এক সময়ে হাটে বাজারে আর গাছের ডালে বসে থাকা জান্নাতি এখন স্কুলে যায়। সে এখন
পড়তে পারে। ইংরেজিতে শরিরের বিভিন্ন অঙ্গের নাম বলতে পারে। লিখতেও পারে
সে। এখন আর কেউ তাকে অহেতুক জ্বালাতন করে না। আবার সেও কাউকে
অকথ্য ভাষায় গালি দেয় না। সে এখন মানুষের সাথে সুন্দর করে কথা বলে। সে
এখন নিয়মিত স্কুলে যায়। মোহরকয়া ছায়া প্রতিবন্ধি স্কুলে ভর্তি হয়ে
তার এই পরিবর্তন।
সম্প্রতি বিলমাড়িয়া লালপুর সড়কের মোহরকয়া নামক স্থানে কথা হয়
জান্নাতির সাথে। সে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। পেছন থেকে জান্নাতি
বলে ডাক দিতেই মিষ্টি কন্ঠে উত্তর এল- কি ভাই? কেমন আছো ? প্রশ্নের
উত্তরে- ভালো আছি ভাই। আপনে ভালো আছেন? অথচ বছর দুই আগেই
তাকে কেউ ডাকলেই প্রতিত্তোরে তার মুখ থেকে অকথ্য, অশ্রাব্য গালিতে
কান ঝালাফালা হয়ে যেত। কোন ভালো মানুষ তার সাথে ভয়ে কথা বলতো না।
বিলমাড়ীয়া বাজার ও মোহরকয়া গ্রামের বিভিন্ন রাস্তায় জান্নাতির দেখা
মিলতো। দুষ্টু ছেলেরা প্রায় সব সময়ই তাকে নানা ভাবে উত্যক্ত করতো।
জান্নাতি জানায়, তার বাবার নাম আব্দুল বারী, বাবার বাড়ি উপজেলার
ইসলামপুর গ্রামে। মহারাজপুর গ্রামে সে তার ফুফুর বাড়িতে থাকে।
এলাকার লোকজন জানায়, জান্নাতির বয়স প্রায় ৩২ বছর। হাটে বাজারে
ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও তাকে অনেক সময় গাছের ডালে বসে থাকতে দেখা
যেত। এমনকি গাছের ডালে বসে অনেক সময় সারা রাতও কাটিয়েছে সে।
এখন তাকে বাজারে আর রাস্তায় খুব একটা দেখা যায় না। তার মানষিক
পরিবর্তনে এলাকার লোকজন অভিভুত।
ছায়া প্রতিবন্ধি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিমানুর রহমান জানান, জান্নাতি
তার বিদ্যালয়ের বুদ্ধি প্রতিবন্ধি শাখার প্রথম শ্রেণির ছাত্রি। ২০১৪ সালে
সে এখানে ভর্তির পর থেকে নিয়মিত ক্লাসে থাকে। স্কুল ছুটি হলে
মহারাজপুর গ্রামে তার ফুফুর বাড়িতে যায়। বর্তমানে তার মধ্যে অনেক
পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সে বেশ শান্ত শিষ্ঠ।