হেলাল শেখঃ
ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসী সিন্ডিট ও বিশাল প্রতারক চক্র বিভিন্ন অপরাধমূলক
কর্মকান্ড করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এসব অপরাধীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, সাভার আশুলিয়ার
সীমান্ত এলাকা জিরানী থেকে শুরু করে শ্রীপুর, জিরাবো, ঘোষবাগ, নসিংহপুর, ভাদাইল, বাঘবাড়ি, রূপায়ন মাঠ,
জামগড়া, ছয়তলা, বেরুণ কাঁঠালতলা, শিমুলতলা, ফকির বাড়ি, বগাবাড়ি, পলাশবাড়ি, নবীনগর, নয়ারহাট, অন্যদিকে
সাভার, আমিন বাজারসহ প্রায় প্রতিটি শিল্প এলাকায় বহিরাগত হাজার হাজার মানুষের মধ্যে কিছু সন্ত্রাসী ও বিশাল
প্রতারক চক্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বলে সুত্র জানায়। এসব চক্রের কাছে অনেক সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে
পড়েছেন।
বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসা বাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভাড়া নিতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ৩
কপি ছবিসহ সকল বৈধ কাগজপত্র জমা দিয়ে সেখানে বসবাস এবং যে কোনো বৈধ কাজ করতে পারবেন। এই সর্ত
মেনে যারা রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছেন তাদের আইনত কোনো বাঁধা নেই বলে পুলিশ সুত্রে জানান। কিন্তু যারা
অপরাধী-তারা সঠিক তথ্য দিলে গ্রেফতার হবে। তাই রাজধানী ঢাকায় বসবাস করতে না পারায়, ঢাকার নিকটবর্তী
এলাকা সাভার আশুলিয়া এসে বসবাস করছে বলে জানান অনেকেই। এই চক্রের সদস্যরা সুন্দরী নারীদেরকে দেশে বিদেশে
চাকুরি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগ রয়েছে। সেই সাথে নারী ও শিশু পাচার কাজে
কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে কৌশলে অপরাধ করছে পুলিশের নজরের বাইরে।
জানা গেছে,এসব চক্রের সদস্যরা যদি কোনো শিল্প কারখানায় চাকুরি হয়, সেখানেও মারপিট, হাঙ্গামা করে বলে অনেক
অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। উল্লেখ্য আশুলিয়া থানার মামলা নং ৪৮, তারিখ, ৩০-০১- ২০১৭ ইং ধারা ১৪৩/ ৪২৭/৩২৩/৩৮৯/৫০৬।
অন্যদিকে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া ধরাইল গ্রামের আকরাম শেখের মেয়ে মোছাঃ মনিকা খাতুন মনিয়া (২৫)
কে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে নেওয়ার সময় রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হন। এ বিষয়ে দালাল
চক্রের হোতা আজিজুর হাওলাদার মজিবুর আশুলিয়া থানায় একটি জি ডি করেন। জি ডি নং ৪৪। তারিখ, ০১/০২/২০১৭
ইং। এ দালাল চক্রের হোতা মজিবুর মাদারীপুরের আতাউর হাওলাদারের ছেলে।
জানা গেছে, এক সময়ে ক্রাইম জোন এলাকা হিসাবে ছিলো, রাজশাহী বিভাগ-রাজশাহী, নওগাঁ, পাবনা, রিাজগঞ্জ,
বগুড়া, জয়পুরহাট, রংপুর বিভাগ-রংপুর জেলা, গাইবান্ধা, অন্যদিকে খুলনা, কুষ্টিয়া, মাদারীপুর বরিশাল ভোলা ও নদীর এ
পাড়ে মুন্সিগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, মিরপুর, উত্তরা- উত্তরা পশ্চিম থানা। একসময় সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় আস্তানা
হিসাবে পরিণত ছিলো এসব জেলার বেশকিছু থানা এলাকা। বর্তমানে জাতীয় পত্রিকাসহ বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়,
সাভার আশুলিয়া “ক্রাইম জোন” এলাকা হিসাবে পরিণত হয়েছে। রাজধানীর নিকটবর্তী শিল্পঞ্চল সাভার আশুলিয়ায় খুন,
ধর্ষণ, চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস আর মাদক ব্যবসা যেন অনেকটাই স্বাভাবিক ঘটনা এ এলাকাবাসীর কাছে। সুত্র মতে শুধু
“আশুলিয়া থানা পুলিশ প্রায় এক বছরে ১২৩টি লাশ উদ্ধার করেছেন”। অনেকেই বলছেন, সাভার ও আশুলিয়া এমন কোনো
অপরাধ নেই যে তা সংঘটিত হয় না। সেজন্যই এ এলাকা ক্রাইম জোন বলে উল্লেখ্য করা হয়েছে। “বিভিন্ন এলাকার
অপরাধীরা এখন সাভার আশুলিয়ায় নিরাপদ মনে করে আস্তানা করে বসেছে। সুত্র জানায়, মরণ নেশা ইয়াবাসহ বিভিন্ন
মাদকের শক্ত জাল বিস্তার করছে এ এলাকায়। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে অবাধে ইয়াবাসহ নানা রকম মাদক ঢুকে তা
ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানী ঢাকা জেলার আশুলিয়া, সাভার। জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ী চক্র ও সিন্ডিকেটের শক্তিশালী
জালের মাধ্যমে অনেকেই সহজেই জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধে।
মঙ্গলবার দুপুরে এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স), কর্মকর্তা আহাদ আলী বলেন, মাদক ব্যসায়ীদের
কোনো ছাড় নেই, আর বহিরাগত সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট ও প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে কারো কোনো অভিযোগ পেলে
পুলিশ আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর মাদকের বিষয়ে যে কোনো তথ্য পেলে আমি নিজেই অভিযানে যাবো। অপরাধী
সে যেই হোক না কেন-তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে তিনি জানান। এর পর পুলিশের উপর মহলের কর্মকর্তা অনেকেই
বলেন, সারা দেশে মাদক বিরেধী অভিযান চলছে, মাদকের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।