ইমরান খান, সাতক্ষীরা : জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাতক্ষীরা আব্দুর রশিদ (৭৫) নামে এক বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাকে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনী মিলে পিটিয়ে আহত করেছে। বর্তমানে তাকে আশংখাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত মুক্তিযোদ্ধা সাতক্ষীরা ছয়ঘরিয়া গ্রামের মৃত মোজাহার হোসেনের ছেলে। তার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং ২০৩০। আহত মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে রউফুনেচ্ছা জানান, রসুলপুর এলাকায় তাদের ১৫ শতক জমির উপর ঘর বাড়ি আছে। উক্ত জমির প্রতি কু-নজর পড়ে কুশখালি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে মুন্না ও আব্দুল মজিদের ছেলে মিলন হোসেনের। তার জমিটি জবর দখল করার জন্য বিভিন্ন সময় তাদের হয়রানি করে। সম্প্রতি মুন্না থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেয়। পুলিশ শনিবার বিকালে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে তরিকুলকে ধরে নিয়ে আসে। সন্ধ্যায় আবার ছেড়ে দেয়। এরপর রাত ১২ টার দিকে সদর থানার এস আই রমজান আলির নেতৃত্বে ১০/১২ জন পুলিশ ও সন্ত্রাসী মুন্না ও মিলনের নেতৃত্বে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা তার বৃদ্ধ পিতা ছেলে স্ত্রী সন্তানদের বেধড়ক মারপিট করে আহত করে এবং ঘরের ভিতর থাকা আসবাবপত্র ভাংচুর করে। মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধু আসমা খাতুন আরও বলেন, রমজান দারোগা যাওয়ার সময় বলে এসেছে তোরা যদি বেশি বাড়াবাড়ি করিস তাহলে তোদের জামায়াতের মামলায় ঢুকিয়ে দেব। বোম মেরে তোদের উড়িয়ে দেব। যত তাড়াতাড়ি পারিস বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যা। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আদালত তাদের পক্ষে রায় ও ডিগ্রি দিয়েছে। রবিবার দুপুর একটায় সময় যখন আহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদকে সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের সামনে নিয়ে আসে। তখন তিনি ভ্যানের উপর অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিল। তার হাত পা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশু জানান, একজন বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে পিটিয়ে জখম করার ঘটনা খুবই দু:খজনক। আমরা এর বিচার চাই। এ ব্যাপারে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আবুবক্কর সিদ্দীক সাংবাদিকদের জানান, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতি পুলিশ ও সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ইতিমধ্যে বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। এস আই রমজানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলম ব্যবস্থা গ্রহন না করা হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। শহরে মুক্তিযোদ্ধার উপর পুলিশি ও সন্ত্রাসী হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের এবং রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দ এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানার এস আই রমজান আলি জানান, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে সেখানে কোন মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্যা জানান, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তাদেরকে ডেকে সব ঠিকঠাক করে দিয়েছি। আর কোন সমস্যা নেই।