বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:০৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ফুলবাড়ীতে টার্কি বার্ড পালনে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন সজিব মোল্লা

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ মে, ২০১৭
  • ৩০৪ বার পড়া হয়েছে

 

 

প্লাবন গুপ্ত শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে টার্কি বার্ড পালনে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন

বেকার সজিব মোল্লা। গড়ে তুলেছেন ফুলবাড়ী টার্কি ফার্ম নামের নিজস্ব একটি

টার্কি বার্ড খামার। সজিব মোল্লার সাফল্য দেখে অন্যরাও আকৃষ্ট হচ্ছেন টার্কি

বার্ড পালনের মধ্যেমে নিজেদেরকে আর্থিকভাবে সাবলম্বী হতে।

উপজেলার সাত নং শিবনগর ইউনিয়নের রাজারামপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের

বাসিন্দা সজিব মোল্লা। বেকারত্বের অভিশাপে জর্জিত সজিব মোল্লা যখন অভাব আর

অনটনের মধ্যে দিন কাটছিল। ঠিক তখনই ২০১১ সালে তার নিকট এক আত্মীয় দুইটি

টার্কি বার্ড উপহার দেন। সেটিকে লালন-পালন করে বিক্রির মাধ্যমে আশানুরুপ লাভ

পাওয়ায় আকৃষ্ট হয়ে পড়েন টার্কি বার্ড পালনের দিকে। এরপর বিভিন্ন স্থান থেকে

টার্কির বাচ্চা কিনে সেগুলো বড় এবং কোন কোনটির ডিম বিক্রি করে ভাগ্যেও

চাকা ফেরাতে শুরু করেন। বানিজ্যিক ভিত্তিতে টার্কি বার্ড পালনের জন্য ইতোমধ্যে

গড়ে তুলেছেন ফুলবাড়ী টার্কি বার্ড ফার্ম নামের একটি টার্কি বার্ড খামার।

সেই খামারে এখন অন্তত দুই শতাধিক টার্কি বার্ড লালন পালন করছেন তিনি।

মাংসের জন্য টার্কি বার্ডের পাশাপাশি টার্কি বার্ডের ডিমও বিক্রি হচ্ছে

ব্যাপকভাবে। সজিব মোল্লার কারণে এলাকায় টার্কি বার্ড ও টার্কি বার্ডের ডিম

জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে।

সরেজমিনে সজিব মোল্লার টার্কি বার্ড খামারে গিয়ে দেখা যায়, টার্কি

বার্ডগুলোর খাদ্য ও পানি পরিবেশনসহ খামার পরিস্কার পরিচ্ছনতা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার

করছেন এক সময়ের বেকার বর্তমানে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী সজিব মোল্লা। খামারের

টার্কি বার্ডগুলোর সময় মতো খাদ্য ও পানি দেওয়াসহ নিয়োমিত ওষুধ প্রয়োগ করতে

হচ্ছে যাতে কোন প্রকার রোগ-জীবানু যেন টার্কি বার্ডগুলোকে আক্রমন করতে না

পারে। সজিব মোল্লার টার্কি বার্ড পালনে সাফল্য দেখে এলাকার অন্তত ২৫টি পরিবারও

ঝুঁকে পড়েছেন টার্কি বার্ড পালনের দিকে।

ফুলবাড়ী টার্কি বার্ড খামারের মালিক সজিব মোল্লা বলেন, টার্কি বার্ড

ভিনদেশী হলেও দেশের আবহাওয়ার সাথে সহজেই খাপ খাওয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি কম রয়েছে।

এছাড়াও মুরগির পালনের চেয়ে অনেক কম খরচে ঝামেলামুক্তভাবে টার্কি বার্ড পালন

করা যায়। টার্কি বার্ডের মাংস দিয়ে আমিষের চাহিদাও পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে।

কারণ মুরগি পালনে খাদ্য ও ওষুধের যে পরিমাণ প্রয়োজন হয় টার্কি বার্ডে সেগুলো ওই

পরিমাণ প্রয়োজন হয় না। আর্থিকভাবে অনেক সাশ্রয় হচ্ছে। চার মাসের একটি

টার্কি বার্ডের ওজন ছয় থেকে সাত কেজি হয়ে থাকে। তবে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৮

কেজি ওজনের টার্কি বার্ড হয়ে থাকে। খামারের টার্কি বার্ডের ৭০ভাগ খাদ্য আসে

শাক-সবজি ও পুকুরের কচুরিপানা শেওলা থেকে আর অবশিষ্ট ৩০ভাগ খাদ্য আসে গম ও

ভূট্টাসহ অন্যান্য খাবার থেকে। বর্তমানে তার খামারে প্রায় ১৪কেজি ওজনের একটি

টার্কি বার্ড রয়েছে। আড়াই থেকে তিন মাসের বয়সী মা টার্কি বার্ড ডিম

দেওয়া শুরু করে। বছরে এক’শটি ডিম দেয়। সেই ডিম দিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে

বাচ্চা উৎপাদন করা সম্ভব। এই সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পনা নিয়ে

আগামীতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ

দেশের চাইজিচ রেস্টুরেন্টগুলোতে টার্কি বার্ডের মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

টার্কি বার্ড পালন করে নিজের ভাগ্যের চাকা নিজেই ঘুরিয়ে ফেলেছেন। তবে

সরকারিভাবে পৃষ্টপোষকতা পাওয়া গেলে অনেক বড় আকারের বানিজ্যিক ভিত্তিতে

টার্কি বার্ডের খামার গড়ে তোলার পাশাপাশি মাংস ও ডিম উৎপাদন করা সম্ভব।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওয়ালি-উল ইসলাম বলেন, টার্কি বার্ড

পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে টার্কি বার্ড পালনকারি

খামারীদেরকে সাধ্যমত পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451