বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

চলনবিলে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে কুচিয়া মাছ

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৭
  • ২১০ বার পড়া হয়েছে

 

 

 

 

 

সোহেল রানা সোহাগ,সিরাজগঞ্জ থেকেঃ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় মৎস্য অধিপ্তরের সহযোগিতায়

বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় কুচিয়া ও কাকড়া চাষ এবং গবেষনা

প্রকল্পের আওতায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু করা হয়েছে কুচিয়া মাছের চাষ।

এ চাষ থেকে পিছিয়ে পড়েনি চলনবিল অধ্যুষিত এলাকার তাড়াশ,

রায়গঞ্জ, গুরুদাশপুর, সিংড়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর। এ

অঞ্চলগুলোতে কুচিয়া চাষ শুরু করা হয়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, কুচিয়া দেখতে সাপের মত। এর রয়েছে

বিভিন্ন নাম কুঁচে, কুঁচে মাছ, কুচিয়া, কুইচ্চা বা কুচে

বাইম। এটি একটি ইল-প্রজাতির মাছ। ঝুনৎধহপযরফধব পরিবারের

অন্তর্গত এই মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম গড়হড়ঢ়ঃবৎঁং পঁপযরধ।

কুচিয়া সাধারণত কাদা মাটিতে থাকে। কাদা খুড়ে খুড়ে এগুলো

সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় চলনবিল

তথা তাড়াশ উপজেলায় পাকা ড্রামে পদ্ধতিতে কুচিয়া প্রজনন ও চাষ

শুরু হয়েছে। চলনবিল এলাকায় এ মাছটি অত্যন্ত সু-স্বাদু মাছ

হিসেবে পরিচিত। তাড়াশে কুচিয়া দেশের চাহিদা মিটিয়ে

কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

বিশেষ করে কুচিয়া মাছ মানুষ বিভিন্ন রোগের প্রতিকারের জন্যও

খেয়ে থাকেন।

তাড়াশ উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ মৎস্য

অধিপ্তরের বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় কুচিয়া ও কাকড়া চাষ

এবং গবেষনা প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলা গত বছর থেকে সরকারী

সহায়তায় উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে বাণিজ্য হারে কুচিয়া চাষ শুরু

হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার মাধাইনগর, বারুহাস ও

দেশীগ্রাম ইউনিয়নে একটি কমিটি তৈরি করে তাদের যাবতীয়

উপকরণ সামগ্রী ও প্রশিক্ষনের মাধ্যমে কুচিয়া চাষ পদ্ধতিতে

প্রশিক্ষিত হয়ে কুচিয়া মাছ চাষ শুরু করেছেন। তারা প্রাথমিক

পর্যায়ে ছোট ছোট কুচিয়া সংগ্রহ করে তা এক বছরের প্রজেক্টে

বড় করে বিক্রি করছেন।

তাড়াশের বারুহাস ইউনিয়নের বস্তুল কচিয়া চাষ প্রকল্পের সভাপতি তপন

কুমার উরাও জানান, কুচিয়া চাষের জন্য উপজেলা মৎস্য অধিপ্তরের

সহযোগিতায় যাবতীয় উপকরণসহ প্রতিটা প্রজেক্টে এক লক্ষ

আটত্রিশ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এক বছর পর খরচ বাদ

দিয়ে তাদের প্রায় লক্ষাধিক টাকার উপরে লাভ হচ্ছে। এটা লাভজনক

ব্যবসা বলে তিনি জানিয়েছেন।

কুচিয়া মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম জানান, একটি বেসরকারী

উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করেন কুচিয়ার খামার।

কুচিয়া রাখার জন্য ১টি ট্যাংকি পাকা করে এর মধ্যে পানি রেখে এর

চাষ শুরু করা হয়। কুচিয়াকে খাবার হিসেবে কেঁচো, ছোট ছোট

মাছ, সুঁটকির গুরা এবং মাছের খাবার দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠিত খামারে প্রায় ২ মণ

কুচিয়া রয়েছে। এটা একটি লাভজনক ব্যবসা। বিভিন্ন খাল বিলে

যারা কুচিয়া ধরে তাদের কাছ থেকে বাচ্চা কুচিয়া ৩০০ টাকা

কেজি দরে কিনে এনে খামারে রেখে বড় করা হয়। তারপর ৬০০ থেকে ৭০০

টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। একটি কুচিয়া প্রায় ১ কেজির

চেয়ে বেশি ওজনের হয়। তবে আর্থিক সমস্যার কারনে তিনি এই

কুচিয়া খামারটিকে বড় করতে পারছেন না। পারছেন না প্রয়োজনীয়

সরঞ্জাম ক্রয় করতে।

এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা মৎস্য অফিসার হাফিজুর রহমান জানান,

বর্তমান সরকারের মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের আওতায়

বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় কুচিয়া ও কাকড়া চাষ এবং গবেষনা

প্রকল্পের মাধ্যমে কুচিয়া চাষ প্রদর্শনী ও প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। এরই

ধারাবাহিকতায় বৃহত্তর চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলার তিনটি

ইউনিয়নে গত বছর থেকে বানিজ্যকহারে সরকার ও মৎস্য অধিদপ্তরের

পৃষ্ঠপোষকতায় কুচিয়া চাষ ও কুচিয়া প্রজনন শুরু হয়েছে। এতে করে

কুচিয়া চাষের সাথে জড়িতদের লাভজনক ব্যবসায় হওয়ায় তারা

কুচিয়া চাষে আগ্রহী হয়ে পড়েছেন। ফলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে

কুচিয়া কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি

হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451