গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি,
নাটোরের গুরুদাসপুর থানায় ১১ মাসে ১২০টি মাদক মামলা দায়ের হয়েছে।
এসব মামলার মধ্যে ৫৬টির বাদী একজন এএসআই। তাঁর নাম আনোয়ার
হোসেন। থানায় মাদক বিরোধী অভিযানের একজন সুদক্ষ কর্মকর্তা
হিসেবে পরিচিত তিনি।
এসংক্রান্ত মামলায় আটক হয়েছে ১৩০জন। এদের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতে
২০জন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ীসহ সাজা হয়েছে ৬০জনের। উদ্ধার হয়েছে ৩০
কেজি গাঁজাসহ হিরোইন, ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের
মাদকদ্রব্য।
সম্প্রতি মাদক বিরোধী অভিযানের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত
এএসআই আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের
দুধগাড়ী গ্রামের গণবিতর্কিত ব্যক্তি মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মুক্তা (৪৮)
ও বিয়াঘাট ইউনিয়নের কুমারখালি গ্রামের আব্দুল আউয়াল (৫০) এবং তার
ছেলে আনিছুর রহমান (৩৫)কে মাদক মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি
দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবীর অভিযোগ তুলেছেন ওই তিন
বিতর্কিত ব্যক্তি। এনিয়ে একটি বে-সরকাটি টেলিভিশন ও একটি দৈনিকে
সংবাদও প্রচারিত হয়েছে।
এব্যাপারে এএসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রায় ১১ মাস আগে
গুরুদাসপুর থানায় যোগদান করেছেন তিনি। ওসি স্যারের (দিলীপ কুমার দাস)
নির্দেশে উপজেলা এলাকা থেকে মাদক নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছেন। চলমান
এই মাদক বিরোধী অভিযানের কারনে অনেক মাদক ব্যবসায়ী তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত।
অভিযোগকারি ওই তিন ব্যক্তিও এর বাইরে নয়। তাদের মাদক ব্যবসায় বিঘœ
ঘটায় তার (এএসআই আনোয়ার হোসেন) বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট
অভিযোগ আনা হয়েছে। সঠিক তদন্ত করলেই আসল সত্য বের হয়ে আসবে।
গুরুদাসপুর থানা সুত্রে জানাগেছে, পুলিশের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা
দাবীর অভিযোগ এনে বক্তব্য দেওয়া মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মুক্তার বিরুদ্ধে
গুরুদাসপুর থানায় দুইটি মাদক মামলা ও নাটোর সদর থানায় একটি
মোটরসাইকেল ভাংচুরের মামলা রয়েছে। অপর অভিযোগকারী কুমারখালি
গ্রামের আব্দুল আউয়ালের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায দুইটি মাদক মামলা
রয়েছে। এমন কি তার ছেলে আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায়
৩টি মাদক ও নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা রয়েছে। তাদেরকে একাধিকবার
গ্রেফতার করে নাটোর জেলা হাজতেও পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে
নাজিরপুরের মুক্তা মাদক মামলায় প্রায় দুই মাস হাজতবাস করে সম্প্রতি
জামিনে বের হয়ে এসেই পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার দাস
বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগকরা ব্যক্তিরা এলাকার চিহ্নিত পেশাদার মাদক
ব্যবসায়ী। মাদকসহ তারা বারবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। মূলতঃ
মাদক ব্যবসায় বিঘœ ঘটায় পুলিশের ভাবমূর্তিকে জনগনের কাছে
বিতর্কিত করতে মিডিয়ার কাছে পুলিশের একজন এএসআইয়ের বিরুদ্ধে
এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছে তারা। উপজেলার পেশাদার মাদক
ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার ও মাদকমুক্ত গুরুদাসপুর উপজেলা গড়তে এএসআই
আনোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে- এবং এব্যাপারে সফলও
হয়েছেন তিনি।
এব্যাপারে পুলিশের তালিকাভুক্ত পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান
মুক্তা দাবী করেন, তারা কেউ-ই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। পুলিশ তাদের
হয়রানী করতে মাদক মামলার আসামী করেছেন।
এব্যাপারে নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকতরানা লাবু ও
বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জানান,
মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তা, আব্দুল আউয়াল ও তার ছেলে আনিছুর রহমান
এলাকার চিহ্নিত পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। তাদের কারনে এলাকার শতশত যুবক
বিপথগামী হয়েছেন।থানা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে অনেকটা
স্বস্থি পেয়েছে এলাকাবাসী।