ঢাকা : দেশ রক্ষায় জনগণকে টাইগারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আমি আপনাদের সঙ্গে সবসময় আছি, থাকব। রাস্তায় যেতে হলে সেখানেও যাব। এখনও রাস্তায় নামার মতো সাহস ও ক্ষমতা আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করেছি অন্য কোনো দেশের হাতে তুলে দেয়ার জন্য নয়।’
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানীতে সেরিনা হোটেলে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বেগম জিয়া। মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত এতে সভাপতিত্ব করেন।
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সারাদেশের মানুষকে আজকে তারা বিড়াল বানিয়ে রাখতে চায়। আর তিনারা আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য বাঘ, সিংহ সব কিছুই হতে চায়। কিন্তু এই টাইগারগুলো কোথায় গেল, আজকে সবাইকে টাইগারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। লায়নের ভূমিকায় আসতে হবে। তাহলেই দেশেটা রক্ষা করা যাবে।’
ভারতকে ট্রানজিট দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যমুনা সেতুতে ৭০০-৮০০ টাকা দিতে হয়। বাস, ট্রাকের জন্য আলাদা ফি নির্ধারণ করা আছে। অথচ ১৯২ টাকায় যে ট্রানজিট দেয়া হলো সেটা লজ্জার। এটাকে দয়াও বলা যেতে পারে। আজকে বাংলাদেশের নিজস্বতা, মান-সম্মান কিংবা নিজস্ব কোনো স্বকীয়তা-স্বাধীনতা নেই।’
মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আপানারা যুদ্ধ করেছিলেন দেশে গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার, সুশাসন ও সকলের সমান অধিকারের জন্য। কিন্তু আজকে দেশে এর কোনোটাই নেই।’
দেশে আজ এক ব্যক্তির শাসন চলছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘মুসলমান, হিন্দু সবাই এই আওয়ামী লীগ দ্বারা নির্যাতিত। সকলেই আজকে আওয়ামী লীগের হাত থেকে মুক্তি চায়। তারা দেশে শান্তি, উন্নয়ন, গণতন্ত্র, কথা বলার অধিকার, বাকস্বাধীনতা চায়। কিন্তু আজ কোনোটাই নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি কথা বলতে চাই। সাংবিধানের কথা বলব। আমি কোনো ভয় পাই না। তার আগে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা পাকিস্তানের হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করেছি অন্য কোনো দেশের হাতে তুলে দেয়ার জন্য নয়।’
খালেদা জিয়ার সঙ্গে মূলমঞ্চে একই টেবিলে বসে ইফতার করেন-ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ২০ দলীয় জোট শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীরবিক্রম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতিক, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা আতাউর রহমান ঢালী প্রমুখ।