ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁয় ৫ম শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে
শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফুঁসে উঠেছেন অত্র বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী। এ ঘটনায়
এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
এমন ঘটনাটি ঘটেছে জেলার মহাদেবপুর উপজেলার ৫৬নং কাদিয়াল নাউরাইল সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওয়াহেদ আলীর বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রীর চাচা মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ
করেছেন।
শ্লীলতাহানির স্বীকার ওই ছাত্রী জানায়, প্রায় ক্লাসে আমর গায়ের ওড়না খুলে ফেলতেন ও শরীরের
বিভিন্ন জায়গায় হাত দিতেন (স্পর্শ কাতর স্থানে), এমনকি পায়ে পা দিতেন। এছাড়া ওই ছাত্রী
লজ্জ্বায় আর বেশি কিছু বলতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, ওই শিক্ষক শ্লীলতাহানির স্বীকার ওই ছাত্রীর পরিবারে
রাতে গিয়ে ৫০ হাজার টাকায় এ ঘটনাটি গোপন রাখার চেষ্টা ও এ বিষয়ে মুখ খুললে সমস্যা আছে
বলে হুমকি প্রদান করেন।
ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন
নয়। এর আগেও ওই শিক্ষক বিভিন্ন ছাত্রীদের সাথে এমন আচরণ করে আসছেন। আজকে এই ছাত্রীকে,
আরেক দিন আমার মেয়েকে কিংবা আরেক ছাত্রীকে এমন অশুভ আচরণ যে ঘটাবেন না, তার নিশ্চয়তা
নেই। তাই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমরা উক্ত অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ভাবে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির
দাবি জানাচ্ছি। জানা যায়, ওই ছাত্রীর পিতা-মাতা ঢাকায় কর্মরত থাকেন।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক শিল্পী ময়িত্রী বলেন, এ বিষয়ের অভিযোগ শুনেছি। তা এখনো লিখিত
ভাবে কোন অভিযোগ পাইনি। তবে, অপরাধী যেই হোক না কেন ? আমি শাস্তির পক্ষে। সহকারী
শিক্ষক ওয়াহেদ আলী তার ব্যক্তিগত কাজে ১০ ও ১১ এপ্রিল তারিখ ছুটিতে আছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহমুদুল রহমানের সাথে একাধিকবার
যোগাযোগের চেষ্টা করলেও মোবাইল ফোনটি রিসিপ করেননি।
অভিযুক্ত ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওয়াহেদ আলীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার
ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রাইগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনজুর আলম মঞ্জু বলেন, সহকারী শিক্ষক ওয়াহেদ আলীর বিরুদ্ধে
এক ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে
শ্লীলতাহানির প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমার ইউনিয়ন পরিষদ পক্ষ থেকে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা
গ্রহণ কল্পে ওই ছাত্রীর মুখের জবান বন্দীর ভিডিও ধারণ ও রেকর্ডসহ শ্লীলতাহানির অভিযোগ উপজেলা
শিক্ষা অফিসার নিকট প্রদান করা হয়েছে।
মহাদেবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মামুনুর রশিদ জানান, অভিযোগটি
শুনেছি। তদন্ত করলেই প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে। ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনত ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হইবে।