মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

“আওয়ামী উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ”

নুরুল আলম ডাকুয়া, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় শনিবার, ৬ মে, ২০২৩
  • ৯৭ বার পড়া হয়েছে

 

স্বাধীন বাংলাদেশে কখনোই কোন সরকার এতটা উন্নয়ন করতে পারে নি, যতটা উন্নয়ন করেছে আ’লীগ সরকার। দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে পরিকল্পিত ভাবে রূপকল্প প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে-ই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। যা গত ১৫ বছর দেশের সার্বিক উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় সুপরিকল্পিত রূপকল্প প্রণয়নে বঙ্গবন্ধু’র কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা’র সুদূরপ্রসারী চিন্তা ও দার্শনিক অভিপ্রায়ই ছিল এ উন্নয়নের মূল শক্তি।

 

 

গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন বিদ্যমান রয়েছে। এ উপজেলার উত্তর পাড়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলা, দক্ষিণ পাড়ে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা, আর মাঝপথ দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী, যা প্রায় দেড় কিলোমিটার প্রশস্ত নদী। বর্ষা মৌসুম এলে-ই ভয়ঙ্কর রূপধারণ করে এ নদী। স্রোতে এ পাড়া ভাঙ্গে ও পাড় ভাঙ্গে, ভেঙ্গে তছনছ করে দুই পাড়ের বসতভিটা ও ফসলি জমি। ভাঙনের খেলায় নিঃস্ব হয়ে পরে এ জনপদের মানুষ। তাদের হা হা কারে করুণার ঢল নামে এ ভরা বাদলে। তাদের দুঃখ ঘুচানোর জন্য ভিন্ন সংগঠনের সাহায্য ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় এখন চরবাসীর জন্য সুউচ্চ গুচ্ছ গ্রাম তৈরি সহ প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছেন সরকার।

 

 

গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের জেলার প্রায় ৩০লাখ মানুষের যোগাযোগের একমাত্র উপায় হল হরিপুর’ চিলমারী খেয়া ঘাট। দিনের বেলা নির্দিষ্ট সময়ে খেয়া-তে নদী পাড়ি দিতে পারলেও সন্ধ্যা হলেই বন্ধ হয়ে যায় সেই খেয়া। দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার হলেও কোন কারণে দেরি হলে কিংবা খেয়াঘাটে পৌঁছানোর গাড়ি সময় মত না পাওয়ার কারণে খেয়া ধরতে না পারলে অপেক্ষার প্রহর গুনত হয় পরের দিনের জন্য। রাত পোহাতে কতো দেরি এই চিন্তা নিয়ে ই রাত্রি যাপনে অপেক্ষা করতে হয় পরের দিনের খেয়ার।

 

 

এ দুই জেলা সহ পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট রংপুর জেলার মানুষের যোগাযোগের সেই দুর্ভোগ নিরসনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নির্মিত হচ্ছে ১.৪৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে স্বপ্নের তিস্তা সেতু। প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে কুড়িগ্রাম, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী ও চিলমারী থেকে সড়কপথে ঢাকার দূরত্ব কমে আসবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার। দূরত্ব কমবে বিভাগীয় শহর রংপুরেরও। এতে বাঁচবে সময় বাঁচবে অর্থ। পাল্টে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান। ঘুচবে দুঃখ এবং ঘটবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এছাড়াও এ উপজেলায় অসংখ্য ছোট-ছোট ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে।

 

 

এ উপজেলার উন্নয়ন গুলোর মধ্যে চোখে পড়ার মত একটি উন্নয় হল- শিক্ষা খাত। শিক্ষা নগরী সুন্দরগঞ্জে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একটি সরকারি কলেজ আছে। এছাড়াও ২৫৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা সহ সর্বমোট ১৫৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সেই সাথে ডিপ্লোমা ইন্সিটিউট ৩ টি, কারিগরী কলেজ ৮ টি এবং বেসরকারি আরো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ উপজেলায়। এ সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আওয়ামী সরকার বহুতল বিশিষ্ট ভবন সহ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক কাজ হাতে নিয়েছেন,তার প্রতিছবি স্বরূপ ইতোমধ্যে অনেক প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, এছাড়াও কোন কোন প্রকল্পের কাজ ৪০% থেকে ৭৫% পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে যা স্বল্প সময়ের মধ্যে ই বাস্তবায়িত হবে।

 

 

উন্নয়নের ধারায় আরেকটি হল স্বাস্হ্য খাত। স্বাধীনতা লাভের ১২ বছর পর ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বর্তমান আ’লীগ সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়ায় হাসপাতালটির উন্নয়নে অনেক কাজ হাতে নেয়, এরই ধারাবাহিকতায় হাসপাতাল টি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট ভবনে উন্নীত হয়েছে। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু হয়েছে অপারেশন থিয়েটার। যা আগে কখনো ই ছিল না। আগে কোনো প্রসূতির অবস্থার অবনতি হলে বা অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে বিভাগীয় শহর রংপুর অথবা জেলা হাসপাতাল ব্যতীত আর কোনো উপায় ছিল না। তবে বর্তমান সরকারের এ অবদানের ফলে হাতের কাছে আধুনিক চিকিৎসা সেবা পাওয়ায় খুশি সুন্দরগঞ্জবাসী।

