বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ‘শান্তি পরিকল্পনার’ বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৯
  • ২৮৮ বার পড়া হয়েছে

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধ নিরসনে বহুল আলোচিত মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনিদের বর্জনের মুখে বাহরাইনে দুদিনের কর্মশালার প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার এই পরিকল্পনা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার। তবে মার্কিন এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ হামাস।

কয়েক দশকের মার্কিন নীতি ভেঙে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আর কোনো শান্তি আলোচনায় মার্কিন মধ্যস্থতা মানবে না বলে ঘোষণা দেয় ফিলিস্তিনিরা। তারপরও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার নাম করে ফিলিস্তিন ইস্যুতে নানা ধরনের পরিকল্পনার প্রস্তুতি নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েল-ঘেঁষা এসব শান্তি পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক, নানা সময় গণমাধ্যমের শিরোনামও হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বাহরাইনে শুরু হওয়া দুদিনের অর্থনৈতিক কর্মশালায় সেই পরিকল্পনাকেই প্রস্তাব আকারে তুলে ধরেন জ্যারেড কুশনার। ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদের বর্জন করা ওই সম্মেলনে উপস্থাপিত এই পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি অঞ্চল ও প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলোতে পরবর্তী ১০ বছরে পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে।

কর্মশালায় জ্যারেড কুশনার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বহু আলোচনা, বৈঠক, সম্মেলনের পরও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো অগ্রগতি হয়নি। এই পরিকল্পনা শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন এই পরিকল্পনা তাদের সুন্দর ও উন্নত ভবিষ্যৎ উপহার দেবে।’

সংবাদ সংস্থা ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফিলিস্তিনি জনগণের উদ্দেশে কুশনার বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্র আপনাদের কাছ থেকে আশা ছেড়ে দেয়নি।’

সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে কুশনার জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা পশ্চিমতীর ও গাজায় এক কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং পরিকল্পনাটি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা গেলে এ অঞ্চলে বর্তমান বেকারত্বের হার ৩০ শতাংশ থেকে এক অঙ্কের সংখ্যায় নেমে আসবে। তাই তাঁদের দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নেমে আসবে।

এই পরিকল্পনায় দাতা রাষ্ট্রগুলো ও বিনিয়োগকারীদের ওই অঞ্চলে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলার যাবে ইসরায়েলের দখল করা পশ্চিমতীর ও গাজায়। এ ছাড়া সাড়ে ৭০০ কোটি ডলার দেওয়া হবে জর্ডানকে, ৯০০ কোটি ডলার মিসরকে এবং ৬০০ কোটি ডলার লেবাননকে দেওয়া হবে।

তবে মধ্যপ্রাচ্যে বিপুল বিনিয়োগ এবং লাখ লাখ ফিলিস্তিনির কর্মসংস্থানের সুযোগের কথা বলা হলেও ট্রাম্প প্রশাসনের এ পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র বা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কোনো রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলা হয়নি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, পরিকল্পনার রাজনৈতিক অংশ পরে প্রকাশ করা হবে।

এদিকে মার্কিন এ পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ হামাস। শুধু তাই নয়, বাহরাইনের এ সম্মেলনের প্রতিবাদে পশ্চিমতীরের রাস্তায় বিক্ষোভ করে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। হেবরনের কাছে পোড়ানো হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও বাহরাইনের বাদশার ছবি।

ফিলিস্তিনের এক মানবাধিকার কর্মী মোস্তফা বারঘৌতি বলেন, ‘যত দিন আমরা স্বাধীন না হব, তত দিন কোনো উন্নয়ন হবে না। এই শান্তি পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের অধিকার আরো সংকুচিত করে দেবে।’

আরব বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবার ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা অর্থ দিয়ে কিনতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451