মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

পদে পদে বিড়ম্বনার শিকার দর্শনার্থীরা, হারাচ্ছেন আগ্রহ,পাহাড়পুর বৌদ্ধ

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০২০
  • ২২২ বার পড়া হয়েছে

এশিয়া মহাদেশের মধ্যে উন্নতম প্রাচীন প্রত্ন নিদর্শন ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার। করোনা সংক্রমণ রোধে দীর্ঘ ৬ মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তারপরেও করোনার প্রভাব কেটে উঠতে পারেনি দর্শনার্থীরা। প্রতিদিন সকাল হলেই যেখানে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠতো বিহার প্রাঙ্গন।

এখন সেই ভিড় নেই। কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার এবং শনিবার পাঁচ থেকে ছয় শত দর্শনার্থী আসে। অনান্য দিন আরো কম। শুক্রবার তথ্য সংগ্রহকালে সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে শতাধিক দর্শনার্থী ভিতরে প্রবেশ করে। তারা জানালেন নানা সমস্যার কথা।

মাদারীপুর থেকে রোমান ও তার বন্ধু দেখতে আসেন পাহাড়পুর। সঙ্গে ছিলেন পাঁচ বিবির বন্ধু মাহমুদুল হাসান ও রূহুল আমীন তারা জানালেন, দূর থেকে দেখার জন্য এসে মনটা খারাপ হয়ে গেল। বৌদ্ধ বিহার দেখতে পেলাম না। উপরে উঠতে পারলাম না। উপরে উঠার জন্য সিঁড়ি রয়েছে তা ভাঙ্গা ও তাঁরকাঁটা দিয়ে ঘেড়া। দেখতে পেলাম না এসে লাভ কি!

ঝালকাঠি জেলার রাজপুর থেকে এসেছেন রিয়াজুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা থেকে এসেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তারা জানান, বই পুস্তকে পড়েছি পাহাড়পুরের কথা এখন স্বচোক্ষে দেখতেছি অনেক ভালো লাগছে। তবে যেটা মেইন আকর্ষণ বৌদ্ধ বিহার সেটা দেখতে পেলাম না কষ্ট থেকেই গেল।

সরজমিনে দেখা যায়, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। বিহার অবকাঠোমোতে পারাপারে যে কাঠের ব্রিজ রয়েছে তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দর্শনার্থীরা হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। বিহারের উত্তর দিকে ১টি ব্রিজ রয়েছে সেই ব্রিজের কাঠ পচে খুলে পড়ছে। দক্ষিণ দিকে ১টি ব্রিজ রয়েছে তার অবস্থা একই রূপ। এ ছাড়া মেইন সমস্যা বিহার বা মন্দিরের উপরে উঠার জন্য যে কাঠের সিঁড়ি তা পচন ধরে খুলে খুলে পড়েছে জন্যই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় সিঁড়ি তাঁরকাঁটা দিয়ে ঘেড়াও করে দুর্ঘটনার আশংকায় দর্শনার্থীদের উপরে উঠা নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। এতে ভ্রমণ প্রিয়াসী দর্শনার্থীরা পাহাড়পুরে আসার আগৃহ হারিয়ে ফেলছে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ সংগঠনের লোক জন পাহাড়পুর এসে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। এখানে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা থাকলেও রান্না করে খাওয়ার জন্য জায়গা নেই। আগে ভিতরে ফাঁকা জায়গায় রান্না করতো দর্শনার্থীরা, এখন তা নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। ভিতরে দর্শনার্থীদের বসার ছাউনি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একটি ক্যানটিন নির্মাণ করা থাকলেও দীর্ঘদিনেও তা চালু করা হয়নি। বাইরের হোটেলগুলিতে খাবার পেলেও দাম বেশী। আগ্রহ নিয়ে আসার পরে নানা ভোগান্তির শিকার হয়ে দর্শনর্থীরা পাহাড়পুরে আসার আগ্রহ হারয়ে ফেলেছে।

এ বিষয়ে পাহাড়পুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কিশোর জানান, পাহাড়পুর সংস্কারের সময় ঠিকাদার যে কাজগুলি করেছে তা খুবই নিম্নমানের এবং অল্প সময়ের মধ্যে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দর্শনার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার কাস্টডিয়ান মো. ফজলুল করিম কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আব্দুল হান্নান মিয়া এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান, পাহাড়পুরের সমস্যার কথা আমি জেনেছি। কিন্তু এ মহুর্তে সমস্যা যদি সমাধান করি তাহলে যে ঠিকাদার এই নিম্নমানের কাজ করেছে সে ধরাছোঁয়ার বাইরে যাবে। আমি ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি লেখেছি। নিম্নমানের কাজ করার জন্যে তার বিরুদ্ধে যেন একটা দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তবে দর্শনার্থীরা পাহাড়পুরে ঘুরতে এসে যদি সমস্যায় পড়েন তাহলে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451