 

যাদের হাতে এ দেশে পরাধীনতার শিকল থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন হয়েছে। তাদের যথাযথ মর্যাদা দানে সুন্দরগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ৩০টি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। এমন কি এ সব সড়ক দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে যাওয়া যাবে। প্রতিটি সড়কের শুরুতে নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধার নাম ও ছবি সংবলিত পাকা নাম-ফলক। যা রাস্তার উন্নতির পাশাপাশি দেশের জন্য যারা আত্নত্যাগ শিকার করেছেন তাদের স্মরণ করিয়ে দেয় নতুন প্রজন্মকে। নিঃসন্দেহে এমন সুন্দর একটি উদ্যোগের ফলে নতুন প্রজন্ম সহ পরবর্তী প্রজন্মের সন্তানরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ সহ দেশের স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের বিষয় টি তাদের মনে সজাগ থাকবে। ইতোমধ্যে এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ৩০টি রাস্তার নামকরণ সহ নাম ফলক স্থাপন করা হয়েছে, এছাড়াও অতি দ্রুত সময়ে বাকি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে রাস্তার নামকরণ সহ নাম ফলক স্থাপন করা সময়ের দাবী।

 

 

আওয়ামী সরকারের অন্যতম একটি অবদান হল ডিজিটাল সেবা। সরকার ডিজিটাল সেবা দান কর্মসূচীর মাধ্যমে ই-সেবাসমূহ পৌঁছে দিয়েছে জনগনের দাঁড়গোড়ায়। এ ছাড়া ডিজিটাল ই-সেবা মাধ্যমে জন্ম সনদ থেকে শুরু করে জমি জমার কাগজ পর্যন্ত সকল ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে জনগণের নিকট জীবনকে করছে সহজ‌। যার ফলে জমা-জমির খারিজ সহ সকল ভূমি সেবা এখন সল্প সময়ের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে ই-সেবার মাধ্যমে। ই-সেবা কে জনমানুষের জন্য আরো সহজ করে আনতে এবং সকল ধরনের ভোগান্তি, হয়রানি, দুর্নীতি কালোবাজারি ও দালাল চক্রের হাত থেকে মানুষ কে মুক্ত করতে জমি দলিল সহ সরকারি কাজের বিভিন্ন ফী অনলাইনে জমা দেয়ার ব্যবস্থা স্বরূপ জমি দলিল সম্পাদন করা সময়ের দাবী।

 

 

স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রাস্তাঘাটের তেমন কোন উন্নয়ন না হলেও ২০১৭ সালের ২২ মার্চ উপনির্বাচনে গোলাম মোস্তফা আহমেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে রাস্তা ঘাট সহ সুন্দরগঞ্জের সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে জোরালো দাবি জানান। তার দাবি আমলে নিয়ে আওয়ামী সরকার ২০১৮ সাল থেকে সুন্দরগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় পাকা রাস্তা নির্মাণ, পুনঃ নির্মাণ, ব্রীজ কালভার্ট নির্মাণ ও তিস্তা সেতু নির্মাণে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে। এ ছাড়াও নদী শাসনে পানি উন্নয়ন বোর্ড অনেক প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছে, ইতোমধ্যে কিছু কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। কামারজানি থেকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শহীদ মিনার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ওয়াপ-দ্যা বাঁধটি’র মাটি ভরাটের কাজ শেষের পথে। পাশাপাশি বাঁধ টি পাকা করনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এ বাঁধটির কাজ শেষ হলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।

 

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহ সভাপতি সফিউল ইসলাম আলম বলেন, আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সুন্দরগঞ্জে অবকাঠামো উন্নয়নে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে, কৃষকদের জন্য বিনা মূল্যে বীজ সার এমন কি নানা রকম কৃষি সরঞ্জাম, বিশুদ্ধ পানির জন্য বিনামূল্যে নলকূপ স্হাপন , রাস্তাঘাট নির্মাণ,পাকা করন ও স্বপ্নের তিস্তা সেতু নির্মাণ সহ ব্যাপক উন্নয়ন করে আসছে, এ ছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা শতভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে, আগামীতে ক্ষমতায় আসলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কে একটি স্মার্ট উপজেলায় পরিনত করা হবে। আওয়ামীলীগ সরকার সকল প্রকার দূর্নীতি ও অনিয়মের অবসান ঘটিয়েছে। যার ফলে এ উপজেলার মানুষ

সুখে শান্তিতে জীবন-যাপন করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451