স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বেলেঘাট গ্রামের প্রতিবন্ধী স্কুলছাত্র
স্বরজিৎ কুমার ঘোষের হুইল চেয়ারটির বেহালদশা। চেয়ারটি অনেকদিন ব্যবহার
করায় এখন আর ঠিকমত চলছে না।
হাত দিয়ে প্যাডেল করতে তার অনেক কষ্ট হয়। দুই হাত ব্যথা হয়ে যায়। চাকার
অবস্থাও বেশ খারাপ। ঠিকমতো চলেও না। আর গাড়িটা না চললে তার স্কুলে
যাওয়া হবে না। বন্ধ হয়ে যাবে তার লেখাপড়া। স্বরজিৎ উপজেলার বেলেঘাট
গ্রামের গোপাল ঘোষের ছেলে ও রাহাতুল্লাহ সরকার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম
শ্রেণির ছাত্র।
স্বরজিৎ জানায়, বাড়ি থেকে স্কুল যেতে তার দুই কিলোমিটার পথ যেতে হয়।
প্রতিদিন চার কিলোমিটার পথ প্যাডেল করায় মাঝে মাঝে হাতে যন্ত্রণা হয়।
নতুন একটা গাড়ি কিনতে বাবাকে বলেছি। কিন্তু টাকার অভাবে বাবা
কিনে দিতে পারছে না। এই গাড়িটা নষ্ট হয়ে গেলে আমি কীভাবে স্কুলে
যাব ?
সে আরো জানায়, স্কুলের সহপাঠীরা যখন খেলা করে তখন আমার খুব খারাপ
লাগে। কিন্তু আমার যে পা দুটিই খারাপ। আমি তো হাঁটতেও পারি না।
অপরদিকে স্বরজিতের বাবা গোপাল ঘোষ জানান, দুই ছেলের মধ্যে স্বরজিৎ
বড়। জন্মের পর থেকেই ওর দুটি পা বিকল হওয়ায় চলাফেরা করতে পারে না।
লেখাপড়া করার প্রতি তার অনেক ইচ্ছা।
ভালাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলের
শিক্ষকরা তিন হাজার টাকা দিয়েছিল আর আমি কিছু টাকা দিয়ে এই হুইল
চেয়ারটি কিনে দিয়েছিলাম। চেয়ারটির বর্তমান অবস্থা ভালো না।
কৃষিকাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোরকম সংসার চলে। ছেলেকে
গাড়ি কিনে দেওয়ার টাকা আমার নাই। স্বরজিতের মা অর্চনা ঘোষ জানান,
দুই হাতে প্যাডেল করে স্কুলে যেতে ছেলের খুবই কষ্ট হয়। এছাড়া রাস্তার
অবস্থাও বেশি একটা ভালো না। প্রায়ই তার দু’হাতে ব্যথা হয়। এই ব্যথা
নিয়েই সে প্রতিদিন স্কুলে যায়।