজি হয়েছে। আক্ষরিক অর্থেই এটা যেকোনো সময় শুরু হতে পারে। বাংলাদেশের ওপর যতটা, আমাদের ওপর ঠিক ততটাই নির্ভর করছে এটা কখন শুরু হবে। তারা (বাংলাদেশ) রাজি না হলে আমরা তাদের দেশে গিয়ে তো আর যাচাই-বাছাই শুরু করতে পারি না।’

৫০ শতাংশ রাখাইন গ্রাম অক্ষত আছে, এ দাবির ব্যাপারে সু চি বলেন, ‘আমি কেবল রাখাইন গ্রামের কথা বলছি। যদিও ৩০ শতাংশ রাখাইন গ্রাম যেমন ছিল যেমনই আছে। সেখানে কোনো সমস্যা নেই, সবকিছু যথারীতি চলছে। কিন্তু লোকজন তো এই গ্রামগুলোর ওপর দৃষ্টি দেয় না; তারা কেবল দেখে কোথায় সংঘর্ষ হয়েছে।’

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদনের ব্যাপারে সু চি বলেন, ‘এটা দুর্দান্ত ও প্রশংসনীয় প্রতিবেদন। কফি আনান যতটা সম্ভব স্বচ্ছ ও ভারসাম্যপূর্ণ থাকার চেষ্টা করেছেন। প্রতিবেদনের কিছু তথ্য সঠিক নয়। আমরা কমিশনকে বলেছি, প্রতিবেদনের কিছু তথ্য সংশোধন করা প্রয়োজন।’

গত কয়েক সপ্তাহে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে চার থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451