আতিকুল ইসলাম দিপু, কলাপাড়া প্রতিনিধি :
মহিপুর থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কিরণ দাসের বিচার শেষ পর্যন্ত জুতাপেটা ও সবার কাছে হাতজোর করে ক্ষমা চাওয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে বিচারটি শেষ করা হয়।
, বৃহস্পতিবার শেষ রাতের দিকে বাজারের পাহারাদার ওয়ারেছ আকনকে লাঞ্ছিত করে মহিপুরের ইউপি সদস্য ও মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দাসের ছেলে কিরন দাস। এর প্রতিবাদে মদ্যপ কিরন দাসের প্রকাশ্য বিচার দাবিতে শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিক্ষোভ করে ব্যবসায়ীরা। পরে বেসামাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে তারা বিচারের অপেক্ষায় থাকেন।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ি মহিপুরের ব্যবসায়ীদের পাশপাশি বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রবিবার বিকেলে দুই সহস্রাধিক মানুষ জড়ো হয়। সেখানে বিচারকের আসনে ছিলেন মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আঃ ছালাম আকন এবং মহিপুর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমানসহ ব্যবসায়ী, রাজনীতিক ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃস্থানীয়রা।
বিচারের রায় ঘোষণায় প্রকাশ্যে ২৫ ঘা বেত্রাঘাত ও উপস্থিত সবার কাছে হাতজোর করে ক্ষমা চাওয়ার কথা বললে সাধারণ মানুষের মধ্যে ঘোষিত রায় প্রত্যাখ্যান করে হট্টগোল দেখা দেয়। ওসি মিজানুর রহমান এসময় জনরোষ থামাতে রায়ে পরিবর্তন এনে অপরাধী কিরন দাসকে দিয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাওয়ান এবং তার বাবা নিমাই চন্দ্র দাসকে দিয়ে জুতাপেটার মধ্য দিয়ে বিচার কাজ সমাপ্ত করেন।
উল্লেখ্য, মহিপুর বন্দরের নাইটগার্ড বয়োবৃদ্ধ ওয়ারেছ আকন ও নুর হোসেনকে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্য রাতে লাঞ্ছিত করে কিরন দাস। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ দফায় দফায় বিক্ষোভ করে বিচারের জন্য সময় বেঁধে দেয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কিরন মদ্যপ অবস্থায় দুই বয়োবৃদ্ধকে চরমভাবে লাঞ্ছিত করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিরন চিহ্নিত মদ্যপায়ী ও সন্ত্রাসী। কিরণ দাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের মহিপুর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মহিপুরকে থানায় উন্নীতের পরে যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটিতে ঢুকে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছেন বলেও সেখান মানুষের অভিযোগ।
পুলিশের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে এবং যথাযথ সমাধানের আশ্বাসে মানুষ ওইদিন বিক্ষোভ মিছিল বন্ধ রাখে বলে মহিপুরের অনেকে এমনটি জানিয়েছেন। মহিপুর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা এ ঘটনার প্রকাশ্য বিচার দাবি করে আল্টিমেটাম দেন।
এদিকে বিচার সম্পন্ন করার কথা স্বীকার করে মহিপুর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের আবেগ ও সংখ্যালঘুর বিষয়টি মাথায় রেখে ইউপি চেয়ারম্যানসহ সতর্ককতার সাথে বিচার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।