বিশেষ প্রতিবেদকঃ
ঢাকা-টাঙ্গাইল- গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে ওয়ানটেন ও চায়না নামক বিদেশি ভয়ংকর জুয়া খেলায় লাখ লাখ
টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
৩০ মার্চ থেকে ঢাকার সাভার আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় রিপন সুপার মার্কেট’র একটি ভাড়া দোকানে ও
মনি’র মার্কেটসহ কয়েকটি স্থানে চায়না জুয়াসহ বিভিন্ন জুয়া খেলা চলছে। অন্যদিকে টাঙ্গাইল জেলার
ঘাটাইল উপজেলার বিভিন্ন স্থানসহ জোড়দিঘির পাগলার মাজারে চলছে ওয়ানটেন নামক এক বিশাল ধরনের ভয়ংকর
জুয়ার আসর। সেই সাথে গাজীপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে জুয়াসহ অসামাজিক কর্মকান্ড অবাধে চলছে।
এসব জুয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চালানো হচ্ছে লটারী নামক জুয়া ও তিন তাস। জুয়া খেলার টাকা জোগাড়
করতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি, খুন সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে
জুয়ারুরা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার বাইপাইল ট্রাফিক মোড়ের আশপাশে তিন
তাস জুয়া চলছে সকাল ৭ টা থেকে ৯টা পর্যন্ত এবং বিকাল ৫ টার থেকে লটারী নামক জুয়া চলে রাত ১০টা
পর্যন্ত। টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল ওয়ানটেন জুয়া চলে রাত ৯ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত। গাজীপুর জেলার বিভিন্ন
স্থানে তিন তাস জুয়া, লটারী নামক জুয়া ও হোটেল ব্যবসা সহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ড অবাধে
চলছে। এর সঙ্গে রয়েছে মাদকের রমরমা কারবার। এসব আসরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সমাজের প্রভাবশালী কিছু লোক।
জুয়ারুদের কাছে জানতে চাইলে, সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তারা বলেন, কত সাংবাদিক ও রিপোর্টার দেখছি,
কিছু টাকা দিলেই চলে যায় তারা, আর কিছুই করতে পারে না। জুয়ারুরা দাবি করেন আমরা পুলিশ
প্রশাসনকে টাকা দিয়েই জুয়া চালাই।
গত ০২-০৪- ২০১৭ ইং রবিবার বিকালে জামগড়া রিপন সুপার মার্কেটে’র সাঁটার লাগানো একটি দোকানের
ভিতরে চায়না জুয়া খেলার সময় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা কর্মীগণ ও সাংবাদিকরা একটি জুয়ার আসর
ভেংগে দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান। জামগড়া যে স্থান থেকে সাবেক ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর
রহমান হাবিব ও আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসিনুল কাদির নেতৃত্বে বিশেষ অভিযানে ৬
জনকে আটক করা হয়েছে, এসময় চায়না জুয়া খেলার ডিজিটাল মেসিনসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা রয়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন একই স্থানে বার বার জুয়া খেলার সাহস পায় কি
ভাবে? “এসব জুয়া ও মাদক ব্যবসায়ীদের খুঁটির জোড় কোথায়” এসবের টাকা জোগাড় করতে চুরি,
ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি, খুন বাড়ছে বলে জানান এলাকাবাসী। জুয়ারু ও মাদক সেবনকারীরা
একের পর এক বিভিন্ন ক্রাইম করছে, এদের হাত থেকে কোনো ভাবেই রিহাই পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। এসব
অপরাধের অনেক নজির রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। পুলিশ, র্যাব’র অভিযানে বিভিন্ন স্থান থেকে এসব
অপরাধীদের অনেককে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অনেকেই আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার সেই অপরাধ
করছে। এ ব্যাপারে পুলিশের কয়েকজন উপর মহলের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, জুয়া ও মাদকের বিষয়ে
কোনো ছাড় নেই। অপরাধী সে যেই হোক না কেন তাকে গ্রেফতার করা হবে। উক্ত ব্যাপারে থানা পুলিশের সঙ্গে
যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, জুয়া খেলার বিষয়ে আমরা জানি না। ওসি স্যারকে বলুন।
মঙ্গলবার ৪ এপ্রিল দুপুর ২টার দিকে উক্ত ব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার এর মোবাইল ফোন নাম্বারে
যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।